১২:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা শেষে ফিরতে হতে পারে বেশির ভাগ বাংলাদেশী শিক্ষার্থীকে সারাদেশে ২৭০ রেস্টুরেন্টে বিকাশে পেমেন্টে পিৎজায় সর্বোচ্চ ২০০ টাকা ছাড় এবারে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করে দিল্লিতে তালেবান মন্ত্রীর নতুন সাংবাদিক সম্মেলন বান্দরবানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে আহত বিজিবি সদস্যকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় সিএমএইচে স্থানান্তর ফারিয়া ইয়াসমিন হচ্ছেন বাটা বাংলাদেশের প্রথম নারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক চাকসু কি ডাকসু ও জাকসুর পথেই হাঁটছে?—চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোটের হাওয়া, উত্তেজনায় শিক্ষার্থীরা এক বছরে ৬৪ বার—ভরি প্রতি স্বর্ণের দাম রেকর্ড ২,১৩,৭১৯ টাকায় বরিশালে বিএনপি নেতা স্বামীর হাতে যুব মহিলা লীগের নেত্রী খুনের অভিযোগ প্রধান উপদেষ্টার রোম সফর নিয়ে প্রশ্ন উঠছে কেন? বোতল সোয়াবিন ১৯৫, পাম ১৬৩— ভোজ্যতেলের নতুন দামে ভোক্তার চাপ দ্বিগুণ

ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ঐতিহাসিক বন্দি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতির পথে নতুন আশার আলো

দুই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসানে প্রাথমিক চুক্তি

দুই বছরের দীর্ঘ সংঘাতের পর অবশেষে গাজা উপত্যকায় বন্দি সংকট সমাধানে এক ঐতিহাসিক চুক্তিতে পৌঁছেছে ইসরায়েল ও হামাস। বুধবার ঘোষিত এই সমঝোতা অনুযায়ী, গাজায় আটক সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে, যা হবে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, খুব শিগগিরই বন্দিদের মুক্তি শুরু হবে এবং ইসরায়েল তাদের সেনা প্রত্যাহার করবে একটি নির্ধারিত এলাকায়। হামাসও নিশ্চিত করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি বৃহত্তর সমঝোতা হয়েছে যা যুদ্ধের অবসান, মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং বন্দি বিনিময়ের পথ খুলে দেবে।

বন্দি মুক্তি ও চুক্তির সময়সূচি

মিশরের মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছেন, হামাস আগামী রবিবার সকালেই জীবিত বন্দিদের মুক্তি দিতে পারে। তবে ট্রাম্প ফক্স নিউজকে বলেছেন, সোমবারের মধ্যেই মুক্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে লেখেন, “আজ মহান দিন—আরব ও মুসলিম বিশ্ব, ইসরায়েল, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য।” এই ঘোষণার মাধ্যমে আট মাসের স্থবির আলোচনায় নতুন গতি এসেছে এবং ট্রাম্প তাঁর অন্যতম পররাষ্ট্র নীতিগত লক্ষ্য—গাজা যুদ্ধের সমাপ্তির—অভিমুখে এগোচ্ছেন।

Striking a US Ally: Israel's Attack on Qatar and the Erosion of Regional  Stability

কাতার হামলার পর আলোচনায় অগ্রগতি

গত মাসে কাতারে ইসরায়েলি হামলার পর, যা হামাস নেতাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত, যুদ্ধের বিস্তারের আশঙ্কা তৈরি হয়। এর পরই ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ ও মুসলিম বিশ্বে কূটনৈতিক সক্রিয়তায় আলোচনা দ্রুত এগোয়।

এই চুক্তির মূল সেতুবন্ধনের ভূমিকা পালন করেছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী স্টিভ উইটকফ ও জামাতা জ্যারেড কুশনার।

বর্তমানে ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক আক্রমণে অপহৃত প্রায় ২৫০ জনের মধ্যে ২০ জন এখনো জীবিত রয়েছেন।

ইসরায়েলে আনন্দ, সামনে আরও সমঝোতার কাজ

বৃহস্পতিবার সকালে তেল আবিবে বন্দিদের পরিবারের সদস্য ও সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, বৃহস্পতিবার তাঁর সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি অনুমোদনের জন্য ভোট দেবে। তিনি বলেন, “এটি ইসরায়েলের জন্য একটি মহান দিন। ঈশ্বরের সহায়তায় আমরা শান্তির লক্ষ্যে এগিয়ে যাব।”

