০৫:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
এসএনএলের ওপেনিংয়ে অ্যামি পোহলার–টিনা ফে—দ্রুতগতির ব্যঙ্গ, ভাইরাল ক্লিপ রাজসাহীর ইতিহাস (পর্ব -৩৯) দক্ষিণ চীন সাগরে থিতুর কাছে ফিলিপাইনের জাহাজে জলকামান ও ধাক্কা—বেইজিংয়ের অস্বীকৃতি” ওসাকা এক্সপোতে ‘ই-মিথেন’ প্রচার—জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন মার্কিন সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী সুরক্ষায় শিথিলতার চাপ—ঝুঁকিতে তিমি-সিলে গোলাগুলির পর পাকিস্তান-আফগানিস্তান তোরখাম সীমান্ত বন্ধ “চীনের নিয়ন্ত্রণ সত্ত্বেও ‘বিকল্প আছে’—দুর্লভ খনিজে তাইওয়ানের স্বস্তি” “এসএনএল মঞ্চে রোল মডেলের সঙ্গে চার্লি এক্সসিএক্স—হাইপ ছড়াল ক্যামিও” “ওসাকা এক্সপো শেষের পথে: উত্তরাধিকার কী থাকছে জাপানের?” “জিওইঞ্জিনিয়ারিং কি জলবায়ু মোকাবিলার বিকল্প? ঝুঁকি–শাসন–পথচলা”

বিড়ালের সঙ্গেই বই পড়ার আনন্দ: লং বিচের নীরব পাঠসভা এখন শহরের জনপ্রিয়তম ইভেন্ট

বিড়ালের সঙ্গেই নীরব পাঠ

লং বিচের বাসিন্দা অ্যাশলি লিকিন্স ছিলেন রেবেকা ইয়ারোসের জনপ্রিয় ফ্যান্টাসি সিরিজ ‘অনিক্স স্টর্ম’–এর শেষ পৃষ্ঠাগুলোর দিকে এগোচ্ছিলেন, ঠিক তখনই একটি লম্বা লোমওয়ালা কালো বিড়াল এসে তার কোলে লাফিয়ে পড়ে। আশ্রয়কেন্দ্রের এই বিড়ালের নাম ‘সুপ এনহান্সমেন্টস’। সে থাকে ‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’-এ—লং বিচের ফোর্থ স্ট্রিট করিডরের এক কোণে অবস্থিত এক অভিনব দোকানে। দোকানটি যেমন বিড়াল-থিমের নানা পণ্য বিক্রি করে, তেমনি এটি স্থানীয় এনজিও ‘টিপডইয়ার্স’-এর আশ্রয় পাওয়া উদ্ধার বিড়ালদের জন্যও একটি অস্থায়ী ঘর।


পাঠসভা ও বিড়ালের মিলন

এই দোকানের পেছনের কোণে আছে বিলাসবহুল “ক্যাটিও”—যেখানে বিড়ালরা সময় কাটায়। প্রতি মাসে দুইবার দোকানটি আয়োজন করে বিশেষ তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠান, যার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো নীরব পাঠসভা। স্থানীয় পাঠচক্র এলবি বুকওয়ার্মস–এর সহ-আয়োজনে এই ইভেন্টটি এক ধরনের “ক্যাট ক্যাফে”–এর পরিবেশ তৈরি করে। প্রতিষ্ঠাতা মার্থা এসকিভিয়াস জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান প্রায় প্রতিমাসেই পুরোপুরি বিক্রি হয়ে যায়।

অ্যাশলি লিকিন্সও সেই পাঠসভায় অংশ নিয়েছিলেন। হাতে ছিল বই, কোলে ঘুমন্ত বিড়াল। কয়েকদিন আগেই সে ‘সুপ এনহান্সমেন্টস’–কে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, কিন্তু তখনও দ্বিধায় ছিল। তবে কোলে শান্তভাবে ঘুমিয়ে থাকা বিড়ালটিকে দেখে তার মনে হয়েছিল—এটাই তার সঙ্গী, “এটাই আমার বিড়াল।”


