১১:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
জুলাই চার্টার স্বাক্ষর ঘিরে রাজনৈতিক অচলাবস্থা চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে নিহত দুই ছাত্রদল নেতা পোশাক রপ্তানিকারক কারখানার সঙ্গে মিরপুর ট্র্যাজেডির কোনো সম্পর্ক নেই—বিজিএমইএর স্পষ্ট বার্তা মিরপুরের কেমিক্যাল গুদামের ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি চলবে আরও তিন দিন নববিবাহিত জয়-রাজিয়া গত সপ্তাহে কাজ নিয়েছিলেন গার্মেন্টসে, আগুনে প্রাণ হারালেন দু’জনই ব্রিটিশ অভিজাত শ্রেণি: পরিবর্তিত সময়ে ঐতিহ্য রক্ষা ও সামঞ্জস্যের প্রচেষ্টা আইনস্টাইন: একজন মহান বিজ্ঞানী, কিন্তু তার জীবন ছিল জটিল গ্রিনউইচের নেতৃত্বে ভেনাসের গতিপথ পর্যবেক্ষণ: একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত আমেরিকার নাগরিকত্বধারী ও তথাকথিত গণতান্ত্রিক, পরিবেশবাদীদের দিন দ্রুতই শেষ হবে প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোর মধ্যে ভারসাম্য নষ্ট চায় না বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমদ

গ্রামীণ অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনে এডিবি–বাংলাদেশের ১০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি

গ্রামীণ উদ্যোক্তা, নারী নেতৃত্বাধীন ব্যবসা ও সবুজ বিনিয়োগে নতুন গতি আনতে বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) যৌথভাবে স্বাক্ষর করেছে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের এক বড় চুক্তি। প্রকল্পটির লক্ষ্য—গ্রামীণ অর্থনীতিতে পুঁজির প্রবাহ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, এবং টেকসই উন্নয়ন কাঠামো গড়ে তোলা।

টেকসই প্রবৃদ্ধির নতুন অঙ্গীকার

বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ADB) যৌথভাবে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের এক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার লক্ষ্য গ্রামীণ ও আধা-শহর এলাকায় অবস্থিত কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগগুলোর (CMSME) অর্থায়ন সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য শুধু ঋণ বিতরণ নয়—বরং উদ্যোক্তা-গঠন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, এবং সবুজ (Green) ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে টেকসই উন্নয়ন কাঠামো তৈরি করা।

চুক্তির মূল কাঠামো ও লক্ষ্য

“Second Small and Medium-Sized Enterprises Development Project (Phase 2)” নামের এই প্রকল্পের আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে অন্তত ১৫ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রকল্পের অর্থায়ন ব্যবহার হবে—

  • গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি করতে,
  • নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে,
  • জলবায়ু-সহনশীল উৎপাদন ও সবুজ উদ্ভাবনে সহায়তা দিতে,
  • অংশগ্রহণকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়াতে, এবং
  • বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি উন্নয়নে।

এডিবি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে প্রায় ৯৫০ হাজার ডলারের টেকনিক্যাল সহায়তা কর্মসূচি পরিচালনা করবে, যার আওতায় থাকবে ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, গ্রিন ফাইন্যান্স গাইডলাইন প্রণয়ন এবং ভ্যালু-চেইন নির্ভর ঋণ-মডেল উন্নয়ন।

গ্রামীণ অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব

বাংলাদেশের অধিকাংশ ক্ষুদ্র উদ্যোগ এখনো মহানগরের বাইরে কার্যক্রম পরিচালনা করে, কিন্তু তাদের ব্যাংক ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ সীমিত। এডিবির এ উদ্যোগ গ্রামীণ অর্থনীতিতে পুঁজির প্রবাহ বাড়িয়ে আঞ্চলিক বৈষম্য হ্রাস, দারিদ্র্য কমানো, ও নারী উদ্যোক্তা বিকাশে বাস্তব ভূমিকা রাখতে পারে।

একই সঙ্গে “সবুজ ব্যবসা” ও জলবায়ু-ঝুঁকি সংহত ব্যবস্থার মাধ্যমে এ প্রকল্প টেকসই ব্যবসা-পরিবেশ গড়ে তুলবে।

আইএমএফ প্রেক্ষাপট: অর্থনৈতিক নীতির সঙ্গে সংযোগ

২০২৫ সালের জুনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) বাংলাদেশের জন্য নতুন করে US$ ৮৮৪ মিলিয়ন (ECF/EFF) ও US$ ৪৫৩ মিলিয়ন (RSF) ঋণ অনুমোদন করে। এই তহবিলের উদ্দেশ্য ছিল—মুদ্রানীতি সংস্কার, রাজস্ব ব্যবস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি, এবং বৈদেশিক লেনদেন নীতির নমনীয়তা আনা।

আইএমএফের Bangladesh Country Report 2025 অনুযায়ী,

  • দেশের অর্থনীতি এখনো মধ্যম মাত্রার ঋণঝুঁকি-যুক্ত,
  • মুদ্রাস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার সংকট প্রবৃদ্ধিতে চাপ ফেলছে,
  • এবং করব্যবস্থা ও ব্যাংক তদারকি সংস্কার না আনলে বিনিয়োগ প্রবাহ ব্যাহত হতে পারে।

এই প্রেক্ষাপটে এডিবির CMSME তহবিল কার্যক্রম আইএমএফের সুপারিশকৃত আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি ও বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগের বর্তমান বাস্তবতা

বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী—

  • দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৭৮% ক্ষুদ্র-মাঝারি খাতে,
  • জাতীয় জিডিপির ২৫–৩০% আসে এই খাত থেকে,
  • অথচ ব্যাংক ঋণের মাত্র ১৬–১৮% CMSME খাতে পৌঁছায়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ও প্রোভিশন সংক্রান্ত কঠোর নীতির কারণে অনেক বাণিজ্যিক ব্যাংক CMSME ঋণ প্রদানে পিছিয়ে পড়ছে। ফলে গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ ঋণপ্রাপ্তি এখনো বড় চ্যালেঞ্জ।
এডিবির প্রকল্প এই শূন্যতা আংশিকভাবে পূরণ করতে পারে—বিশেষ করে নারী নেতৃত্বাধীন ও জলবায়ু-সচেতন উদ্যোগগুলোর ক্ষেত্রে।

নারী উদ্যোক্তা ও সবুজ অর্থনীতি: নতুন দিগন্ত

চুক্তিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নারী উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও আর্থিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জং (Hoe Yun Jeong) বলেন—
“এই প্রকল্প শুধু অর্থায়ন নয়, নারী উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দক্ষতা গড়ে তুলবে।”

এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বিবেচনায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে “গ্রীন প্রোডাক্টস”-এ বিনিয়োগে উৎসাহ দেওয়া হবে, যা বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের প্রতিযোগিতা ক্ষমতা বাড়াবে।

চ্যালেঞ্জ ও নীতিগত সুপারিশ

তহবিল সফলভাবে বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে—

  • ব্যাংকিং খাতের জটিল প্রক্রিয়া ও ঋণ বিতরণের ধীরগতি,
  • উদ্যোক্তাদের আর্থিক জ্ঞান ও হিসাব সংরক্ষণের অভাব,
  • প্রশাসনিক দেরি ও প্রকল্প পর্যায়ে জটিলতা।

নীতিগতভাবে প্রয়োজন—

কর সংস্কার ও রাজস্ব স্বচ্ছতা বৃদ্ধি,

CMSME ডেটাবেস ও ডিজিটাল ঋণ-স্কোরিং ব্যবস্থা,

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য গ্যারান্টি ফান্ড ও নিম্নসুদ স্কিম,

