০৪:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
এক দিনে দুই প্রিয়জনের জন্মদিন—মা ও মেয়েকে শুভেচ্ছা জানালেন কাভ্যা মাধবন কৃষকবান্ধব গম নীতি ঘোষণা, প্রতি মণ ৩,৫০০ রুপি ক্রয়মূল্য নির্ধারণ গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিক মারধর — বিএনপি নেতার ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্নের ঝড় পাঁচ মামলায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ধানের শীষ,নৌকা, লাঙ্গল বা দাঁড়িপাল্লা যেভাবে রাজনৈতিক দলের প্রতীক হয়ে উঠলো চীনা ইন্টারনেট জায়ান্টদের স্টেবলকয়েন পরিকল্পনা স্থগিত—নীতি অনিশ্চয়তায় ঘোঁচা হামাসের হস্তান্তর করা মরদেহের একটি রোনেন এঙ্গেল—ইসরায়েলের নিশ্চিতকরণ তানজিম সাইয়ারা তটিনী: বরিশাল থেকে ঢাকায় আলোয় ভরা অভিনয় যাত্রা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা উচিত: বরকত উল্লাহ বুলু কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে লালমনিরহাটের গ্রাম—হেমন্তের আগমনী বার্তা

হংকংয়ে রানওয়ে থেকে সমুদ্রে ছিটকে পড়লো কার্গো বিমান

হংকং বিমানবন্দরে একটি কার্গো বিমান রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে সরাসরি সমুদ্রে পড়েছে। এ ঘটনায় বিমানবন্দরের দুইজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছেন।

দেশটির দমকল বাহিনী জানিয়েছে, ঘটনার দুই মিনিটের মধ্যে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। উদ্ধারকারীরা বলছেন, বিমানটি দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে এবং এর একটি খণ্ড সমুদ্রের পানিতে ভাসছিলো।

এমিরেটস ফ্লাইট ইকে ৯৭৮৮, বোয়িং ৭৪৭-৪৮১ মডেলের এ বিমানটি দুবাই থেকে হংকংয়ে এসেছিলো। এটি তুরস্কের কার্গো এয়ারলাইন এয়ার এসিটির মালিকানাধীন।

বিমানটিতে থাকা চারজন ক্রুর সবাই বেঁচে আছেন। উদ্ধারের আগে তারা দরজা ভেঙ্গে বেরিয়ে এসেছিলেন। এরপর উদ্ধার কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় সেখানকার আবহাওয়া ভালো ছিলো এবং এ ঘটনার কারণে অন্য কোন ফ্লাইট ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

প্রায় তিন দশক আগে ১৯৯৮ সালে হংকং বিমানবন্দর চালু হওয়ার পর এটি এ ধরনের দ্বিতীয় মারাত্মক দুর্ঘটনা।

এমিরেটস বিবিসিকে দেয়া এক বিবৃতিতে অবতরণের সময় বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।

আজকের ঘটনার পর পরিস্থিতি মোকাবেলায় হংকং বিমানবন্দরে ২১৩ জন দমকল কর্মী ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা কর্মকর্তাদের মোতায়েন করা হয়েছে।

বিমানটি সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

বোয়িং ৭৪৭-৪৮১ মডেলের এই বিমানটি মূলত যাত্রীবাহী বিমান ছিলো। পরে এটিকে মালবাহী বিমানে রূপান্তর করা হয়।

এয়ারক্রাফট ট্র্যাকিং সাইট এয়ারফ্লিটসের মতে, ত্রিশ বছরের বেশি পুরনো এই বিমানটির যাত্রা শুরু হয়েছিলো ১৯৯৩ সালে।

এয়ারফ্লিটসের তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্স এই বিমানটি ব্যবহার করেছে।

এর মধ্যে আছে জাপানের অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ এবং সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স (সৌদিয়া)।

সোমবার এটি পরিচালনা করা হচ্ছিলো এমিরেটস স্কাইকার্গো ইকে ৯৭৮৮ ফ্লাইট হিসেবে।

রবিবার দুবাই থেকে রওনা দিয়ে হংকংয়ের স্থানীয় সময় রাত তিনটা ৫০ মিনিটে এটি হংকং ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে এটি অবতরণ করে।

আরেকটি ফ্লাইট ট্র্যাকিং প্লাটফর্ম ফ্লাইটরাডার ২৪ জানিয়েছে, এ ধরনের আরেকটি বোয়িং এয়ার এসিটির কাছে আছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে রানওয়ে নিরাপদ ছিলো

হংকং বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক স্টিভেন ইয়ু বলেছেন, অবতরণের পর বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে পাশের বেষ্টনীতে গিয়ে আঘাত করে।