বিড়াল উদ্ধার থেকে সামাজিক উদ্যোগ

‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’–এর মালিক জেনা কার এবং তার স্বামী ম্যাট ২০২২ সালে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে লং বিচে চলে আসেন। তারা আগে রেস্তোরাঁ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, কিন্তু জেনা দীর্ঘদিন ধরেই বিড়াল উদ্ধার কার্যক্রমে আগ্রহী ছিলেন। তিনি ‘টিপডইয়ার্স’–এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কম্পটন এলাকায় পথবিড়াল ধরার ও নির্বীজন কর্মসূচিতে অংশ নেন। জেনার মতে, “বিড়াল অতিপ্রজননের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে ট্র্যাপ-নিউটার-রিটার্ন (TNR) উদ্যোগ, যা মূল সমস্যার শিকড়ে পৌঁছায়।”

একদিন আশ্রয়কেন্দ্রের কম কর্মী নিয়ে কাজ করতে গিয়ে জেনা দেখেন রাস্তায় অসুস্থ ও আহত বিড়ালের সংখ্যা কত বেশি। তখনই তার মনে প্রশ্ন জাগে—একজন উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি কীভাবে সাহায্য করতে পারেন? এর ফলেই প্রায় এক বছর পর জন্ম নেয় ‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’।


নীরব পাঠের রাত ও প্রাণবন্ত বিড়ালেরা

সেপ্টেম্বরের এক সন্ধ্যায় পাঠসভা শুরুর আগে দোকান সাজিয়ে নিচ্ছিলেন জেনা। কুশন বিছিয়ে দিলেন, ছোট খেলনা ছড়িয়ে দিলেন মেঝেতে। বিড়ালদের মধ্যে ‘পুলবয়’ নামের এক ডোমেস্টিক শর্টহেয়ার পাঠকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছিল। আগে সে ভীতু ছিল, কিন্তু এখন পাঠসভায় পাঠকদের কোলে উঠে বসে আত্মবিশ্বাসী। জেনা হাসতে হাসতে বলেন, “যখন লাজুক বিড়ালগুলো সামাজিক হয়ে ওঠে, তখনই আমি সবচেয়ে খুশি হই।”

দোকানের বাইরে ঝোলানো বোর্ডে লেখা—‘জুলাই ২০২৪ থেকে ৯৩টি দত্তক সম্পন্ন’। ‘টিপডইয়ার্স’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ভিটা মানজোলি জানিয়েছেন, এটি তাদের পূর্বের গড় সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ।


তহবিল ও জনসচেতনতা

‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’–এর সঙ্গে ‘টিপডইয়ার্স’-এর অংশীদারিত্ব শুধু আর্থিক সহায়তাই দেয়নি, মানুষকে শিক্ষিত করতেও ভূমিকা রাখছে। নীরব পাঠসভা ও “থার্ড থার্সডে ডুডল নাইট”–এর মতো ইভেন্ট থেকে সংগৃহীত অর্থ সরাসরি যায় বিড়াল উদ্ধার তহবিলে। একই সঙ্গে এখানে আসা মানুষরা জানছেন বিড়াল অতিপ্রজননের বাস্তবতা ও TNR-এর গুরুত্ব সম্পর্কে।


ভালোবাসা, সহানুভূতি ও নতুন জীবন

এই দোকানে আসা অনেকেই বিড়াল কিনতে বা দত্তক নিতে না এলেও কেবলমাত্র কিছুটা শান্তি ও আনন্দ খুঁজতে আসেন। যেমন, রেগান রুডম্যান, যিনি স্বাস্থ্যগত কারণে বিড়াল রাখতে পারেন না, কিন্তু প্রতি মাসেই এখানে আসেন। নীরব পাঠসভায় বই পড়ার পাশাপাশি তিনি আশা করেন, কোনো বিড়াল এসে হয়তো তার কোলে বসবে।

আরেকজন পাঠিকা লিয়েন গুয়েন, যিনি বিড়ালে অ্যালার্জি থাকা সত্ত্বেও বলেন, “যখনই কোনো বিড়াল কাছে আসে, আমি বই ফেলে দিই—ওরা আমার মন জয় করে নেয়।” তবে এই ইভেন্টে বিড়ালেরাই ঠিক করে কার কোলে যাবে। গুয়েন মজা করে বলেন, “যখন তারা চলে যায়, তখন মনে হয় যেন প্রত্যাখ্যানের থেরাপি চলছে।”


ভালোবাসার ঘরে ফেরার গল্প

অ্যাশলি লিকিন্সের গল্পও তেমনই এক আবেগঘন মুহূর্তের প্রতিফলন। পাঠসভায় ‘সুপ এনহান্সমেন্টস’ যখন নিজে থেকে এসে তার কোলে বসেছিল, তখনই সে বুঝেছিল—এটাই তার নিজের বিড়াল। পরে তার প্রেমিক ম্যাক্স মিনিয়ারও আরেকটি বিড়াল ‘হ্যান্ডিম্যান’-এর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। দুই বিড়ালই পরে তাদের বাড়িতে নতুন জীবনের সূচনা করে।

দত্তক নেওয়ার দিন ‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’ ও ‘টিপডইয়ার্স’-এর কর্মীরা তাদের প্রয়োজনীয় সব তথ্য, পরামর্শ ও ছাড় কুপন দেন। এমনকি যদি কোনো সমস্যা হয়, তারা বিড়াল ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাসও দেন।

অ্যাশলি বলেন, “তাদের এই দায়িত্ববোধই আমাকে আশ্বস্ত করেছে। তারা শুধু বিড়ালকে ঘর দিচ্ছে না, তারা নিশ্চিত করছে যেন প্রতিটি বিড়াল সত্যিকার অর্থেই নতুন জীবন পায়।”


‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’ আজ শুধু একটি দোকান নয়, এটি এক ধরনের সামাজিক আন্দোলন—যেখানে পাঠ, ভালোবাসা ও প্রাণবিক সহমর্মিতা একত্রে মিশে গেছে। এখানকার প্রতিটি বিড়াল একটি গল্প বহন করে, আর প্রতিটি পাঠসভা মানুষকে শেখায়—সহজ, নীরব ভালোবাসাও কত গভীর হতে পারে।


#বিড়ালপাঠ #কুলক্যাটকালেকটিভ #লংবিচ #নীরবপাঠসভা #বিড়ালউদ্ধার #সারাক্ষণরিপোর্ট #মানবিকগল্প #সামাজিকউদ্যোগ #পাঠওভালোবাসা #দত্তকপ্রেরণা

জনপ্রিয় সংবাদ

এসএনএলের ওপেনিংয়ে অ্যামি পোহলার–টিনা ফে—দ্রুতগতির ব্যঙ্গ, ভাইরাল ক্লিপ

বিড়ালের সঙ্গেই বই পড়ার আনন্দ: লং বিচের নীরব পাঠসভা এখন শহরের জনপ্রিয়তম ইভেন্ট

০১:০৮:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

বিড়ালের সঙ্গেই নীরব পাঠ

লং বিচের বাসিন্দা অ্যাশলি লিকিন্স ছিলেন রেবেকা ইয়ারোসের জনপ্রিয় ফ্যান্টাসি সিরিজ ‘অনিক্স স্টর্ম’–এর শেষ পৃষ্ঠাগুলোর দিকে এগোচ্ছিলেন, ঠিক তখনই একটি লম্বা লোমওয়ালা কালো বিড়াল এসে তার কোলে লাফিয়ে পড়ে। আশ্রয়কেন্দ্রের এই বিড়ালের নাম ‘সুপ এনহান্সমেন্টস’। সে থাকে ‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’-এ—লং বিচের ফোর্থ স্ট্রিট করিডরের এক কোণে অবস্থিত এক অভিনব দোকানে। দোকানটি যেমন বিড়াল-থিমের নানা পণ্য বিক্রি করে, তেমনি এটি স্থানীয় এনজিও ‘টিপডইয়ার্স’-এর আশ্রয় পাওয়া উদ্ধার বিড়ালদের জন্যও একটি অস্থায়ী ঘর।


