পশ্চিমা ফ্যাশন মঞ্চের ঐতিহ্যে গতবারের রাতটা অন্যরকম ছিল—কিম্বা, মঞ্চটাই যেন পুরোপুরি কেবল এক দলই দখল করে নেওয়ার মতো। জাদুকরী আলো, আকাশচ্ছোঁয়া কোরিওগ্রাফি আর আড়ম্বরপূর্ণ কস্টিউমে সাজে TWICE স্টেপ করল ভিক্টোরিয়ার সিক্রেট ফ্যাশন শোর কেন্দ্রবিন্দুতে; একটি বৈশ্বিক মুহূর্ত তৈরি করল যা কেবল গানের নয়, ভিজ্যুয়াল এবং সাংস্কৃতিক বিবেচনাতেও নতুন সংজ্ঞা যোগ করল।
শো’টি শুরু হওয়া মাত্রই দর্শকসামূদায়্ত কণ্ঠস্বর ও ক্যামেরার লেন্সগুলোর রোদের মতো ঝলমলে আলোর মধ্যে তাদের আত্মবিশ্বাসী পদচারণা। টিমের প্রতিটি মুভমেন্ট একে-অপরকে পরিপূরক করে, পপ বিটের সঙ্গে মিলেমিশে তৈরি করে একটি সুগঠিত ভিজ্যুয়াল স্টোরিটেলিং। প্যাস্টেল টোনের কস্টিউমে এগুলোর ডিজাইন ছিল একদিকে নরম আর নান্দনিক আর অন্যদিকে অ্যাথলেটিক ও শক্তিশালী — এই দুই স্বরূপকে মিলিয়ে দর্শনকে এক নতুন রূপ দিলেন তারা। বিশেষত কোরিওগ্রাফির সূক্ষ্মতা এবং সিঙ্ক্রোনাইজড ফিগারেশনে দেখা গেল দীর্ঘদিনের প্রশিক্ষণের ছাপ।
শো’র সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তের পুনরাবৃত্তি শুরু হয়ে গেলো; ফ্যানফোরা থেকে ফ্যাশন-ক্রিটিক—প্রতিটি কোণ থেকে প্রশংসা ছুটে এলো। Theqoo, Pann এবং টুইটারের ট্রেন্ডিং ট্যাগে ভরা ছিল প্রশংসাসূচক মন্তব্যে: “TWICE পুরো শো জিতে নিল” বা “এভাবে কপোলকপে ফ্যাশন আর পপ মিউজিককে এক করে দেখানো হয়নি” — এমন রেসপন্স চোখে পড়েছে। ভিক্টোরিয়ার সিক্রেটের নির্মাতারা বলছিলেন, এটি ব্র্যান্ডের নতুন দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিফলিত করে — বহুমাত্রিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যের প্রতি তাদের অঙ্গীকার।
এই মুহূর্তটি শুধুই বিনোদন বা সেলিব্রিটা পারফরম্যান্স ছিল না; এটি ছিল একটি সাংস্কৃতিক বার্তা—কিভাবে এশীয় কনটেন্ট আর ক-পপ আর্কিটেকচার বিশ্বব্যাপী ফ্যাশন ইকোসিস্টেমকে প্রভাবিত করতে পারে। আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলোও আগ্রহের সাথে বিশ্লেষণ করেছে কিভাবে ভিজ্যুয়াল স্টোরিটেলিং, ব্র্যান্ড কনসেপ্ট আর কনসার্টির এনাটমিকে একসাথে মিলিয়ে নতুন ধরনের শো-এক্সপেরিয়েন্স তৈরি করা সম্ভব।
টেকনিক্যালি, গানের সিলেকশন থেকে শুরু করে মঞ্চের লাইটিং, লাইভ সিংগিং ও ব্যাকিং ট্র্যাকের মিশ্রণের মধ্যে নিখুঁত সমন্বয় ছিল—এই সমন্বয় আগ্রহী দর্শককে অবাক করে দেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মিডিয়া কভারেজও বাড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয় ভক্তরা বলছেন, “এটা আমাদের গর্ব”—কারণ এমন মঞ্চে ক-পপ দলের উপস্থিতি, বিশেষ করে একটি মেয়েরা সমন্বিত গ্রুপ হিসেবে, পূর্বের ধারনাকে ভেঙে দিয়েছে এবং নতুন সুযোগের দরজা উন্মুক্ত করেছে।
ফ্যাশন-ইন্ডাস্ট্রির অভ্যন্তরে এই পারফরম্যান্সটি কেবল ব্র্যান্ড উইথ ইনভেশন নয়, বরং বৈচিত্র্য, অন্তর্ভুক্তি ও গ্লোবাল কল্যাণের প্রতীক হিসেবেও দেখা হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক-পপ শিল্পের গ্লোবালাইজেশনের সঙ্গে ফ্যাশন-শোগুলোর সংহতি বেড়েই চলেছে; TWICE-এর এই র্যানে স্টেজে ওঠা সেই প্রবণতাকেই এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেল।
শেষবারে বলতে হয়, তারা কেবল গানই করেনি; একটি দৃশ্য উপস্থাপন করেছেন যা নির্দিষ্ট ফ্যাশন শোকে টপকে গ্লোবাল কালচারাল সংলাপের অংশ হয়ে উঠেছে। এই রাতের পর থেকে, 2025-এর ফ্যাশন ও মিউজিক ক্যালেন্ডারে TWICE-এর নামটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে স্থায়ী হবে—যেখানে সঙ্গীত, নান্দিকতা ও ভিশ্যুয়াল আর্ট একে-অপরকে শক্তিশালী করেছে এবং গ্লোবাল মঞ্চে একটি নতুন ধারার সূচনা করেছে।