সবুজ বিনিয়োগে কর-ছাড় ও প্রণোদনা নীতি।

উন্নয়ন সমন্বয়ের পথে

এডিবির ১০০ মিলিয়ন ডলারের এই চুক্তি শুধু আর্থিক সহায়তা নয়—এটি বাংলাদেশের টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে একটি কাঠামোগত পদক্ষেপ।
আইএমএফের আর্থিক সংস্কার নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যদি এই তহবিল কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তবে গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণ—ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগগুলো—অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হবে।

#ADB #IMF #CMSME #BangladeshEconomy #GreenFinance #WomenEntrepreneurship #SarakhonReport #BangladeshDevelopment

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই চার্টার স্বাক্ষর ঘিরে রাজনৈতিক অচলাবস্থা

গ্রামীণ অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনে এডিবি–বাংলাদেশের ১০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি

০৬:১৫:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

গ্রামীণ উদ্যোক্তা, নারী নেতৃত্বাধীন ব্যবসা ও সবুজ বিনিয়োগে নতুন গতি আনতে বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) যৌথভাবে স্বাক্ষর করেছে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের এক বড় চুক্তি। প্রকল্পটির লক্ষ্য—গ্রামীণ অর্থনীতিতে পুঁজির প্রবাহ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, এবং টেকসই উন্নয়ন কাঠামো গড়ে তোলা।

টেকসই প্রবৃদ্ধির নতুন অঙ্গীকার

বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ADB) যৌথভাবে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের এক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার লক্ষ্য গ্রামীণ ও আধা-শহর এলাকায় অবস্থিত কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগগুলোর (CMSME) অর্থায়ন সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য শুধু ঋণ বিতরণ নয়—বরং উদ্যোক্তা-গঠন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, এবং সবুজ (Green) ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে টেকসই উন্নয়ন কাঠামো তৈরি করা।

চুক্তির মূল কাঠামো ও লক্ষ্য

“Second Small and Medium-Sized Enterprises Development Project (Phase 2)” নামের এই প্রকল্পের আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে অন্তত ১৫ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রকল্পের অর্থায়ন ব্যবহার হবে—

  • গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের দীর্ঘমেয়াদি ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি করতে,
  • নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে,
  • জলবায়ু-সহনশীল উৎপাদন ও সবুজ উদ্ভাবনে সহায়তা দিতে,
  • অংশগ্রহণকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়াতে, এবং
  • বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি উন্নয়নে।

এডিবি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে প্রায় ৯৫০ হাজার ডলারের টেকনিক্যাল সহায়তা কর্মসূচি পরিচালনা করবে, যার আওতায় থাকবে ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, গ্রিন ফাইন্যান্স গাইডলাইন প্রণয়ন এবং ভ্যালু-চেইন নির্ভর ঋণ-মডেল উন্নয়ন।

গ্রামীণ অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব

বাংলাদেশের অধিকাংশ ক্ষুদ্র উদ্যোগ এখনো মহানগরের বাইরে কার্যক্রম পরিচালনা করে, কিন্তু তাদের ব্যাংক ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ সীমিত। এডিবির এ উদ্যোগ গ্রামীণ অর্থনীতিতে পুঁজির প্রবাহ বাড়িয়ে আঞ্চলিক বৈষম্য হ্রাস, দারিদ্র্য কমানো, ও নারী উদ্যোক্তা বিকাশে বাস্তব ভূমিকা রাখতে পারে।

একই সঙ্গে “সবুজ ব্যবসা” ও জলবায়ু-ঝুঁকি সংহত ব্যবস্থার মাধ্যমে এ প্রকল্প টেকসই ব্যবসা-পরিবেশ গড়ে তুলবে।

আইএমএফ প্রেক্ষাপট: অর্থনৈতিক নীতির সঙ্গে সংযোগ

২০২৫ সালের জুনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) বাংলাদেশের জন্য নতুন করে US$ ৮৮৪ মিলিয়ন (ECF/EFF) ও US$ ৪৫৩ মিলিয়ন (RSF) ঋণ অনুমোদন করে। এই তহবিলের উদ্দেশ্য ছিল—মুদ্রানীতি সংস্কার, রাজস্ব ব্যবস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি, এবং বৈদেশিক লেনদেন নীতির নমনীয়তা আনা।

আইএমএফের Bangladesh Country Report 2025 অনুযায়ী,

  • দেশের অর্থনীতি এখনো মধ্যম মাত্রার ঋণঝুঁকি-যুক্ত,
  • মুদ্রাস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার সংকট প্রবৃদ্ধিতে চাপ ফেলছে,
  • এবং করব্যবস্থা ও ব্যাংক তদারকি সংস্কার না আনলে বিনিয়োগ প্রবাহ ব্যাহত হতে পারে।

এই প্রেক্ষাপটে এডিবির CMSME তহবিল কার্যক্রম আইএমএফের সুপারিশকৃত আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি ও বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগের বর্তমান বাস্তবতা

বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী—

  • দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৭৮% ক্ষুদ্র-মাঝারি খাতে,
  • জাতীয় জিডিপির ২৫–৩০% আসে এই খাত থেকে,
  • অথচ ব্যাংক ঋণের মাত্র ১৬–১৮% CMSME খাতে পৌঁছায়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ও প্রোভিশন সংক্রান্ত কঠোর নীতির কারণে অনেক বাণিজ্যিক ব্যাংক CMSME ঋণ প্রদানে পিছিয়ে পড়ছে। ফলে গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ ঋণপ্রাপ্তি এখনো বড় চ্যালেঞ্জ।
এডিবির প্রকল্প এই শূন্যতা আংশিকভাবে পূরণ করতে পারে—বিশেষ করে নারী নেতৃত্বাধীন ও জলবায়ু-সচেতন উদ্যোগগুলোর ক্ষেত্রে।

নারী উদ্যোক্তা ও সবুজ অর্থনীতি: নতুন দিগন্ত

চুক্তিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নারী উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও আর্থিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জং (Hoe Yun Jeong) বলেন—
“এই প্রকল্প শুধু অর্থায়ন নয়, নারী উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দক্ষতা গড়ে তুলবে।”

এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বিবেচনায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে “গ্রীন প্রোডাক্টস”-এ বিনিয়োগে উৎসাহ দেওয়া হবে, যা বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের প্রতিযোগিতা ক্ষমতা বাড়াবে।

চ্যালেঞ্জ ও নীতিগত সুপারিশ

তহবিল সফলভাবে বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে—

  • ব্যাংকিং খাতের জটিল প্রক্রিয়া ও ঋণ বিতরণের ধীরগতি,
  • উদ্যোক্তাদের আর্থিক জ্ঞান ও হিসাব সংরক্ষণের অভাব,
  • প্রশাসনিক দেরি ও প্রকল্প পর্যায়ে জটিলতা।

নীতিগতভাবে প্রয়োজন—

কর সংস্কার ও রাজস্ব স্বচ্ছতা বৃদ্ধি,

CMSME ডেটাবেস ও ডিজিটাল ঋণ-স্কোরিং ব্যবস্থা,

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য গ্যারান্টি ফান্ড ও নিম্নসুদ স্কিম,

সবুজ বিনিয়োগে কর-ছাড় ও প্রণোদনা নীতি।

উন্নয়ন সমন্বয়ের পথে

এডিবির ১০০ মিলিয়ন ডলারের এই চুক্তি শুধু আর্থিক সহায়তা নয়—এটি বাংলাদেশের টেকসই প্রবৃদ্ধির পথে একটি কাঠামোগত পদক্ষেপ।
আইএমএফের আর্থিক সংস্কার নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যদি এই তহবিল কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তবে গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণ—ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগগুলো—অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হবে।

#ADB #IMF #CMSME #BangladeshEconomy #GreenFinance #WomenEntrepreneurship #SarakhonReport #BangladeshDevelopment