“দুঃখজনকভাবে এ সময় সেখানে একটি এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি পেট্রল কার ছিলো। বিমানটির সাথে সেই পেট্রল কারের সংঘর্ষ হয়। বিমানের ধাক্কায় পেট্রল কারটিও সমুদ্রে গিয়ে পড়ে,” ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলছিলেন তিনি।

দুর্ঘটনায় যে দুইজন গ্রাউন্ড স্টাফ মারা গেছেন তাদের একজন সাত বছর, অন্যজন ১২ বছরের কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন।

মি. ইয়ু আরও জানিয়েছেন যে, অবতরণের সময় বিমানটি কোনও বিপদ সংকেত পাঠায়নি।

“বিমান পরিচালনার জন্য যেমন থাকা দরকার তার সব শর্তই সেখানে বিদ্যমান ছিলো। এই বিমানবন্দরের নর্থ রানওয়েতে দুর্ঘটনাটি হয়েছে।

তবে সাউথ ও সেন্ট্রাল রানওয়ের কার্যক্রম যথারীতি চালু আছে,” বলছিলেন স্টিভেন ইয়ু।

ব্ল্যাক বক্স এখনো পাওয়া যায়নি

হংকং এয়ার এক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন অথরিটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা সমুদ্র থেকে ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। এগুলোই ব্ল্যাক বক্স হিসেবে পরিচিত।

“কখন ব্ল্যাক বক্স পাওয়া যাবে তার ওপরেই তদন্তের গতি নির্ভর করবে,” বলেছেন তিনি।

ওদিকে স্টিভেন ইয়ু জানিয়েছেন, সমুদ্র থেকে বিমানটির ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হচ্ছে।

“এয়ারলাইন এবং বিমানটির মালিক পক্ষের সাথে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। তারা দ্রুত হংকং আসছেন। তারা আসা মাত্রই আমরা এ বিষয়ে কাজ শুরু করবো,” বলেছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয়েছিলো যে, বিমানটি অবতরণের পর ভুল ডিরেকশনে যাচ্ছিলো কী-না।

জবাবে মি. ইয়ু বলেন, “স্বাভাবিকভাবে বিমানটি সাগরের দিকে ঘুরে যাওয়ার কথা নয়। কোন ডিরেকশনে যেতে হবে সেটা গাইড করা হয়েছিলো। কিন্তু এটা নরমাল রুট (যেদিকে বিমানটি গেছে) ছিলো না”।

ওদিকে হংকং সরকার জানিয়েছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় সময় রাত তিনটা ৫০ মিনিটে। ভোর শুরুর এ সময়টায় কার্গো ফ্লাইট চলাচলের কারণে বিমানবন্দর খুব ব্যস্ত থাকে।

হংকং থেকে বিবিসি নিউজ চাইনিজের মার্টিন ইপ জানিয়েছেন, হংকং ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্গো হাব আছে।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এই কার্গো হাব ব্যবহার করা হয়েছে চার লাখ ২৯ হাজার টন মালামাল পরিবহনের কাজে।

BBC News বাংলা

জনপ্রিয় সংবাদ

এক দিনে দুই প্রিয়জনের জন্মদিন—মা ও মেয়েকে শুভেচ্ছা জানালেন কাভ্যা মাধবন

হংকংয়ে রানওয়ে থেকে সমুদ্রে ছিটকে পড়লো কার্গো বিমান

১২:২৫:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫

হংকং বিমানবন্দরে একটি কার্গো বিমান রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে সরাসরি সমুদ্রে পড়েছে। এ ঘটনায় বিমানবন্দরের দুইজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছেন।

দেশটির দমকল বাহিনী জানিয়েছে, ঘটনার দুই মিনিটের মধ্যে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। উদ্ধারকারীরা বলছেন, বিমানটি দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে এবং এর একটি খণ্ড সমুদ্রের পানিতে ভাসছিলো।

এমিরেটস ফ্লাইট ইকে ৯৭৮৮, বোয়িং ৭৪৭-৪৮১ মডেলের এ বিমানটি দুবাই থেকে হংকংয়ে এসেছিলো। এটি তুরস্কের কার্গো এয়ারলাইন এয়ার এসিটির মালিকানাধীন।

বিমানটিতে থাকা চারজন ক্রুর সবাই বেঁচে আছেন। উদ্ধারের আগে তারা দরজা ভেঙ্গে বেরিয়ে এসেছিলেন। এরপর উদ্ধার কর্মীরা তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার সময় সেখানকার আবহাওয়া ভালো ছিলো এবং এ ঘটনার কারণে অন্য কোন ফ্লাইট ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

প্রায় তিন দশক আগে ১৯৯৮ সালে হংকং বিমানবন্দর চালু হওয়ার পর এটি এ ধরনের দ্বিতীয় মারাত্মক দুর্ঘটনা।

এমিরেটস বিবিসিকে দেয়া এক বিবৃতিতে অবতরণের সময় বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।

