১২:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
ক্লেবার মেনডোনসা ফিলহোর ‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’: একটি মজাদার রাজনৈতিক থ্রিলার কষ্ট না হলে বিশ্বাস জন্মায় না: এক্রিভিয়া প্রতিষ্ঠাতা রেক্সহেপ রেক্সহেপির পথচলার গল্প ইউক্রেনজুড়ে রুশ ড্রোন–মিসাইলের নজিরবিহীন হামলা স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের সঙ্গে অসদাচরণের জেরে এমএমসিএইচ চিকিৎসক সাময়িক বরখাস্ত ট্রাম্প প্রশাসনের নিরাপত্তা কৌশল এশিয়ায় চীনের প্রভাব ঠেকাতে কঠোর অবস্থান  মৈত্রী দিবসে প্রণয় ভার্মা ‘সাবসিডিতে হবে না’—চিনি শিল্পে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ চাই: উপদেষ্টা আদিলুর  মানিকগঞ্জে কালিগঙ্গা নদীতে দুই শিশুর মৃত্যু যাত্রাবাড়ীতে বিদেশি পিস্তলসহ দুই যুবক গ্রেপ্তার পরস্পরনির্ভরতা ও পারস্পরিক সুফলই এগিয়ে নেবে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক: প্রণয় ভার্মা

বাজারে উদ্বৃত্ত সরবরাহ ও যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনায় তেলের দামে পতন

বৈশ্বিক বাজারে পতনের ধারা অব্যাহত

বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম আবারও কমেছে। আগের দিনের ক্ষতির ধারাবাহিকতায় এই পতন ঘটেছে। বিনিয়োগকারীরা আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (IEA) সতর্কবার্তা বিবেচনায় নিচ্ছেন, যেখানে বলা হয়েছে ২০২৬ সালে বাজারে সরবরাহ উদ্বৃত্ত তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে নবায়িত বাণিজ্য উত্তেজনাও তেলের চাহিদা কমিয়ে দিতে পারে।

ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯ সেন্ট বা ০.১৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬২.৩০ ডলারে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) তেলের দাম ৩ সেন্ট বা ০.০৫ শতাংশ কমে হয়েছে ৫৮.৬৭ ডলার।

উভয় সূচকই গত সেশনে পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে বন্ধ হয়েছিল।

OPEC - Wikipedia

সরবরাহ উদ্বৃত্তের পূর্বাভাস

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা মঙ্গলবার জানায়, আগামী বছর বাজারে প্রতিদিন প্রায় ৪ মিলিয়ন ব্যারেল অতিরিক্ত তেল সরবরাহের ঝুঁকি রয়েছে—যা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি। ওপেক প্লাস (OPEC+) দেশগুলো ও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা উৎপাদন বাড়াচ্ছে, অথচ বৈশ্বিক চাহিদা এখনো দুর্বল রয়ে গেছে।

এলএসইজি’র জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক এমরিল জামিল বলেন, “বাজার এখন মূলত অতিরিক্ত সরবরাহের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। পাশাপাশি ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি হ্রাস ও বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধিও দামের ওপর নতুন চাপ তৈরি করছে।”

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার প্রভাব

বিশ্বের দুটি বৃহত্তম তেলভোক্তা দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে নতুন করে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে উভয় দেশ একে অপরের পণ্যবাহী জাহাজে অতিরিক্ত বন্দর ফি আরোপ করেছে। এতে পরিবহন খরচ বাড়বে এবং বাণিজ্য প্রবাহ ব্যাহত হবে—যা বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনবিরোধী চুক্তি করলে ব্যবস্থা : বেইজিং

আইজি’র বাজার বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, “সাম্প্রতিক এই উত্তেজনাই এখন বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য প্রধান ঝুঁকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে।”

চীন সম্প্রতি বিরল খনিজ রপ্তানিতে নতুন নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করেছে, অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১ নভেম্বর থেকে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর এবং সফটওয়্যার রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দিয়েছেন।

বাজারের নজর এখন তেলের মজুদের দিকে

হাইটং ফিউচার্স-এর বিশ্লেষক ইয়াং আন বলেন, “তেলের দামের ভবিষ্যৎ এখন মূলত নির্ভর করছে কতটা সরবরাহ উদ্বৃত্ত তৈরি হচ্ছে এবং বৈশ্বিক মজুদ কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে তার ওপর।”

Oil edges up as US-China de-escalate trade tensions - The Economic Times

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে সাপ্তাহিক তেল মজুদের তথ্যের দিকেও ব্যবসায়ীরা নজর রাখছেন। রয়টার্সের একটি প্রাথমিক জরিপে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত তেলের মজুদ প্রায় ২ লাখ ব্যারেল বেড়েছে। তবে গ্যাসোলিন ও ডিজেলজাত পণ্যের মজুদ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪:৩০ (২০৩০ জিএমটি) এ আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট (API) তাদের সাপ্তাহিক রিপোর্ট প্রকাশ করবে। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ১০:৩০ (১৪৩০ জিএমটি) এ মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসন (EIA) তাদের আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করবে।

