১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
নিউজিল্যান্ডে গ্যাং প্রতীক নিষিদ্ধ: রাস্তায় শান্তি, কিন্তু অপরাধ কি সত্যিই কমল সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব? যে রিকশায় গুলিবিদ্ধ হন হাদি, সেই চালকের আদালতে জবানবন্দি তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে আমরা জয়ী হবো: মির্জা ফখরুল পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে বহুদলীয় গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে: নাহিদ ঢাকা-১৫ আসনে জামায়াত আমিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে শ্রমিক নিহত, অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা নির্বাচনপ্রত্যাশীদের জন্য অনলাইনে কর রিটার্ন দাখিলে বিশেষ ব্যবস্থা এনবিআরের মাকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে তারেক রহমান

দুগ্ধ খাতে মিথেন কমানোর জোট থেকে নেসলে সরে দাঁড়াল—কৌশল বদল, কিন্তু লক্ষ্য কি বদলাবে?

কেন এই পিছু হটা, আর শিল্পের জলবায়ু-পরিকল্পনায় তার মানে কী

দুগ্ধ সরবরাহশৃঙ্খলে মিথেন কমাতে আন্তর্জাতিক জোট থেকে সরে এসেছে নেসলে; কোম্পানির দাবি, তারা নিজস্ব কর্মসূচি চালিয়েই নির্গমন হ্রাস করবে এবং জোটের পদ্ধতি ও পরিচালনা কাঠামো নতুনভাবে বিবেচনা করবে—তবু সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ডের অনুপস্থিতি মানে সমন্বিত ক্রয়ক্ষমতা, পাইলট ফলাফল ভাগাভাগি ও কৃষকের খরচ কমাতে যৌথ দরকষাকষির সুযোগ তাত্ক্ষণিকভাবে দুর্বল হলো। গবাদি পশু থেকে নির্গত মিথেন স্বল্পস্থায়ী হলেও প্রবল জলবায়ু-উত্তেজক; অনেক দেশ স্বেচ্ছাসেবী শিল্প জোটের ওপর ভর করে দ্রুত ফিড অ্যাডিটিভ, গোবর ব্যবস্থাপনা ও প্রজনন কৌশল ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, নেসলে বাদ পড়ায় স্বচ্ছতা কমতে পারে—ব্র্যান্ডভেদে অগ্রগতি তুলনা, ঋণদাতা ও নিয়ন্ত্রকের কাছে জবাবদিহি—এসব জটিল হবে; সমর্থকেরা পাল্টা যুক্তি দেন, স্থানীয় কৃষিবিদ্যা, ভর্তুকি ও ভৌগোলিক বাস্তবতার সাথে খাপ খাওয়ানো কোম্পানিভিত্তিক প্রকল্পেই কখনো কখনো দ্রুত পরিমাপযোগ্য ফল পাওয়া যায়। নীতিপরিবেশও বদলাচ্ছে: শুধু প্রণোদনা নয়, কোথাও কোথাও এখন কর্মসম্পাদনভিত্তিক শর্ত বসছে—গ্র্যান্ট বা রপ্তানি-সুবিধা পেতে দুধ-প্রসেসরদের বেসলাইন ও তৃতীয় পক্ষের যাচাই কাগজপত্র শক্ত করতে হচ্ছে, কারণ স্কোপ-৩ লক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা দাঁড়িয়ে থাকে তুলনাযোগ্য পদ্ধতির ওপর, প্রচারণার ভাষার ওপর নয়। বাস্তবে, প্রাথমিক খরচ—মিথেন কমানো ফিড অ্যাডিটিভ, স্লারি কভার, আনুষঙ্গিক যন্ত্র—কে দেবে সেটাই বড় প্রশ্ন; সংকুচিত মার্জিনে কৃষককে একা বোঝা দিলে গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়, তাই ক্রেতা-প্রিমিয়াম, সরকারি সহায়তা ও সবুজ অর্থায়নের মিশ্র মডেল দরকার হয়—আর জোটভিত্তিক ‘অ্যাগ্রিগেশন’ দুর্বল হলে ইউনিট-খরচ কমানোও কঠিন হয়ে পড়ে।