আজকের ঘটনার পর পরিস্থিতি মোকাবেলায় হংকং বিমানবন্দরে ২১৩ জন দমকল কর্মী ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা কর্মকর্তাদের মোতায়েন করা হয়েছে।

বিমানটি সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

বোয়িং ৭৪৭-৪৮১ মডেলের এই বিমানটি মূলত যাত্রীবাহী বিমান ছিলো। পরে এটিকে মালবাহী বিমানে রূপান্তর করা হয়।

এয়ারক্রাফট ট্র্যাকিং সাইট এয়ারফ্লিটসের মতে, ত্রিশ বছরের বেশি পুরনো এই বিমানটির যাত্রা শুরু হয়েছিলো ১৯৯৩ সালে।

এয়ারফ্লিটসের তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইন্স এই বিমানটি ব্যবহার করেছে।

এর মধ্যে আছে জাপানের অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ এবং সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স (সৌদিয়া)।

সোমবার এটি পরিচালনা করা হচ্ছিলো এমিরেটস স্কাইকার্গো ইকে ৯৭৮৮ ফ্লাইট হিসেবে।

রবিবার দুবাই থেকে রওনা দিয়ে হংকংয়ের স্থানীয় সময় রাত তিনটা ৫০ মিনিটে এটি হংকং ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে এটি অবতরণ করে।

আরেকটি ফ্লাইট ট্র্যাকিং প্লাটফর্ম ফ্লাইটরাডার ২৪ জানিয়েছে, এ ধরনের আরেকটি বোয়িং এয়ার এসিটির কাছে আছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে রানওয়ে নিরাপদ ছিলো

হংকং বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক স্টিভেন ইয়ু বলেছেন, অবতরণের পর বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে পাশের বেষ্টনীতে গিয়ে আঘাত করে।

“দুঃখজনকভাবে এ সময় সেখানে একটি এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি পেট্রল কার ছিলো। বিমানটির সাথে সেই পেট্রল কারের সংঘর্ষ হয়। বিমানের ধাক্কায় পেট্রল কারটিও সমুদ্রে গিয়ে পড়ে,” ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলছিলেন তিনি।

দুর্ঘটনায় যে দুইজন গ্রাউন্ড স্টাফ মারা গেছেন তাদের একজন সাত বছর, অন্যজন ১২ বছরের কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন।

মি. ইয়ু আরও জানিয়েছেন যে, অবতরণের সময় বিমানটি কোনও বিপদ সংকেত পাঠায়নি।

“বিমান পরিচালনার জন্য যেমন থাকা দরকার তার সব শর্তই সেখানে বিদ্যমান ছিলো। এই বিমানবন্দরের নর্থ রানওয়েতে দুর্ঘটনাটি হয়েছে।

তবে সাউথ ও সেন্ট্রাল রানওয়ের কার্যক্রম যথারীতি চালু আছে,” বলছিলেন স্টিভেন ইয়ু।

ব্ল্যাক বক্স এখনো পাওয়া যায়নি

হংকং এয়ার এক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন অথরিটির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা সমুদ্র থেকে ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। এগুলোই ব্ল্যাক বক্স হিসেবে পরিচিত।

“কখন ব্ল্যাক বক্স পাওয়া যাবে তার ওপরেই তদন্তের গতি নির্ভর করবে,” বলেছেন তিনি।

ওদিকে স্টিভেন ইয়ু জানিয়েছেন, সমুদ্র থেকে বিমানটির ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হচ্ছে।

“এয়ারলাইন এবং বিমানটির মালিক পক্ষের সাথে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। তারা দ্রুত হংকং আসছেন। তারা আসা মাত্রই আমরা এ বিষয়ে কাজ শুরু করবো,” বলেছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয়েছিলো যে, বিমানটি অবতরণের পর ভুল ডিরেকশনে যাচ্ছিলো কী-না।

জবাবে মি. ইয়ু বলেন, “স্বাভাবিকভাবে বিমানটি সাগরের দিকে ঘুরে যাওয়ার কথা নয়। কোন ডিরেকশনে যেতে হবে সেটা গাইড করা হয়েছিলো। কিন্তু এটা নরমাল রুট (যেদিকে বিমানটি গেছে) ছিলো না”।

ওদিকে হংকং সরকার জানিয়েছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে স্থানীয় সময় রাত তিনটা ৫০ মিনিটে। ভোর শুরুর এ সময়টায় কার্গো ফ্লাইট চলাচলের কারণে বিমানবন্দর খুব ব্যস্ত থাকে।

হংকং থেকে বিবিসি নিউজ চাইনিজের মার্টিন ইপ জানিয়েছেন, হংকং ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্গো হাব আছে।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এই কার্গো হাব ব্যবহার করা হয়েছে চার লাখ ২৯ হাজার টন মালামাল পরিবহনের কাজে।

BBC News বাংলা