উল্লেখ্য, কলম্বাস ডে/ইন্ডিজিনাস পিপলস ডে উপলক্ষে সোমবার সরকারি ছুটি থাকায় উভয় রিপোর্ট এক দিন পিছিয়ে প্রকাশ করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র-চীনের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য বিরোধ, বৈশ্বিক উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দুর্বল চাহিদা—এই তিনটি উপাদানই মিলিতভাবে তেলের দামে নতুন নিম্নমুখী চাপ সৃষ্টি করছে। বাজারের দৃষ্টি এখন থাকবে উৎপাদন সীমিতকরণে ও সম্ভাব্য নতুন বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তে, যা ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণ করবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ক্লেবার মেনডোনসা ফিলহোর ‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’: একটি মজাদার রাজনৈতিক থ্রিলার

বাজারে উদ্বৃত্ত সরবরাহ ও যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনায় তেলের দামে পতন

০৪:১৮:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

বৈশ্বিক বাজারে পতনের ধারা অব্যাহত

বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম আবারও কমেছে। আগের দিনের ক্ষতির ধারাবাহিকতায় এই পতন ঘটেছে। বিনিয়োগকারীরা আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (IEA) সতর্কবার্তা বিবেচনায় নিচ্ছেন, যেখানে বলা হয়েছে ২০২৬ সালে বাজারে সরবরাহ উদ্বৃত্ত তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে নবায়িত বাণিজ্য উত্তেজনাও তেলের চাহিদা কমিয়ে দিতে পারে।

ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯ সেন্ট বা ০.১৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬২.৩০ ডলারে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) তেলের দাম ৩ সেন্ট বা ০.০৫ শতাংশ কমে হয়েছে ৫৮.৬৭ ডলার।

উভয় সূচকই গত সেশনে পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে বন্ধ হয়েছিল।

OPEC - Wikipedia

সরবরাহ উদ্বৃত্তের পূর্বাভাস

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা মঙ্গলবার জানায়, আগামী বছর বাজারে প্রতিদিন প্রায় ৪ মিলিয়ন ব্যারেল অতিরিক্ত তেল সরবরাহের ঝুঁকি রয়েছে—যা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি। ওপেক প্লাস (OPEC+) দেশগুলো ও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা উৎপাদন বাড়াচ্ছে, অথচ বৈশ্বিক চাহিদা এখনো দুর্বল রয়ে গেছে।

এলএসইজি’র জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক এমরিল জামিল বলেন, “বাজার এখন মূলত অতিরিক্ত সরবরাহের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। পাশাপাশি ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি হ্রাস ও বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধিও দামের ওপর নতুন চাপ তৈরি করছে।”

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনার প্রভাব

বিশ্বের দুটি বৃহত্তম তেলভোক্তা দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে নতুন করে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে উভয় দেশ একে অপরের পণ্যবাহী জাহাজে অতিরিক্ত বন্দর ফি আরোপ করেছে। এতে পরিবহন খরচ বাড়বে এবং বাণিজ্য প্রবাহ ব্যাহত হবে—যা বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনবিরোধী চুক্তি করলে ব্যবস্থা : বেইজিং

আইজি’র বাজার বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, “সাম্প্রতিক এই উত্তেজনাই এখন বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য প্রধান ঝুঁকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে।”

চীন সম্প্রতি বিরল খনিজ রপ্তানিতে নতুন নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করেছে, অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১ নভেম্বর থেকে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর এবং সফটওয়্যার রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দিয়েছেন।

বাজারের নজর এখন তেলের মজুদের দিকে

হাইটং ফিউচার্স-এর বিশ্লেষক ইয়াং আন বলেন, “তেলের দামের ভবিষ্যৎ এখন মূলত নির্ভর করছে কতটা সরবরাহ উদ্বৃত্ত তৈরি হচ্ছে এবং বৈশ্বিক মজুদ কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে তার ওপর।”

Oil edges up as US-China de-escalate trade tensions - The Economic Times

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে সাপ্তাহিক তেল মজুদের তথ্যের দিকেও ব্যবসায়ীরা নজর রাখছেন। রয়টার্সের একটি প্রাথমিক জরিপে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত তেলের মজুদ প্রায় ২ লাখ ব্যারেল বেড়েছে। তবে গ্যাসোলিন ও ডিজেলজাত পণ্যের মজুদ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪:৩০ (২০৩০ জিএমটি) এ আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট (API) তাদের সাপ্তাহিক রিপোর্ট প্রকাশ করবে। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল ১০:৩০ (১৪৩০ জিএমটি) এ মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসন (EIA) তাদের আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করবে।

উল্লেখ্য, কলম্বাস ডে/ইন্ডিজিনাস পিপলস ডে উপলক্ষে সোমবার সরকারি ছুটি থাকায় উভয় রিপোর্ট এক দিন পিছিয়ে প্রকাশ করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র-চীনের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য বিরোধ, বৈশ্বিক উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দুর্বল চাহিদা—এই তিনটি উপাদানই মিলিতভাবে তেলের দামে নতুন নিম্নমুখী চাপ সৃষ্টি করছে। বাজারের দৃষ্টি এখন থাকবে উৎপাদন সীমিতকরণে ও সম্ভাব্য নতুন বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তে, যা ভবিষ্যতের দিক নির্ধারণ করবে।