মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা, গাজার পুনর্গঠন এবং হামাসবিরোধী কার্যক্রম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে ঘনিষ্ঠ আলোচনা চলছে। তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ইসরায়েল কোনো মার্কিন প্রোটেক্টোরেট নয়—নিজস্ব নিরাপত্তা সিদ্ধান্তের দায়িত্ব দেশটি নিজেই বহন করবে।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার বড় চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে ইসরায়েল ও গাজা অঞ্চল। বুধবার জেরুজালেমে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্স বলেন, হামাসকে অস্ত্রমুক্ত করা এবং গাজাকে পুনর্গঠন করা—এ দুটি জটিল ও কঠিন কাজ একসঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে।
একই সময় প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দৃঢ়ভাবে বলেন, “আমরা কোনো মার্কিন প্রোটেক্টোরেট নই।” অর্থাৎ, ইসরায়েল তার নিরাপত্তা বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিজস্বভাবে নেবে।
প্রধান বিষয়সমূহ
ভ্যান্সের বক্তব্য
- হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং গাজার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন—এই দুই বিষয়ই এখন প্রধান লক্ষ্য।
- যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন এ বিষয়ে পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে তিনি জানান।
- আরব বিশ্বের কিছু দেশ ইতিমধ্যেই ইতিবাচক ভূমিকা নিচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
- আব্রাহাম চুক্তি (Abraham Accords) সম্প্রসারণ করা হলে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আসতে পারে বলে ভ্যান্স আশা প্রকাশ করেন।
- তিনি বলেন, “আমরা চাই ইসরায়েল হোক আমাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র, তবে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সম্পৃক্ততা কম হোক।”
- ভ্যান্স আরও যোগ করেন, “আমরা কোনো প্রোটেক্টোরেট চাই না।”
নেতানিয়াহুর প্রতিক্রিয়া
- নেতানিয়াহু বলেন, “গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের তুলনাহীন জোট ও অংশীদারি গড়ে উঠেছে।”
- তিনি আরও বলেন, “ইসলামিক বিশ্বের পরিবর্তন ঘটছে, আর এই অংশীদারি শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বকেও প্রভাবিত করছে।”
- সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা কোনো মার্কিন প্রোটেক্টোরেট নই। ইসরায়েল তার নিরাপত্তা নিজের নিয়ন্ত্রণেই রাখবে।”
বিশ্লেষণ ও প্রেক্ষাপট
গাজায় যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতির মধ্যে হামাসকে দমন ও পুনর্গঠন একসঙ্গে সম্পন্ন করা সহজ কাজ নয়। জে.ডি. ভ্যান্স এই জটিলতার কথা স্বীকার করেছেন।
আব্রাহাম চুক্তির সম্প্রসারণ মধ্যপ্রাচ্যে নতুন ধরণের কূটনৈতিক সংযোগ ও স্থিতিশীলতার সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে। একই সঙ্গে নেতানিয়াহুর ‘প্রোটেক্টোরেট নয়’ মন্তব্যটি ইসরায়েলের স্বাধীন নিরাপত্তা নীতির প্রতিফলন।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অংশীদারিত্ব দৃঢ়, তবু ইসরায়েল নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বাধীনতা বজায় রাখতে চায়। ভবিষ্যতে এই অবস্থান দুই দেশের সম্পর্কের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
যদি হামাস দমন ও গাজার পুনর্গঠন বাস্তবায়িত হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন ধরণের স্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে।
আব্রাহাম চুক্তির সম্প্রসারণ ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর সম্পর্ক গভীর করবে, যা আঞ্চলিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে ইসরায়েল যদি নিরাপত্তা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালা থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আনে, তাহলে দুই দেশের কূটনৈতিক ও সামরিক অংশীদারি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
অবশেষে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের আলোচনায় তিনটি মূল বিষয়—মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা, গাজার পুনর্গঠন, ও হামাসবিরোধী কর্মসূচি—স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। তবুও নেতানিয়াহু পুনরায় নিশ্চিত করেছেন, ইসরায়েল কোনো মার্কিন প্রোটেক্টোরেট নয়; দেশটির নিরাপত্তা সিদ্ধান্ত নেবে তার নিজের হাতে।
# ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, নেতানিয়াহু, জে.ডি. ভ্যান্স, মধ্যপ্রাচ্য, হামাস, গাজা, আব্রাহাম_চুক্তি, সারাক্ষণ_রিপোর্ট