পাঠসভা ও বিড়ালের মিলন

এই দোকানের পেছনের কোণে আছে বিলাসবহুল “ক্যাটিও”—যেখানে বিড়ালরা সময় কাটায়। প্রতি মাসে দুইবার দোকানটি আয়োজন করে বিশেষ তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠান, যার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো নীরব পাঠসভা। স্থানীয় পাঠচক্র এলবি বুকওয়ার্মস–এর সহ-আয়োজনে এই ইভেন্টটি এক ধরনের “ক্যাট ক্যাফে”–এর পরিবেশ তৈরি করে। প্রতিষ্ঠাতা মার্থা এসকিভিয়াস জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান প্রায় প্রতিমাসেই পুরোপুরি বিক্রি হয়ে যায়।

অ্যাশলি লিকিন্সও সেই পাঠসভায় অংশ নিয়েছিলেন। হাতে ছিল বই, কোলে ঘুমন্ত বিড়াল। কয়েকদিন আগেই সে ‘সুপ এনহান্সমেন্টস’–কে দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, কিন্তু তখনও দ্বিধায় ছিল। তবে কোলে শান্তভাবে ঘুমিয়ে থাকা বিড়ালটিকে দেখে তার মনে হয়েছিল—এটাই তার সঙ্গী, “এটাই আমার বিড়াল।”


বিড়াল উদ্ধার থেকে সামাজিক উদ্যোগ

‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’–এর মালিক জেনা কার এবং তার স্বামী ম্যাট ২০২২ সালে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে লং বিচে চলে আসেন। তারা আগে রেস্তোরাঁ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, কিন্তু জেনা দীর্ঘদিন ধরেই বিড়াল উদ্ধার কার্যক্রমে আগ্রহী ছিলেন। তিনি ‘টিপডইয়ার্স’–এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কম্পটন এলাকায় পথবিড়াল ধরার ও নির্বীজন কর্মসূচিতে অংশ নেন। জেনার মতে, “বিড়াল অতিপ্রজননের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে ট্র্যাপ-নিউটার-রিটার্ন (TNR) উদ্যোগ, যা মূল সমস্যার শিকড়ে পৌঁছায়।”

একদিন আশ্রয়কেন্দ্রের কম কর্মী নিয়ে কাজ করতে গিয়ে জেনা দেখেন রাস্তায় অসুস্থ ও আহত বিড়ালের সংখ্যা কত বেশি। তখনই তার মনে প্রশ্ন জাগে—একজন উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি কীভাবে সাহায্য করতে পারেন? এর ফলেই প্রায় এক বছর পর জন্ম নেয় ‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’।


নীরব পাঠের রাত ও প্রাণবন্ত বিড়ালেরা

সেপ্টেম্বরের এক সন্ধ্যায় পাঠসভা শুরুর আগে দোকান সাজিয়ে নিচ্ছিলেন জেনা। কুশন বিছিয়ে দিলেন, ছোট খেলনা ছড়িয়ে দিলেন মেঝেতে। বিড়ালদের মধ্যে ‘পুলবয়’ নামের এক ডোমেস্টিক শর্টহেয়ার পাঠকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছিল। আগে সে ভীতু ছিল, কিন্তু এখন পাঠসভায় পাঠকদের কোলে উঠে বসে আত্মবিশ্বাসী। জেনা হাসতে হাসতে বলেন, “যখন লাজুক বিড়ালগুলো সামাজিক হয়ে ওঠে, তখনই আমি সবচেয়ে খুশি হই।”

দোকানের বাইরে ঝোলানো বোর্ডে লেখা—‘জুলাই ২০২৪ থেকে ৯৩টি দত্তক সম্পন্ন’। ‘টিপডইয়ার্স’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ভিটা মানজোলি জানিয়েছেন, এটি তাদের পূর্বের গড় সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ।