তবে মিশরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চূড়ান্ত কিছু বিষয়ে এখনো সমঝোতা হয়নি—এর মধ্যে রয়েছে বন্দিদের মৃতদেহ ফেরত দেওয়া, মুক্তি পেতে যাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দিদের তালিকা, এবং ইসরায়েলি সেনা কত দূর পর্যন্ত গাজা থেকে প্রত্যাহার করবে সে বিষয়ে নিশ্চয়তা।

Hamas group explained: Here's what to know about the group behind the  deadly attack in Israel

হামাসের দাবি ও বাস্তব চ্যালেঞ্জ

হামাস স্পষ্ট সময়সীমা এবং সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি চায়। আলোচনার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, হামাস কমপক্ষে ১০ দিন সময় চেয়েছে নিহত বন্দিদের মৃতদেহ শনাক্ত করতে। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, এটি আরও বেশি সময় নিতে পারে।

২০২৩ সালের নভেম্বর ও ২০২৫ সালের জানুয়ারির পূর্ববর্তী বন্দি বিনিময় চুক্তি অল্প সময়ের মধ্যেই ভেঙে যায়, ফলে এবার উভয়পক্ষই সতর্ক।

মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা

মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছেন, বুধবারের আংশিক চুক্তি মূলত আলোচনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে একটি “অন্তর্বর্তী সমাধান”, কারণ আরও জটিল বিষয়—যেমন হামাসের নিরস্ত্রীকরণ—এখনও আলোচনার টেবিলে রয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা হামাসকে সতর্ক করেছেন, যদি সপ্তাহের শেষ নাগাদ চূড়ান্ত চুক্তি না হয়, আলোচনাও বন্ধ হয়ে যাবে।

ট্রাম্পের ঘোষণা ও সম্ভাব্য সফর

হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর কাছ থেকে একটি নোট পেয়ে ট্রাম্প জানান, “আমরা মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় চুক্তির কাছাকাছি। শিগগিরই আমাকে সেখানে যেতে হতে পারে।”

World reacts to Gaza ceasefire deal announced by Trump | Gaza News | Al  Jazeera

এএপি-র তোলা ছবিতে দেখা যায়, তাঁকে সেই নোট পড়ার পর নিজের সোশ্যাল পোস্ট অনুমোদনের পরামর্শ দেওয়া হয় যেন তিনি প্রথম ঘোষণাকারী হতে পারেন।

হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার ওয়াল্টার রিড মেডিক্যাল সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ট্রাম্প মিশরে যেতে পারেন, যেখানে আলোচনাগুলো চলছে। তিনি গাজা সফরের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি।

চুক্তি বাস্তবায়নের স্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

চুক্তিটি সম্পন্ন হয়েছে মিশরের রেড সি উপকূলীয় শহর শার্ম আল শেখে তিন দিনের বৈঠকের তৃতীয় দিনে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি, ইসরায়েলি উপদেষ্টা রন ডারমার এবং মার্কিন প্রতিনিধিরা।

এই আলোচনাগুলো ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা, যার অধীনে গাজা পরিচালনার জন্য একটি “বোর্ড অব পিস” গঠনের কথা রয়েছে। এর নেতৃত্বে থাকবেন ট্রাম্প নিজে, আর সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও এতে ভূমিকা রাখবেন।

Celebration and trepidation in Gaza and Israel following ceasefire plan  agreement | CNN

ফিলিস্তিনি প্রতিক্রিয়া: সতর্ক আশাবাদ

গাজা সময় অনুযায়ী রাত ২টার দিকে ট্রাম্পের ঘোষণা আসার পর কিছু এলাকায় আনন্দোৎসব দেখা গেলেও, অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

নুসাইরাতের বাসিন্দা আহমেদ হুমায়িদ বলেন, “আমি আশাবাদী নই। ইসরায়েল বন্দিদের মুক্তির পর আবার যুদ্ধ শুরু করতে পারে। মানুষ আনন্দিত যে বোমা থামবে, কিন্তু আগামী দিনগুলো নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।”

যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ও হামাসের বার্তা

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যদিও এতে বেসামরিক ও যোদ্ধা উভয়ের সংখ্যা পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের জনগণের ত্যাগ বৃথা যাবে না। আমরা স্বাধীনতা, স্বাধিকার ও জাতীয় মর্যাদা অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।”

 

 

#গাজাযুদ্ধ #ইসরায়েলহামাসচুক্তি #ট্রাম্পকূটনীতি #বন্দিমুক্তি #মধ্যপ্রাচ্যশান্তি #সারাক্ষণরিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা শেষে ফিরতে হতে পারে বেশির ভাগ বাংলাদেশী শিক্ষার্থীকে

ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ঐতিহাসিক বন্দি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতির পথে নতুন আশার আলো

০৫:৩৫:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

দুই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসানে প্রাথমিক চুক্তি

দুই বছরের দীর্ঘ সংঘাতের পর অবশেষে গাজা উপত্যকায় বন্দি সংকট সমাধানে এক ঐতিহাসিক চুক্তিতে পৌঁছেছে ইসরায়েল ও হামাস। বুধবার ঘোষিত এই সমঝোতা অনুযায়ী, গাজায় আটক সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে, যা হবে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, খুব শিগগিরই বন্দিদের মুক্তি শুরু হবে এবং ইসরায়েল তাদের সেনা প্রত্যাহার করবে একটি নির্ধারিত এলাকায়। হামাসও নিশ্চিত করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি বৃহত্তর সমঝোতা হয়েছে যা যুদ্ধের অবসান, মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং বন্দি বিনিময়ের পথ খুলে দেবে।

বন্দি মুক্তি ও চুক্তির সময়সূচি

মিশরের মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছেন, হামাস আগামী রবিবার সকালেই জীবিত বন্দিদের মুক্তি দিতে পারে। তবে ট্রাম্প ফক্স নিউজকে বলেছেন, সোমবারের মধ্যেই মুক্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে লেখেন, “আজ মহান দিন—আরব ও মুসলিম বিশ্ব, ইসরায়েল, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য।” এই ঘোষণার মাধ্যমে আট মাসের স্থবির আলোচনায় নতুন গতি এসেছে এবং ট্রাম্প তাঁর অন্যতম পররাষ্ট্র নীতিগত লক্ষ্য—গাজা যুদ্ধের সমাপ্তির—অভিমুখে এগোচ্ছেন।

Striking a US Ally: Israel's Attack on Qatar and the Erosion of Regional  Stability

কাতার হামলার পর আলোচনায় অগ্রগতি

গত মাসে কাতারে ইসরায়েলি হামলার পর, যা হামাস নেতাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত, যুদ্ধের বিস্তারের আশঙ্কা তৈরি হয়। এর পরই ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ ও মুসলিম বিশ্বে কূটনৈতিক সক্রিয়তায় আলোচনা দ্রুত এগোয়।

এই চুক্তির মূল সেতুবন্ধনের ভূমিকা পালন করেছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী স্টিভ উইটকফ ও জামাতা জ্যারেড কুশনার।

বর্তমানে ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক আক্রমণে অপহৃত প্রায় ২৫০ জনের মধ্যে ২০ জন এখনো জীবিত রয়েছেন।

ইসরায়েলে আনন্দ, সামনে আরও সমঝোতার কাজ

বৃহস্পতিবার সকালে তেল আবিবে বন্দিদের পরিবারের সদস্য ও সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, বৃহস্পতিবার তাঁর সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি অনুমোদনের জন্য ভোট দেবে। তিনি বলেন, “এটি ইসরায়েলের জন্য একটি মহান দিন। ঈশ্বরের সহায়তায় আমরা শান্তির লক্ষ্যে এগিয়ে যাব।”

তবে মিশরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চূড়ান্ত কিছু বিষয়ে এখনো সমঝোতা হয়নি—এর মধ্যে রয়েছে বন্দিদের মৃতদেহ ফেরত দেওয়া, মুক্তি পেতে যাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দিদের তালিকা, এবং ইসরায়েলি সেনা কত দূর পর্যন্ত গাজা থেকে প্রত্যাহার করবে সে বিষয়ে নিশ্চয়তা।

