রপ্তানি ও আমদানি অবস্থা
- সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ চীনের ডলার মূল্যে রপ্তানি বছরের ভিত্তিতে বৃদ্ধি পেয়েছে ৮.৩ শতাংশ — যা অর্থনীতিবিদদের ৬.০ শতাংশ অনুমানকে ছাপিয়ে গিয়েছে।
- একই সময়ে চীনের আমদানি বেড়েছে ৭.৪ শতাংশ, যা আগ্রাসনমূলক প্রবণতা ও স্টক সংরক্ষণের চাহিদাকে নির্দেশ করে।
- তবে বাণিজ্য ঘাটতি কমে হয়েছে ৯০.৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, আগের মাসের ১০২.৩৩ বিলিয়ন থেকে।
মার্কেট ডাইভার্সিফিকেশন ও বাজার রূপান্তর
- চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে রপ্তানির নির্ভরতা কমিয়ে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের দিকে রপ্তানি বাড়াচ্ছে।
- সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে রপ্তানি বছর ভিত্তিতে ২৭ শতাংশ কমেছে।
- অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার বাজারে রপ্তানি যথাক্রমে ১৪%, ১৫.৬% ও ৫৬.৪% বৃদ্ধি পেয়েছে।
অভ্যন্তরীণ চাহিদা ও কোম্পানির চ্যালেঞ্জ
- গৃহভিত্তিক চাহিদা এখনও নিম্নমুখী, ফলে অনেক উৎপাদক বিদেশি ক্রেতা আকৃষ্ট করতে মূল্যের প্রতিযোগিতা চালাচ্ছে। স্টিল, কয়লা ও সয়াবিন আমদানি বাড়িয়ে চীন কাঁচামালের সংগ্রহ কমায়নি; এই চাহিদা বৃদ্ধিতে মজুদ বাড়ানোর প্রবণতা কাজ করেছে।
- স্টিল আমদানি ও খনিজ তেলের চাহিদা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
নতুন আমেরিকা–চীন বিবাদ ও ঝুঁকি
- চীন সম্প্রতি বিরল পৃথিবীর উপাদান (rare earth) রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ কঠোর করেছে, যা আমেরিকার বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপের কারণ হয়েছে।
- যুক্তরাষ্ট্র ১০০% শুল্ক পুনর্মূল্যায়নের হুমকি দিচ্ছে, যা চীনের রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান ও নিম্ন-আয় কারখানাগুলোর ওপর চাপে ফেলতে পারে।
- বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের অর্থনীতি আরও গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যদি বিবাদ অগ্রসর হয়।
- উদ্বেগের বিষয় হলো, এই উত্তেজনা আগামী কয়েক সপ্তাহে বাণিজ্য আলোচনায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ
- যদিও রপ্তানি ও আমদানি উভয়ই শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে, তবুও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো নতুন বিবাদ — বিশেষ করে প্রযুক্তি ও উপাদান রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে — বড় ধাক্কা হতে পারে।চীনের বাণিজ্যভিত্তিক অর্থনীতি যদি গৃহভিত্তিক চাহিদা পুনরুদ্ধারে ব্যর্থ হয়, তাহলে এই বিদেশি বাজারনির্ভরতা দীর্ঘমেয়াদে বিপজ্জনক হতে পারে।
- রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারীরা একটি “নতুন স্বাভাবিক” মানতে শুরু করেছে, যেখানে উত্তেজনা, সমঝোতা ও আপোষের চক্র চলমান থাকবে।
উপরোক্ত বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যায়, চীন আপাতত কিছুটা প্রতিরোধশীল অবস্থায় থাকলেও, সামনে বাণিজ্যক্ষেত্রে বড় ধরণের ঝড় অপেক্ষা করছে। বৈশ্বিক এই হানাহানির মধ্যে কতটা কৌশলী ও ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাই নির্ধারণ করবে চীনের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ।