০১:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
চীনে এনবিএর প্রত্যাবর্তন: ম্যাকাওতে প্রাক-মৌসুমে নেটস–সানস, সম্পর্কের নতুন অধ্যায় আদানি গ্রুপের নতুন উদ্যোগ: নবি মুম্বাই বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মাণ ইংল্যান্ডের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় ‘ভুলে যাওয়া রাজা অ্যাথেলস্টানকে শ্রদ্ধা জানাতে শত মাইলের নতুন ভ্রমণ পথ ‘ দেশের হারিয়ে যাওয়া লাল ডাকবাক্স: ডিজিটাল যুগে বিলুপ্ত চিঠির স্মৃতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৩৩) শরৎ বাধা পেল, বসন্ত কি আসতে পারবে? মোদী-ট্রাম্প বৈঠক: ভারতের জন্য নতুন সম্ভাবনা ইসরাইল ও হামাস কী কী ছাড় দিয়েছে গাজায় বন্দি–যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে? সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের খ্যাতি ছিল একাধারে শিক্ষক, লেখক ও সাহিত্যিক হিসেবে সরেজমিন খাগড়াছড়ি: একদিকে ক্ষোভ-আতঙ্ক, আরেকদিকে নজরদারি

দেশের হারিয়ে যাওয়া লাল ডাকবাক্স: ডিজিটাল যুগে বিলুপ্ত চিঠির স্মৃতি

একসময় মানুষের যোগাযোগের আবেগ, অপেক্ষা আর ভালোবাসার প্রতীক ছিল লাল ডাকবাক্স। আজ প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে তা হারিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। হাতে লেখা চিঠির উষ্ণতা হারিয়ে গেছে ডিজিটাল বার্তার ঠাণ্ডা স্ক্রিনে।


প্রযুক্তির জোয়ারে চিঠির দিন ফুরিয়েছে

দেশজুড়ে একসময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লাল ডাকবাক্সগুলো ছিল মানুষের আবেগের প্রতীক। ভালোবাসা, দুঃখ, শুভেচ্ছা কিংবা খবর—সবই যেত ডাকপিয়নের ব্যাগে ভরে। কিন্তু আজ সেই দৃশ্য ইতিহাসে পরিণত হচ্ছে।
মোবাইল ফোন, ইমেইল, অনলাইন চ্যাট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সহজলভ্যতা মানুষের যোগাযোগের ধরণটাই পাল্টে দিয়েছে। হাতে লেখা চিঠির উষ্ণতা এখন হারিয়ে গেছে ডিজিটাল মেসেজের ঠাণ্ডা স্ক্রিনে।

ঝিনাইগাতীতে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী সেই হলুদ খাম আর লাল ডাকবাক্স - দৈনিক গণবার্তা

লালমনিরহাট থেকে ঢাকা—সব জেলাতেই একই চিত্র

লালমনিরহাট, রংপুর, যশোর, কুষ্টিয়া কিংবা রাজধানী ঢাকা—সব এলাকাতেই এখন একই বাস্তবতা। যে লাল বাক্স একসময় মানুষের অনুভূতির বাহক ছিল, তা আজ পরিণত হয়েছে অতীতের স্মৃতিচিহ্নে।
একসময় প্রতিটি ডাকঘরে সকাল-বিকেল চিঠির বাক্স খোলা হতো, ডাকপিয়নরা হাঁটতেন গ্রাম থেকে গ্রামে, শহর থেকে শহরে। এখন সেই বাক্সগুলো পড়ে আছে অবহেলায়—কোথাও মরিচা পড়েছে, কোথাও ভাঙা, কোথাও রঙ মুছে গেছে।


চিঠি পাঠানোর সংস্কৃতি বিলুপ্ত, টিকে আছে শুধু অফিসিয়াল ডাক

ডাকঘরের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ব্যক্তিগত চিঠি এখন প্রায় বিলুপ্ত। মানুষ এখন মোবাইলেই খবর পাঠায়, ভিডিও কলে দেখা করে, ইমেইলে নথি পাঠায়। ফলে ডাকঘরে আসে কেবল অফিসিয়াল ও প্রাতিষ্ঠানিক ডাকপত্র।
লালমনিরহাট ডাক বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, “জেলায় এখনও ৮০টির বেশি ডাকঘর আছে, কিন্তু মানুষের চিঠি পাওয়া এখন দুষ্কর। কেউ আর প্রেমপত্র বা পারিবারিক চিঠি লেখে না। বাক্সগুলো কেবল রক্ষণাবেক্ষণেই টিকে আছে।”

চিঠি ও ডাকঘর

ডিজিটাল যুগে ডাক বিভাগ নতুন পথে

ডাক বিভাগ এখন চিঠির বাইরে নতুন সেবা নিয়ে এসেছে—ইএমএস, পার্সেল সার্ভিস, ডিজিটাল মানি অর্ডার, ই-কমার্স পণ্য সরবরাহ ইত্যাদি। কিন্তু যেভাবে একসময় চিঠির মাধ্যমে মানুষ আবেগ ভাগাভাগি করত, সেই সংস্কৃতি আর ফেরানো সম্ভব নয়।
একজন প্রবীণ ডাকপিয়ন বলেন, “চিঠির দিনগুলো অন্যরকম ছিল। মানুষ আমাদের জন্য অপেক্ষা করত। এখন সবাই নিজের হাতে খবর পাঠায়, কিন্তু সেই অপেক্ষার উষ্ণতা হারিয়ে গেছে।”


হারানো আবেগের প্রতীক হিসেবে লাল বাক্স

আজকের দিনে লাল ডাকবাক্স কেবল একটি প্রতীক—অতীতের সেই মানবিক যোগাযোগের, যখন সম্পর্ক গড়ে উঠত শব্দের ছোঁয়ায়, কলমের কালিতে।
যেখানে এখন এক ক্লিকেই পৌঁছে যায় বার্তা, সেখানে কেউ আর চিঠি লেখে না। তবু রাস্তার পাশে দাঁড়ানো সেই লাল বাক্সগুলো যেন নিঃশব্দে বলে যায়—“আমি এক সময় মানুষের হৃদয়ের ঠিকানা ছিলাম।”


#চিঠিরযুগ #লালমনিরহাট #ডাকবাক্স #প্রযুক্তি #ডিজিটালযুগ #স্মৃতি #সারাক্ষণরিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

চীনে এনবিএর প্রত্যাবর্তন: ম্যাকাওতে প্রাক-মৌসুমে নেটস–সানস, সম্পর্কের নতুন অধ্যায়

দেশের হারিয়ে যাওয়া লাল ডাকবাক্স: ডিজিটাল যুগে বিলুপ্ত চিঠির স্মৃতি

১০:০০:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

একসময় মানুষের যোগাযোগের আবেগ, অপেক্ষা আর ভালোবাসার প্রতীক ছিল লাল ডাকবাক্স। আজ প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে তা হারিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। হাতে লেখা চিঠির উষ্ণতা হারিয়ে গেছে ডিজিটাল বার্তার ঠাণ্ডা স্ক্রিনে।


প্রযুক্তির জোয়ারে চিঠির দিন ফুরিয়েছে

দেশজুড়ে একসময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লাল ডাকবাক্সগুলো ছিল মানুষের আবেগের প্রতীক। ভালোবাসা, দুঃখ, শুভেচ্ছা কিংবা খবর—সবই যেত ডাকপিয়নের ব্যাগে ভরে। কিন্তু আজ সেই দৃশ্য ইতিহাসে পরিণত হচ্ছে।
মোবাইল ফোন, ইমেইল, অনলাইন চ্যাট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সহজলভ্যতা মানুষের যোগাযোগের ধরণটাই পাল্টে দিয়েছে। হাতে লেখা চিঠির উষ্ণতা এখন হারিয়ে গেছে ডিজিটাল মেসেজের ঠাণ্ডা স্ক্রিনে।

ঝিনাইগাতীতে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী সেই হলুদ খাম আর লাল ডাকবাক্স - দৈনিক গণবার্তা

লালমনিরহাট থেকে ঢাকা—সব জেলাতেই একই চিত্র

লালমনিরহাট, রংপুর, যশোর, কুষ্টিয়া কিংবা রাজধানী ঢাকা—সব এলাকাতেই এখন একই বাস্তবতা। যে লাল বাক্স একসময় মানুষের অনুভূতির বাহক ছিল, তা আজ পরিণত হয়েছে অতীতের স্মৃতিচিহ্নে।
একসময় প্রতিটি ডাকঘরে সকাল-বিকেল চিঠির বাক্স খোলা হতো, ডাকপিয়নরা হাঁটতেন গ্রাম থেকে গ্রামে, শহর থেকে শহরে। এখন সেই বাক্সগুলো পড়ে আছে অবহেলায়—কোথাও মরিচা পড়েছে, কোথাও ভাঙা, কোথাও রঙ মুছে গেছে।


চিঠি পাঠানোর সংস্কৃতি বিলুপ্ত, টিকে আছে শুধু অফিসিয়াল ডাক

ডাকঘরের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ব্যক্তিগত চিঠি এখন প্রায় বিলুপ্ত। মানুষ এখন মোবাইলেই খবর পাঠায়, ভিডিও কলে দেখা করে, ইমেইলে নথি পাঠায়। ফলে ডাকঘরে আসে কেবল অফিসিয়াল ও প্রাতিষ্ঠানিক ডাকপত্র।
লালমনিরহাট ডাক বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, “জেলায় এখনও ৮০টির বেশি ডাকঘর আছে, কিন্তু মানুষের চিঠি পাওয়া এখন দুষ্কর। কেউ আর প্রেমপত্র বা পারিবারিক চিঠি লেখে না। বাক্সগুলো কেবল রক্ষণাবেক্ষণেই টিকে আছে।”

চিঠি ও ডাকঘর

ডিজিটাল যুগে ডাক বিভাগ নতুন পথে

ডাক বিভাগ এখন চিঠির বাইরে নতুন সেবা নিয়ে এসেছে—ইএমএস, পার্সেল সার্ভিস, ডিজিটাল মানি অর্ডার, ই-কমার্স পণ্য সরবরাহ ইত্যাদি। কিন্তু যেভাবে একসময় চিঠির মাধ্যমে মানুষ আবেগ ভাগাভাগি করত, সেই সংস্কৃতি আর ফেরানো সম্ভব নয়।
একজন প্রবীণ ডাকপিয়ন বলেন, “চিঠির দিনগুলো অন্যরকম ছিল। মানুষ আমাদের জন্য অপেক্ষা করত। এখন সবাই নিজের হাতে খবর পাঠায়, কিন্তু সেই অপেক্ষার উষ্ণতা হারিয়ে গেছে।”


হারানো আবেগের প্রতীক হিসেবে লাল বাক্স

আজকের দিনে লাল ডাকবাক্স কেবল একটি প্রতীক—অতীতের সেই মানবিক যোগাযোগের, যখন সম্পর্ক গড়ে উঠত শব্দের ছোঁয়ায়, কলমের কালিতে।
যেখানে এখন এক ক্লিকেই পৌঁছে যায় বার্তা, সেখানে কেউ আর চিঠি লেখে না। তবু রাস্তার পাশে দাঁড়ানো সেই লাল বাক্সগুলো যেন নিঃশব্দে বলে যায়—“আমি এক সময় মানুষের হৃদয়ের ঠিকানা ছিলাম।”


#চিঠিরযুগ #লালমনিরহাট #ডাকবাক্স #প্রযুক্তি #ডিজিটালযুগ #স্মৃতি #সারাক্ষণরিপোর্ট