০৯:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
ট্রাম্পের ট্যারিফ যুদ্ধঃ শেষ পর্যন্ত কে জিতবে? পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১০৩) দুগ্ধ খাতে মিথেন কমানোর জোট থেকে নেসলে সরে দাঁড়াল—কৌশল বদল, কিন্তু লক্ষ্য কি বদলাবে? এবিবির রোবোটিক্স ইউনিট ৫.৪ বিলিয়নে কিনল সফটব্যাংক—কারখানার ‘ফ্লেক্সিবল’ অটোমেশনেই বড় বাজি ব্ল্যাক মাম্বা: আফ্রিকার তৃণভূমির প্রাণঘাতী রহস্য প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-৩০২) ভিয়েতনামের শেয়ারবাজারে রেকর্ড উল্লম্ফন: এফটিএসই উন্নয়ন ঘোষণা ও বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রবাহের নতুন দ্বার চ্যানেল ও ব্ল্যাজির সংগ্রহ: আধুনিক ফ্যাশনের নতুন দিগন্ত প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর কেরালার দুগ্ধ খামারে সফর: ‘আলিয়া ভাট’ নামের গরুর সাথে দেখা ক্রিস্টি টলিভারের কোচিং দক্ষতা ও খেলোয়াড়দের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষমতা

দুগ্ধ খাতে মিথেন কমানোর জোট থেকে নেসলে সরে দাঁড়াল—কৌশল বদল, কিন্তু লক্ষ্য কি বদলাবে?

কেন এই পিছু হটা, আর শিল্পের জলবায়ু-পরিকল্পনায় তার মানে কী

দুগ্ধ সরবরাহশৃঙ্খলে মিথেন কমাতে আন্তর্জাতিক জোট থেকে সরে এসেছে নেসলে; কোম্পানির দাবি, তারা নিজস্ব কর্মসূচি চালিয়েই নির্গমন হ্রাস করবে এবং জোটের পদ্ধতি ও পরিচালনা কাঠামো নতুনভাবে বিবেচনা করবে—তবু সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ডের অনুপস্থিতি মানে সমন্বিত ক্রয়ক্ষমতা, পাইলট ফলাফল ভাগাভাগি ও কৃষকের খরচ কমাতে যৌথ দরকষাকষির সুযোগ তাত্ক্ষণিকভাবে দুর্বল হলো। গবাদি পশু থেকে নির্গত মিথেন স্বল্পস্থায়ী হলেও প্রবল জলবায়ু-উত্তেজক; অনেক দেশ স্বেচ্ছাসেবী শিল্প জোটের ওপর ভর করে দ্রুত ফিড অ্যাডিটিভ, গোবর ব্যবস্থাপনা ও প্রজনন কৌশল ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, নেসলে বাদ পড়ায় স্বচ্ছতা কমতে পারে—ব্র্যান্ডভেদে অগ্রগতি তুলনা, ঋণদাতা ও নিয়ন্ত্রকের কাছে জবাবদিহি—এসব জটিল হবে; সমর্থকেরা পাল্টা যুক্তি দেন, স্থানীয় কৃষিবিদ্যা, ভর্তুকি ও ভৌগোলিক বাস্তবতার সাথে খাপ খাওয়ানো কোম্পানিভিত্তিক প্রকল্পেই কখনো কখনো দ্রুত পরিমাপযোগ্য ফল পাওয়া যায়। নীতিপরিবেশও বদলাচ্ছে: শুধু প্রণোদনা নয়, কোথাও কোথাও এখন কর্মসম্পাদনভিত্তিক শর্ত বসছে—গ্র্যান্ট বা রপ্তানি-সুবিধা পেতে দুধ-প্রসেসরদের বেসলাইন ও তৃতীয় পক্ষের যাচাই কাগজপত্র শক্ত করতে হচ্ছে, কারণ স্কোপ-৩ লক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা দাঁড়িয়ে থাকে তুলনাযোগ্য পদ্ধতির ওপর, প্রচারণার ভাষার ওপর নয়। বাস্তবে, প্রাথমিক খরচ—মিথেন কমানো ফিড অ্যাডিটিভ, স্লারি কভার, আনুষঙ্গিক যন্ত্র—কে দেবে সেটাই বড় প্রশ্ন; সংকুচিত মার্জিনে কৃষককে একা বোঝা দিলে গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়, তাই ক্রেতা-প্রিমিয়াম, সরকারি সহায়তা ও সবুজ অর্থায়নের মিশ্র মডেল দরকার হয়—আর জোটভিত্তিক ‘অ্যাগ্রিগেশন’ দুর্বল হলে ইউনিট-খরচ কমানোও কঠিন হয়ে পড়ে।

COP28 - Six major food signatories to Dairy Methane Alliance

খামার, অর্থদাতা ও সরবরাহশৃঙ্খলে কী বদলাবে—এখন নজর কোথায়

উৎপাদকদের জন্য সিগন্যাল জটিল: বড় এক ক্রেতা জোটের বাইরে গেলেও খামারভিত্তিক পাইলট চালিয়ে যাচ্ছে—তবে ভিন্ন আবহাওয়া, খাদ্যপ্রণালী ও পশুপাল কাঠামোর অঞ্চলের মধ্যে জ্ঞান বিনিময় হয়তো ধীর হবে; একই সময়ে সাগরশৈবাল-নির্ভর ফিড, নাইট্রিফিকেশন ইনহিবিটর, আবৃত ল্যাগুন-ভিত্তিক বায়োগ্যাস, মিশ্র চরাই চক্র—এসব প্রযুক্তি ট্রায়াল অব্যাহত থাকবে। পশুচিকিত্সক ও প্রজননবিদরা দেখাচ্ছেন, স্বাস্থ্য-ফার্টিলিটি উন্নত হলে উৎপাদন না কমিয়েও ‘এমিশন-ইনটেনসিটি’ কমে; কর্মী-সংগঠন ও পরিবেশকর্মীরা আবার বলছেন, জাতীয় লক্ষ্য ধরতে ‘অ্যাবসোলিউট’ হ্রাস অপরিহার্য। অর্থদাতা-বিমাকারকদের চাহিদা স্পষ্ট: তুলনাযোগ্য প্রকাশ না হলে টেকসই-শর্তযুক্ত কৃষিঋণ লেখা কঠিন, আর কার্বন-বর্ডার নীতির বাজারে শুল্ক-ছাড় রাখতে একক মানদণ্ড দরকার—এ কারণেই শিল্পগোষ্ঠীগুলো কমন এমআরভি (মেজারমেন্ট-রিপোর্টিং-ভেরিফিকেশন) ন্যূনতম কাঠামোর আহ্বান জানাচ্ছে, ব্র্যান্ডের পথ আলাদা হলেও। ভোক্তা ও ডাউনস্ট্রিম ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে লেবেল-তথ্য ও দামের বিন্যাসে: যাচাইকৃত মিথেন-হ্রাসের বিনিময়ে ক্রেতা যদি কৃষককে বেশি দাম দেয়, স্বল্পমেয়াদে কিছু খরচ পণ্যদামে আসতে পারে; তবে বায়োগ্যাস বিক্রি, সার বিকল্প ও দক্ষতা বাড়ার ফলে সময়ের সাথে ব্যয় পুষিয়ে যেতে পারে। রাজনৈতিক ঝুঁকিও আছে—আজকের করপোরেট সিদ্ধান্ত আগামীতে কৃষক-রাজনীতির বিতর্কে রূপ নিতে পারে; তাই নীতিনির্ধারকেরা ‘প্রযুক্তি-নির্দেশিত’ বিধির বদলে ‘ফলভিত্তিক অর্থপ্রদান’ পরীক্ষায় মন দিচ্ছেন। সারমর্ম হলো, দুগ্ধ খাতের ডিকার্বনাইজেশন থেমে যাচ্ছে না, কিন্তু শাসনব্যবস্থা জটিল হচ্ছে: নেসলের একক পথ পাইলটে গতি রাখে, তবু সবার সমন্বয়-খরচ বাড়ায়; এখন দেখার বিষয়, প্রতিদ্বন্দ্বী জোটগুলো ডেটা, যাচাই ও ক্রেডিটিং-নিয়মে কতটা সামঞ্জস্য আনে, যাতে কৃষক একই ‘এড়ানো মিথেন’ একবার বিক্রি করে—ক্রেতা, ব্যাংক ও সীমান্ত-নীতির কাছে একযোগে স্বীকৃতি পান।