COP28 - Six major food signatories to Dairy Methane Alliance

খামার, অর্থদাতা ও সরবরাহশৃঙ্খলে কী বদলাবে—এখন নজর কোথায়

উৎপাদকদের জন্য সিগন্যাল জটিল: বড় এক ক্রেতা জোটের বাইরে গেলেও খামারভিত্তিক পাইলট চালিয়ে যাচ্ছে—তবে ভিন্ন আবহাওয়া, খাদ্যপ্রণালী ও পশুপাল কাঠামোর অঞ্চলের মধ্যে জ্ঞান বিনিময় হয়তো ধীর হবে; একই সময়ে সাগরশৈবাল-নির্ভর ফিড, নাইট্রিফিকেশন ইনহিবিটর, আবৃত ল্যাগুন-ভিত্তিক বায়োগ্যাস, মিশ্র চরাই চক্র—এসব প্রযুক্তি ট্রায়াল অব্যাহত থাকবে। পশুচিকিত্সক ও প্রজননবিদরা দেখাচ্ছেন, স্বাস্থ্য-ফার্টিলিটি উন্নত হলে উৎপাদন না কমিয়েও ‘এমিশন-ইনটেনসিটি’ কমে; কর্মী-সংগঠন ও পরিবেশকর্মীরা আবার বলছেন, জাতীয় লক্ষ্য ধরতে ‘অ্যাবসোলিউট’ হ্রাস অপরিহার্য। অর্থদাতা-বিমাকারকদের চাহিদা স্পষ্ট: তুলনাযোগ্য প্রকাশ না হলে টেকসই-শর্তযুক্ত কৃষিঋণ লেখা কঠিন, আর কার্বন-বর্ডার নীতির বাজারে শুল্ক-ছাড় রাখতে একক মানদণ্ড দরকার—এ কারণেই শিল্পগোষ্ঠীগুলো কমন এমআরভি (মেজারমেন্ট-রিপোর্টিং-ভেরিফিকেশন) ন্যূনতম কাঠামোর আহ্বান জানাচ্ছে, ব্র্যান্ডের পথ আলাদা হলেও। ভোক্তা ও ডাউনস্ট্রিম ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে লেবেল-তথ্য ও দামের বিন্যাসে: যাচাইকৃত মিথেন-হ্রাসের বিনিময়ে ক্রেতা যদি কৃষককে বেশি দাম দেয়, স্বল্পমেয়াদে কিছু খরচ পণ্যদামে আসতে পারে; তবে বায়োগ্যাস বিক্রি, সার বিকল্প ও দক্ষতা বাড়ার ফলে সময়ের সাথে ব্যয় পুষিয়ে যেতে পারে। রাজনৈতিক ঝুঁকিও আছে—আজকের করপোরেট সিদ্ধান্ত আগামীতে কৃষক-রাজনীতির বিতর্কে রূপ নিতে পারে; তাই নীতিনির্ধারকেরা ‘প্রযুক্তি-নির্দেশিত’ বিধির বদলে ‘ফলভিত্তিক অর্থপ্রদান’ পরীক্ষায় মন দিচ্ছেন। সারমর্ম হলো, দুগ্ধ খাতের ডিকার্বনাইজেশন থেমে যাচ্ছে না, কিন্তু শাসনব্যবস্থা জটিল হচ্ছে: নেসলের একক পথ পাইলটে গতি রাখে, তবু সবার সমন্বয়-খরচ বাড়ায়; এখন দেখার বিষয়, প্রতিদ্বন্দ্বী জোটগুলো ডেটা, যাচাই ও ক্রেডিটিং-নিয়মে কতটা সামঞ্জস্য আনে, যাতে কৃষক একই ‘এড়ানো মিথেন’ একবার বিক্রি করে—ক্রেতা, ব্যাংক ও সীমান্ত-নীতির কাছে একযোগে স্বীকৃতি পান।

জনপ্রিয় সংবাদ

নিউজিল্যান্ডে গ্যাং প্রতীক নিষিদ্ধ: রাস্তায় শান্তি, কিন্তু অপরাধ কি সত্যিই কমল

দুগ্ধ খাতে মিথেন কমানোর জোট থেকে নেসলে সরে দাঁড়াল—কৌশল বদল, কিন্তু লক্ষ্য কি বদলাবে?

০৬:০০:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

কেন এই পিছু হটা, আর শিল্পের জলবায়ু-পরিকল্পনায় তার মানে কী

দুগ্ধ সরবরাহশৃঙ্খলে মিথেন কমাতে আন্তর্জাতিক জোট থেকে সরে এসেছে নেসলে; কোম্পানির দাবি, তারা নিজস্ব কর্মসূচি চালিয়েই নির্গমন হ্রাস করবে এবং জোটের পদ্ধতি ও পরিচালনা কাঠামো নতুনভাবে বিবেচনা করবে—তবু সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ডের অনুপস্থিতি মানে সমন্বিত ক্রয়ক্ষমতা, পাইলট ফলাফল ভাগাভাগি ও কৃষকের খরচ কমাতে যৌথ দরকষাকষির সুযোগ তাত্ক্ষণিকভাবে দুর্বল হলো। গবাদি পশু থেকে নির্গত মিথেন স্বল্পস্থায়ী হলেও প্রবল জলবায়ু-উত্তেজক; অনেক দেশ স্বেচ্ছাসেবী শিল্প জোটের ওপর ভর করে দ্রুত ফিড অ্যাডিটিভ, গোবর ব্যবস্থাপনা ও প্রজনন কৌশল ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, নেসলে বাদ পড়ায় স্বচ্ছতা কমতে পারে—ব্র্যান্ডভেদে অগ্রগতি তুলনা, ঋণদাতা ও নিয়ন্ত্রকের কাছে জবাবদিহি—এসব জটিল হবে; সমর্থকেরা পাল্টা যুক্তি দেন, স্থানীয় কৃষিবিদ্যা, ভর্তুকি ও ভৌগোলিক বাস্তবতার সাথে খাপ খাওয়ানো কোম্পানিভিত্তিক প্রকল্পেই কখনো কখনো দ্রুত পরিমাপযোগ্য ফল পাওয়া যায়। নীতিপরিবেশও বদলাচ্ছে: শুধু প্রণোদনা নয়, কোথাও কোথাও এখন কর্মসম্পাদনভিত্তিক শর্ত বসছে—গ্র্যান্ট বা রপ্তানি-সুবিধা পেতে দুধ-প্রসেসরদের বেসলাইন ও তৃতীয় পক্ষের যাচাই কাগজপত্র শক্ত করতে হচ্ছে, কারণ স্কোপ-৩ লক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা দাঁড়িয়ে থাকে তুলনাযোগ্য পদ্ধতির ওপর, প্রচারণার ভাষার ওপর নয়। বাস্তবে, প্রাথমিক খরচ—মিথেন কমানো ফিড অ্যাডিটিভ, স্লারি কভার, আনুষঙ্গিক যন্ত্র—কে দেবে সেটাই বড় প্রশ্ন; সংকুচিত মার্জিনে কৃষককে একা বোঝা দিলে গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়, তাই ক্রেতা-প্রিমিয়াম, সরকারি সহায়তা ও সবুজ অর্থায়নের মিশ্র মডেল দরকার হয়—আর জোটভিত্তিক ‘অ্যাগ্রিগেশন’ দুর্বল হলে ইউনিট-খরচ কমানোও কঠিন হয়ে পড়ে।

COP28 - Six major food signatories to Dairy Methane Alliance

খামার, অর্থদাতা ও সরবরাহশৃঙ্খলে কী বদলাবে—এখন নজর কোথায়

উৎপাদকদের জন্য সিগন্যাল জটিল: বড় এক ক্রেতা জোটের বাইরে গেলেও খামারভিত্তিক পাইলট চালিয়ে যাচ্ছে—তবে ভিন্ন আবহাওয়া, খাদ্যপ্রণালী ও পশুপাল কাঠামোর অঞ্চলের মধ্যে জ্ঞান বিনিময় হয়তো ধীর হবে; একই সময়ে সাগরশৈবাল-নির্ভর ফিড, নাইট্রিফিকেশন ইনহিবিটর, আবৃত ল্যাগুন-ভিত্তিক বায়োগ্যাস, মিশ্র চরাই চক্র—এসব প্রযুক্তি ট্রায়াল অব্যাহত থাকবে। পশুচিকিত্সক ও প্রজননবিদরা দেখাচ্ছেন, স্বাস্থ্য-ফার্টিলিটি উন্নত হলে উৎপাদন না কমিয়েও ‘এমিশন-ইনটেনসিটি’ কমে; কর্মী-সংগঠন ও পরিবেশকর্মীরা আবার বলছেন, জাতীয় লক্ষ্য ধরতে ‘অ্যাবসোলিউট’ হ্রাস অপরিহার্য। অর্থদাতা-বিমাকারকদের চাহিদা স্পষ্ট: তুলনাযোগ্য প্রকাশ না হলে টেকসই-শর্তযুক্ত কৃষিঋণ লেখা কঠিন, আর কার্বন-বর্ডার নীতির বাজারে শুল্ক-ছাড় রাখতে একক মানদণ্ড দরকার—এ কারণেই শিল্পগোষ্ঠীগুলো কমন এমআরভি (মেজারমেন্ট-রিপোর্টিং-ভেরিফিকেশন) ন্যূনতম কাঠামোর আহ্বান জানাচ্ছে, ব্র্যান্ডের পথ আলাদা হলেও। ভোক্তা ও ডাউনস্ট্রিম ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে লেবেল-তথ্য ও দামের বিন্যাসে: যাচাইকৃত মিথেন-হ্রাসের বিনিময়ে ক্রেতা যদি কৃষককে বেশি দাম দেয়, স্বল্পমেয়াদে কিছু খরচ পণ্যদামে আসতে পারে; তবে বায়োগ্যাস বিক্রি, সার বিকল্প ও দক্ষতা বাড়ার ফলে সময়ের সাথে ব্যয় পুষিয়ে যেতে পারে। রাজনৈতিক ঝুঁকিও আছে—আজকের করপোরেট সিদ্ধান্ত আগামীতে কৃষক-রাজনীতির বিতর্কে রূপ নিতে পারে; তাই নীতিনির্ধারকেরা ‘প্রযুক্তি-নির্দেশিত’ বিধির বদলে ‘ফলভিত্তিক অর্থপ্রদান’ পরীক্ষায় মন দিচ্ছেন। সারমর্ম হলো, দুগ্ধ খাতের ডিকার্বনাইজেশন থেমে যাচ্ছে না, কিন্তু শাসনব্যবস্থা জটিল হচ্ছে: নেসলের একক পথ পাইলটে গতি রাখে, তবু সবার সমন্বয়-খরচ বাড়ায়; এখন দেখার বিষয়, প্রতিদ্বন্দ্বী জোটগুলো ডেটা, যাচাই ও ক্রেডিটিং-নিয়মে কতটা সামঞ্জস্য আনে, যাতে কৃষক একই ‘এড়ানো মিথেন’ একবার বিক্রি করে—ক্রেতা, ব্যাংক ও সীমান্ত-নীতির কাছে একযোগে স্বীকৃতি পান।