তহবিল ও জনসচেতনতা

‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’–এর সঙ্গে ‘টিপডইয়ার্স’-এর অংশীদারিত্ব শুধু আর্থিক সহায়তাই দেয়নি, মানুষকে শিক্ষিত করতেও ভূমিকা রাখছে। নীরব পাঠসভা ও “থার্ড থার্সডে ডুডল নাইট”–এর মতো ইভেন্ট থেকে সংগৃহীত অর্থ সরাসরি যায় বিড়াল উদ্ধার তহবিলে। একই সঙ্গে এখানে আসা মানুষরা জানছেন বিড়াল অতিপ্রজননের বাস্তবতা ও TNR-এর গুরুত্ব সম্পর্কে।


ভালোবাসা, সহানুভূতি ও নতুন জীবন

এই দোকানে আসা অনেকেই বিড়াল কিনতে বা দত্তক নিতে না এলেও কেবলমাত্র কিছুটা শান্তি ও আনন্দ খুঁজতে আসেন। যেমন, রেগান রুডম্যান, যিনি স্বাস্থ্যগত কারণে বিড়াল রাখতে পারেন না, কিন্তু প্রতি মাসেই এখানে আসেন। নীরব পাঠসভায় বই পড়ার পাশাপাশি তিনি আশা করেন, কোনো বিড়াল এসে হয়তো তার কোলে বসবে।

আরেকজন পাঠিকা লিয়েন গুয়েন, যিনি বিড়ালে অ্যালার্জি থাকা সত্ত্বেও বলেন, “যখনই কোনো বিড়াল কাছে আসে, আমি বই ফেলে দিই—ওরা আমার মন জয় করে নেয়।” তবে এই ইভেন্টে বিড়ালেরাই ঠিক করে কার কোলে যাবে। গুয়েন মজা করে বলেন, “যখন তারা চলে যায়, তখন মনে হয় যেন প্রত্যাখ্যানের থেরাপি চলছে।”


ভালোবাসার ঘরে ফেরার গল্প

অ্যাশলি লিকিন্সের গল্পও তেমনই এক আবেগঘন মুহূর্তের প্রতিফলন। পাঠসভায় ‘সুপ এনহান্সমেন্টস’ যখন নিজে থেকে এসে তার কোলে বসেছিল, তখনই সে বুঝেছিল—এটাই তার নিজের বিড়াল। পরে তার প্রেমিক ম্যাক্স মিনিয়ারও আরেকটি বিড়াল ‘হ্যান্ডিম্যান’-এর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। দুই বিড়ালই পরে তাদের বাড়িতে নতুন জীবনের সূচনা করে।

দত্তক নেওয়ার দিন ‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’ ও ‘টিপডইয়ার্স’-এর কর্মীরা তাদের প্রয়োজনীয় সব তথ্য, পরামর্শ ও ছাড় কুপন দেন। এমনকি যদি কোনো সমস্যা হয়, তারা বিড়াল ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাসও দেন।

অ্যাশলি বলেন, “তাদের এই দায়িত্ববোধই আমাকে আশ্বস্ত করেছে। তারা শুধু বিড়ালকে ঘর দিচ্ছে না, তারা নিশ্চিত করছে যেন প্রতিটি বিড়াল সত্যিকার অর্থেই নতুন জীবন পায়।”


‘কুল ক্যাট কালেকটিভ’ আজ শুধু একটি দোকান নয়, এটি এক ধরনের সামাজিক আন্দোলন—যেখানে পাঠ, ভালোবাসা ও প্রাণবিক সহমর্মিতা একত্রে মিশে গেছে। এখানকার প্রতিটি বিড়াল একটি গল্প বহন করে, আর প্রতিটি পাঠসভা মানুষকে শেখায়—সহজ, নীরব ভালোবাসাও কত গভীর হতে পারে।


#বিড়ালপাঠ #কুলক্যাটকালেকটিভ #লংবিচ #নীরবপাঠসভা #বিড়ালউদ্ধার #সারাক্ষণরিপোর্ট #মানবিকগল্প #সামাজিকউদ্যোগ #পাঠওভালোবাসা #দত্তকপ্রেরণা