জনপ্রিয় সংবাদ

ট্রাম্পের ট্যারিফ যুদ্ধঃ শেষ পর্যন্ত কে জিতবে?

দুগ্ধ খাতে মিথেন কমানোর জোট থেকে নেসলে সরে দাঁড়াল—কৌশল বদল, কিন্তু লক্ষ্য কি বদলাবে?

০৬:০০:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

কেন এই পিছু হটা, আর শিল্পের জলবায়ু-পরিকল্পনায় তার মানে কী

দুগ্ধ সরবরাহশৃঙ্খলে মিথেন কমাতে আন্তর্জাতিক জোট থেকে সরে এসেছে নেসলে; কোম্পানির দাবি, তারা নিজস্ব কর্মসূচি চালিয়েই নির্গমন হ্রাস করবে এবং জোটের পদ্ধতি ও পরিচালনা কাঠামো নতুনভাবে বিবেচনা করবে—তবু সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ডের অনুপস্থিতি মানে সমন্বিত ক্রয়ক্ষমতা, পাইলট ফলাফল ভাগাভাগি ও কৃষকের খরচ কমাতে যৌথ দরকষাকষির সুযোগ তাত্ক্ষণিকভাবে দুর্বল হলো। গবাদি পশু থেকে নির্গত মিথেন স্বল্পস্থায়ী হলেও প্রবল জলবায়ু-উত্তেজক; অনেক দেশ স্বেচ্ছাসেবী শিল্প জোটের ওপর ভর করে দ্রুত ফিড অ্যাডিটিভ, গোবর ব্যবস্থাপনা ও প্রজনন কৌশল ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, নেসলে বাদ পড়ায় স্বচ্ছতা কমতে পারে—ব্র্যান্ডভেদে অগ্রগতি তুলনা, ঋণদাতা ও নিয়ন্ত্রকের কাছে জবাবদিহি—এসব জটিল হবে; সমর্থকেরা পাল্টা যুক্তি দেন, স্থানীয় কৃষিবিদ্যা, ভর্তুকি ও ভৌগোলিক বাস্তবতার সাথে খাপ খাওয়ানো কোম্পানিভিত্তিক প্রকল্পেই কখনো কখনো দ্রুত পরিমাপযোগ্য ফল পাওয়া যায়। নীতিপরিবেশও বদলাচ্ছে: শুধু প্রণোদনা নয়, কোথাও কোথাও এখন কর্মসম্পাদনভিত্তিক শর্ত বসছে—গ্র্যান্ট বা রপ্তানি-সুবিধা পেতে দুধ-প্রসেসরদের বেসলাইন ও তৃতীয় পক্ষের যাচাই কাগজপত্র শক্ত করতে হচ্ছে, কারণ স্কোপ-৩ লক্ষ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা দাঁড়িয়ে থাকে তুলনাযোগ্য পদ্ধতির ওপর, প্রচারণার ভাষার ওপর নয়। বাস্তবে, প্রাথমিক খরচ—মিথেন কমানো ফিড অ্যাডিটিভ, স্লারি কভার, আনুষঙ্গিক যন্ত্র—কে দেবে সেটাই বড় প্রশ্ন; সংকুচিত মার্জিনে কৃষককে একা বোঝা দিলে গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়, তাই ক্রেতা-প্রিমিয়াম, সরকারি সহায়তা ও সবুজ অর্থায়নের মিশ্র মডেল দরকার হয়—আর জোটভিত্তিক ‘অ্যাগ্রিগেশন’ দুর্বল হলে ইউনিট-খরচ কমানোও কঠিন হয়ে পড়ে।

