প্রধান বিষয়
রাশিয়ার গ্যাজপ্রম পরিচালিত বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম গ্যাস পরিশোধন কেন্দ্র ওরেনবার্গ গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ কারখানা ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার পর কাজাখস্তান থেকে গ্যাস গ্রহণ বন্ধ করেছে। কাজাখস্তানের এনার্জি মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, কারখানাটি স্থগিত রয়েছে কারণ হামলার পর সেখানে ভাঙচুর ও আগুন লেগেছে।
ঘটনার বিবরণ
- • রাশিয়ার ওরেনবার্গ অঞ্চলে অবস্থিত ওই কারখানায় ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে রাশিয়া ও কাজাখস্তান উভয় দেশই জানিয়েছে।
- • স্থানীয় গভর্নর ইভগেনি সোলনৎসেভ জানিয়েছেন, হামলায় কারখানার এক কর্মশালায় আগুন লাগে ফলে কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- • আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে, তবে কোনো কর্মীর হতাহতের খবর নেই।
- • কাজাখস্তানের এনার্জি মন্ত্রণালয় জানায়, গ্যাজপ্রম কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে, তবে ক্ষতির পরিমাণ বা সম্পূর্ণ কার্যক্রম পুনরায় চালুর সময়সূচি এখনও জানায়নি।
কারখানার গুরুত্ব ও কার্যক্ষমতা
- • ওরেনবার্গ গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটির বার্ষিক প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস প্রক্রিয়াকরণের সক্ষমতা রয়েছে।
- • এটি রাশিয়ার নিজস্ব ওরেনবার্গ তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের তরলীকৃত (কনডেন্সেট) এবং কাজাখস্তানের কারাচাগানাক ক্ষেত্রের গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ করে।
- • কারখানাটি কাজাখস্তানের গ্যাস আমদানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে—তাই কাজাখস্তান থেকে গ্যাস গ্রহণ বন্ধ হয়ে যাওয়া তাৎপর্যপূর্ণ।
প্রেক্ষাপট ও বিশ্লেষণ
- • ইউক্রেন গত আগস্ট থেকে রাশিয়ার জ্বালানিসংক্রান্ত অবকাঠামোতে হামলা বাড়িয়েছে—এর লক্ষ্য রাশিয়ার তেল ও গ্যাস রপ্তানিসহ অর্থায়নে প্রভাব ফেলা।
- • এই হামলাকে রাশিয়ার সামরিক শক্তির অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডে আঘাত হানার কৌশলের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
- • রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক রাতেই সামারা, সারাতভ ও ওরেনবার্গ অঞ্চলে ৪৫টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
- • সেই কারণে সামারা অঞ্চলের স্থানীয় বিমানবন্দর ও মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় বলে গভর্নর জানিয়েছেন।
এই ঘটনাটি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নতুন এক পর্যায় নির্দেশ করছে—যেখানে জ্বালানিসংক্রান্ত অবকাঠামো সরাসরি টার্গেটে পরিণত হচ্ছে। রাশিয়ার কাছে এটি একটি সংকট, কারণ এই ধরনের হামলা তার জ্বালানির প্রবাহ ও আয়ের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে, ইউক্রেনের জন্য এটি কৌশলগত সাফল্যের ইঙ্গিত, যেখানে তারা শুধুমাত্র সামরিক নয়, রাশিয়ার অর্থনৈতিক ভিত্তিতেও আঘাত হানছে।