প্রধান ওভারভিউ
মাদাগাস্কারে গত দুই সপ্তাহ ধরে চলছে সরকারের বিরুদ্ধে যুবসমাজের বিক্ষোভ। রাজধানী আন্তানানারিভোয় ১,০০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমেছিল। নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে। এই বিক্ষোভ “Gen Z Mada” নামে পরিচিত একটি তরুণ আন্দোলনের উদ্যোগে সংগঠিত হয়েছে। তারা প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোলিনার সঙ্গে আলোচনায় যেতে অস্বীকার করেছে এবং তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছে।
বিক্ষোভের সূচনা ও কারণ
বিক্ষোভ শুরু হয় ২৫ সেপ্টেম্বর, প্রধানত বিদ্যুৎ ও পানির ধারাবাহিক অনুপস্থিততা ও ঘাটতির প্রতিবাদে। কিন্তু দ্রুত বিষয়টি সম্প্রসারিত হয়, দুর্নীতি, ব্যাপক বেকারত্ব ও জীবনযাত্রার উচ্চ খরচের বিরূপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে জনদুর্ভোগ বাড়তে থাকে। আন্দোলনকারীরা দাবি করে, তারা এমন একটি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় না, যে তাদের অধিকার ধরে রেখে নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে।
রাজোলিনার প্রতিক্রিয়া ও আলোচনার প্রস্তাব
বুধবার, প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোলিনা তাঁর প্রাসাদে একটি টাউন-হল মিটিং আয়োজন করেন, যেখানে সরকারপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠী অংশগ্রহণ করে। তবে Gen Z Mada আন্দোলন সেই সভায় উপস্থিত হয়নি। রাজোলিনা ঘোষণা করেন যে, যদি আগামী এক বছরের মধ্যে রাজধানীতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট সমস্যার সমাধান না হয়, তিনি পদত্যাগ করবেন।
তিনি বলেন, “যারা আমাকে বলেছে সব ঠিক আছে, তারাই আজ এই পরিস্থিতির দায়ী।”
এই ধরনের সভা তিনি তাঁর “আরও শোনা” প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে আন্দোলন তেমনভাবে সন্তুষ্ট হয়নি। তারা প্রেসিডেন্ট রাজোলিনাকে জানিয়েছে যে, আলোচনায় বসার আগে তাদের দাবি পূরণ করা হবে না।
বিক্ষোভের বিস্তার ও প্রশাসনিক পরিবর্তন
Gen Z Mada বৃহস্পতিবার সারাদেশে ধর্মঘট ঘোষণা করে, ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর। গত সপ্তাহেই রাজোলিনা তাঁর পুরো মন্ত্রিসভা বরখাস্ত করেছেন এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একজন সেনা জেনারেল নিয়োগ দিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা সেটিও প্রত্যাখ্যান করেছে।
রাজোলিনা ২০০৯ সালে সাধারণ বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলেন এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মার্ক রাভালোমানানাকে অপসারণ করেছিলেন।
সংঘর্ষ, মানবিক ক্ষয়ক্ষতি ও বর্তমান পরিস্থিতি
বিক্ষোভ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে কমপক্ষে ২২ জন নিহত, অনেকে আহত—তথ্য দিচ্ছে জাতিসংঘ। সরকার এই সংখ্যা প্রত্যাখ্যান করেছে।
আন্তানানানারিভো শহরে জনজীবন সাধারণত স্বাভাবিকই চলছে, যদিও কোথাও কোথাও পুলিশি উপস্থিতি ও রাস্তার অবরোধ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সংবাদসংস্থা এএফপি জানায়, “নিরাপত্তা বাহিনী বায়ুপ্রতিরোধী যানবাহন দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করেছে।”
বুলেট ও স্টান গ্রানেড থেকে কমপক্ষে চার জন আহত হয়েছেন।
এক প্রসূতি বিভাগে টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয়; এতে নার্সদের নবজাতকদের পিছনের দিকে সরিয়ে নিতে হয়েছিল। ([Al Jazeera][1])
রাজনীতি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
এই আন্দোলন বৃহত্তর অর্থনৈতিক ও সামাজিক অসন্তোষের প্রতিফলন—বিশেষত এমন দেশগুলোতে যেখানে জনসংখ্যার বড় অংশ দারিদ্র্য ও রাজনৈতিক স্থিতিহীনতার শিকার।
অর্থনৈতিকভাবে মাদাগাস্কার একটি সম্পদসমৃদ্ধ দেশ হলেও তার জনগণের অধিকাংশ উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। ([Wikipedia][2])
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা পাকিস্তানের তরুণ আন্দোলন ও নেপালের বিক্ষোভ উদাহরণ অনুসরণ করছে।
রাজোলিনা প্রশাসন এখনো আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি; দেশ জুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে।