১১:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব? যে রিকশায় গুলিবিদ্ধ হন হাদি, সেই চালকের আদালতে জবানবন্দি তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচনে আমরা জয়ী হবো: মির্জা ফখরুল পারমাণবিক সাবমেরিন থেকে কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা ভারতের তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনে বহুদলীয় গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে: নাহিদ ঢাকা-১৫ আসনে জামায়াত আমিরের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে শ্রমিক নিহত, অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা নির্বাচনপ্রত্যাশীদের জন্য অনলাইনে কর রিটার্ন দাখিলে বিশেষ ব্যবস্থা এনবিআরের মাকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে তারেক রহমান মিয়ানমারের অসম্পূর্ণ সাধারণ নির্বাচন: জানা দরকার পাঁচটি বিষয়

কোমর ব্যথা সারাতে ৮টি জীবন্ত ব্যাঙ গিলে হাসপাতালে ৮২ বছরের চীনা নারী

চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের এক ৮২ বছর বয়সী নারী কোমর ব্যথা সারানোর আশায় লোকবিশ্বাসে ভর করে গিলে ফেলেছিলেন আটটি জীবন্ত ব্যাঙ। ফলাফল—তীব্র পেটব্যথা, ভয়াবহ সংক্রমণ, আর দুই সপ্তাহের হাসপাতাল যন্ত্রণা।


লোকবিশ্বাসে বিপজ্জনক চিকিৎসা

চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের ৮২ বছর বয়সী এক নারী সম্প্রতি অদ্ভুত এক কাণ্ড ঘটিয়েছেন—কোমর ব্যথা সারানোর আশায় তিনি গিলে ফেলেছেন আটটি জীবন্ত ব্যাঙ! স্থানীয় একটি লোকবিশ্বাস অনুসারে, জীবন্ত ব্যাঙ খেলে নাকি কোমরের ব্যথা ও স্নায়ুজনিত সমস্যা কমে যায়।


পরিবারের অজান্তে ব্যাঙ শিকার

নারীর পদবী ঝাং। তিনি পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে পরিবারের সদস্যদের দিয়ে ব্যাঙ ধরান, কিন্তু প্রকৃত কারণ গোপন রাখেন। পরিবারের সদস্যরা ছোট ছোট ব্যাঙ ধরলে (যেগুলোর আকার এক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের তালুর চেয়ে ছোট), ঝাং প্রথম দিন তিনটি এবং পরদিন আরও পাঁচটি ব্যাঙ জীবন্ত অবস্থায় গিলে ফেলেন।


তীব্র ব্যথা ও হাসপাতালে ভর্তি

ব্যাঙ গেলার পর অল্প সময়ের মধ্যেই ঝাং তীব্র পেট ব্যথায় আক্রান্ত হন। ব্যথা এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে তিনি হাঁটতেও অক্ষম হয়ে পড়েন। তার ছেলে পরে চিকিৎসককে জানান, “আমার মা আটটি জীবন্ত ব্যাঙ খেয়েছেন, এখন ব্যথায় হাঁটতে পারছেন না।”
চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পূর্ব চীনের হাংজৌ শহরের এক হাসপাতালে।


চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ

পরীক্ষা-নিরীক্ষায় চিকিৎসকরা জানান, জীবন্ত ব্যাঙ গেলার কারণে ঝাংয়ের পরিপাকতন্ত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শরীরে একাধিক পরজীবী সংক্রমণ ঘটেছে। তার শরীরে অক্সিফিল কোষের মাত্রা বেড়ে গেছে, যা সংক্রমণের ইঙ্গিত বহন করে।

চিকিৎসকেরা পরে নিশ্চিত হন যে তিনি “স্পারগানাম” নামের এক ধরনের পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন, যা সাধারণত ব্যাঙ বা সাপের শরীর থেকে মানবদেহে প্রবেশ করে।
একজন চিকিৎসক বলেন, “ব্যাঙ গেলার ফলে রোগীর পরিপাকতন্ত্র নষ্ট হয়েছে এবং শরীরে বিপজ্জনক পরজীবী প্রবেশ করেছে।”


দুই সপ্তাহের চিকিৎসায় আরোগ্য

দীর্ঘ দুই সপ্তাহের নিবিড় চিকিৎসা শেষে, ঝাং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

চিকিৎসকেরা সতর্ক করে বলেন, লোকজ বিশ্বাস বা কুসংস্কারভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি অত্যন্ত বিপজ্জনক, বিশেষত যখন তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়। এমন পদ্ধতি অনুসরণ করলে প্রাণঘাতী সংক্রমণ বা অঙ্গহানি ঘটতে পারে।


শিক্ষা ও সতর্কবার্তা

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, অজ্ঞতা ও লোকবিশ্বাসের কারণে কত বড় বিপদ ডেকে আনা সম্ভব। চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেন—শরীরের যে-কোনো ব্যথা বা জটিলতার ক্ষেত্রে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতির পরিবর্তে যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শই একমাত্র নিরাপদ পথ।


#চীন #ব্যাঙ #লোকবিশ্বাস #স্বাস্থ্যসতর্কতা #অদ্ভুতঘটনা #সারাক্ষণরিপোর্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

সৌদিতে বিরল তুষারপাতের পর প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কি আবার তুষারপাত সম্ভব?

কোমর ব্যথা সারাতে ৮টি জীবন্ত ব্যাঙ গিলে হাসপাতালে ৮২ বছরের চীনা নারী

০৫:১৫:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের এক ৮২ বছর বয়সী নারী কোমর ব্যথা সারানোর আশায় লোকবিশ্বাসে ভর করে গিলে ফেলেছিলেন আটটি জীবন্ত ব্যাঙ। ফলাফল—তীব্র পেটব্যথা, ভয়াবহ সংক্রমণ, আর দুই সপ্তাহের হাসপাতাল যন্ত্রণা।


লোকবিশ্বাসে বিপজ্জনক চিকিৎসা

চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের ৮২ বছর বয়সী এক নারী সম্প্রতি অদ্ভুত এক কাণ্ড ঘটিয়েছেন—কোমর ব্যথা সারানোর আশায় তিনি গিলে ফেলেছেন আটটি জীবন্ত ব্যাঙ! স্থানীয় একটি লোকবিশ্বাস অনুসারে, জীবন্ত ব্যাঙ খেলে নাকি কোমরের ব্যথা ও স্নায়ুজনিত সমস্যা কমে যায়।


পরিবারের অজান্তে ব্যাঙ শিকার

নারীর পদবী ঝাং। তিনি পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে পরিবারের সদস্যদের দিয়ে ব্যাঙ ধরান, কিন্তু প্রকৃত কারণ গোপন রাখেন। পরিবারের সদস্যরা ছোট ছোট ব্যাঙ ধরলে (যেগুলোর আকার এক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের তালুর চেয়ে ছোট), ঝাং প্রথম দিন তিনটি এবং পরদিন আরও পাঁচটি ব্যাঙ জীবন্ত অবস্থায় গিলে ফেলেন।


তীব্র ব্যথা ও হাসপাতালে ভর্তি

ব্যাঙ গেলার পর অল্প সময়ের মধ্যেই ঝাং তীব্র পেট ব্যথায় আক্রান্ত হন। ব্যথা এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে তিনি হাঁটতেও অক্ষম হয়ে পড়েন। তার ছেলে পরে চিকিৎসককে জানান, “আমার মা আটটি জীবন্ত ব্যাঙ খেয়েছেন, এখন ব্যথায় হাঁটতে পারছেন না।”
চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পূর্ব চীনের হাংজৌ শহরের এক হাসপাতালে।


চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণ

পরীক্ষা-নিরীক্ষায় চিকিৎসকরা জানান, জীবন্ত ব্যাঙ গেলার কারণে ঝাংয়ের পরিপাকতন্ত্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শরীরে একাধিক পরজীবী সংক্রমণ ঘটেছে। তার শরীরে অক্সিফিল কোষের মাত্রা বেড়ে গেছে, যা সংক্রমণের ইঙ্গিত বহন করে।

চিকিৎসকেরা পরে নিশ্চিত হন যে তিনি “স্পারগানাম” নামের এক ধরনের পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন, যা সাধারণত ব্যাঙ বা সাপের শরীর থেকে মানবদেহে প্রবেশ করে।
একজন চিকিৎসক বলেন, “ব্যাঙ গেলার ফলে রোগীর পরিপাকতন্ত্র নষ্ট হয়েছে এবং শরীরে বিপজ্জনক পরজীবী প্রবেশ করেছে।”


দুই সপ্তাহের চিকিৎসায় আরোগ্য

দীর্ঘ দুই সপ্তাহের নিবিড় চিকিৎসা শেষে, ঝাং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

চিকিৎসকেরা সতর্ক করে বলেন, লোকজ বিশ্বাস বা কুসংস্কারভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি অত্যন্ত বিপজ্জনক, বিশেষত যখন তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়। এমন পদ্ধতি অনুসরণ করলে প্রাণঘাতী সংক্রমণ বা অঙ্গহানি ঘটতে পারে।


শিক্ষা ও সতর্কবার্তা

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, অজ্ঞতা ও লোকবিশ্বাসের কারণে কত বড় বিপদ ডেকে আনা সম্ভব। চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেন—শরীরের যে-কোনো ব্যথা বা জটিলতার ক্ষেত্রে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতির পরিবর্তে যোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শই একমাত্র নিরাপদ পথ।


#চীন #ব্যাঙ #লোকবিশ্বাস #স্বাস্থ্যসতর্কতা #অদ্ভুতঘটনা #সারাক্ষণরিপোর্ট