COP28 - Six major food signatories to Dairy Methane Alliance

খামার, অর্থদাতা ও সরবরাহশৃঙ্খলে কী বদলাবে—এখন নজর কোথায়

উৎপাদকদের জন্য সিগন্যাল জটিল: বড় এক ক্রেতা জোটের বাইরে গেলেও খামারভিত্তিক পাইলট চালিয়ে যাচ্ছে—তবে ভিন্ন আবহাওয়া, খাদ্যপ্রণালী ও পশুপাল কাঠামোর অঞ্চলের মধ্যে জ্ঞান বিনিময় হয়তো ধীর হবে; একই সময়ে সাগরশৈবাল-নির্ভর ফিড, নাইট্রিফিকেশন ইনহিবিটর, আবৃত ল্যাগুন-ভিত্তিক বায়োগ্যাস, মিশ্র চরাই চক্র—এসব প্রযুক্তি ট্রায়াল অব্যাহত থাকবে। পশুচিকিত্সক ও প্রজননবিদরা দেখাচ্ছেন, স্বাস্থ্য-ফার্টিলিটি উন্নত হলে উৎপাদন না কমিয়েও ‘এমিশন-ইনটেনসিটি’ কমে; কর্মী-সংগঠন ও পরিবেশকর্মীরা আবার বলছেন, জাতীয় লক্ষ্য ধরতে ‘অ্যাবসোলিউট’ হ্রাস অপরিহার্য। অর্থদাতা-বিমাকারকদের চাহিদা স্পষ্ট: তুলনাযোগ্য প্রকাশ না হলে টেকসই-শর্তযুক্ত কৃষিঋণ লেখা কঠিন, আর কার্বন-বর্ডার নীতির বাজারে শুল্ক-ছাড় রাখতে একক মানদণ্ড দরকার—এ কারণেই শিল্পগোষ্ঠীগুলো কমন এমআরভি (মেজারমেন্ট-রিপোর্টিং-ভেরিফিকেশন) ন্যূনতম কাঠামোর আহ্বান জানাচ্ছে, ব্র্যান্ডের পথ আলাদা হলেও। ভোক্তা ও ডাউনস্ট্রিম ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে লেবেল-তথ্য ও দামের বিন্যাসে: যাচাইকৃত মিথেন-হ্রাসের বিনিময়ে ক্রেতা যদি কৃষককে বেশি দাম দেয়, স্বল্পমেয়াদে কিছু খরচ পণ্যদামে আসতে পারে; তবে বায়োগ্যাস বিক্রি, সার বিকল্প ও দক্ষতা বাড়ার ফলে সময়ের সাথে ব্যয় পুষিয়ে যেতে পারে। রাজনৈতিক ঝুঁকিও আছে—আজকের করপোরেট সিদ্ধান্ত আগামীতে কৃষক-রাজনীতির বিতর্কে রূপ নিতে পারে; তাই নীতিনির্ধারকেরা ‘প্রযুক্তি-নির্দেশিত’ বিধির বদলে ‘ফলভিত্তিক অর্থপ্রদান’ পরীক্ষায় মন দিচ্ছেন। সারমর্ম হলো, দুগ্ধ খাতের ডিকার্বনাইজেশন থেমে যাচ্ছে না, কিন্তু শাসনব্যবস্থা জটিল হচ্ছে: নেসলের একক পথ পাইলটে গতি রাখে, তবু সবার সমন্বয়-খরচ বাড়ায়; এখন দেখার বিষয়, প্রতিদ্বন্দ্বী জোটগুলো ডেটা, যাচাই ও ক্রেডিটিং-নিয়মে কতটা সামঞ্জস্য আনে, যাতে কৃষক একই ‘এড়ানো মিথেন’ একবার বিক্রি করে—ক্রেতা, ব্যাংক ও সীমান্ত-নীতির কাছে একযোগে স্বীকৃতি পান।