Hamas group explained: Here's what to know about the group behind the  deadly attack in Israel

হামাসের দাবি ও বাস্তব চ্যালেঞ্জ

হামাস স্পষ্ট সময়সীমা এবং সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি চায়। আলোচনার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, হামাস কমপক্ষে ১০ দিন সময় চেয়েছে নিহত বন্দিদের মৃতদেহ শনাক্ত করতে। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, এটি আরও বেশি সময় নিতে পারে।

২০২৩ সালের নভেম্বর ও ২০২৫ সালের জানুয়ারির পূর্ববর্তী বন্দি বিনিময় চুক্তি অল্প সময়ের মধ্যেই ভেঙে যায়, ফলে এবার উভয়পক্ষই সতর্ক।

মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা

মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছেন, বুধবারের আংশিক চুক্তি মূলত আলোচনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে একটি “অন্তর্বর্তী সমাধান”, কারণ আরও জটিল বিষয়—যেমন হামাসের নিরস্ত্রীকরণ—এখনও আলোচনার টেবিলে রয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা হামাসকে সতর্ক করেছেন, যদি সপ্তাহের শেষ নাগাদ চূড়ান্ত চুক্তি না হয়, আলোচনাও বন্ধ হয়ে যাবে।

ট্রাম্পের ঘোষণা ও সম্ভাব্য সফর

হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর কাছ থেকে একটি নোট পেয়ে ট্রাম্প জানান, “আমরা মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় চুক্তির কাছাকাছি। শিগগিরই আমাকে সেখানে যেতে হতে পারে।”

World reacts to Gaza ceasefire deal announced by Trump | Gaza News | Al  Jazeera

এএপি-র তোলা ছবিতে দেখা যায়, তাঁকে সেই নোট পড়ার পর নিজের সোশ্যাল পোস্ট অনুমোদনের পরামর্শ দেওয়া হয় যেন তিনি প্রথম ঘোষণাকারী হতে পারেন।

হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার ওয়াল্টার রিড মেডিক্যাল সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ট্রাম্প মিশরে যেতে পারেন, যেখানে আলোচনাগুলো চলছে। তিনি গাজা সফরের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি।

চুক্তি বাস্তবায়নের স্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

চুক্তিটি সম্পন্ন হয়েছে মিশরের রেড সি উপকূলীয় শহর শার্ম আল শেখে তিন দিনের বৈঠকের তৃতীয় দিনে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি, ইসরায়েলি উপদেষ্টা রন ডারমার এবং মার্কিন প্রতিনিধিরা।

এই আলোচনাগুলো ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা, যার অধীনে গাজা পরিচালনার জন্য একটি “বোর্ড অব পিস” গঠনের কথা রয়েছে। এর নেতৃত্বে থাকবেন ট্রাম্প নিজে, আর সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও এতে ভূমিকা রাখবেন।

Celebration and trepidation in Gaza and Israel following ceasefire plan  agreement | CNN

ফিলিস্তিনি প্রতিক্রিয়া: সতর্ক আশাবাদ

গাজা সময় অনুযায়ী রাত ২টার দিকে ট্রাম্পের ঘোষণা আসার পর কিছু এলাকায় আনন্দোৎসব দেখা গেলেও, অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

নুসাইরাতের বাসিন্দা আহমেদ হুমায়িদ বলেন, “আমি আশাবাদী নই। ইসরায়েল বন্দিদের মুক্তির পর আবার যুদ্ধ শুরু করতে পারে। মানুষ আনন্দিত যে বোমা থামবে, কিন্তু আগামী দিনগুলো নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।”

যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ও হামাসের বার্তা

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যদিও এতে বেসামরিক ও যোদ্ধা উভয়ের সংখ্যা পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের জনগণের ত্যাগ বৃথা যাবে না। আমরা স্বাধীনতা, স্বাধিকার ও জাতীয় মর্যাদা অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।”

 

 

#গাজাযুদ্ধ #ইসরায়েলহামাসচুক্তি #ট্রাম্পকূটনীতি #বন্দিমুক্তি #মধ্যপ্রাচ্যশান্তি #সারাক্ষণরিপোর্ট