১০:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
অর্থনৈতিক চাপে ম্লান ইয়ালদা, তবু পারিবারিক বন্ধনই ইরানিদের উৎসব ভারী ডিসেম্বরের বৃষ্টিতে জেবেল জাইস সাময়িকভাবে বন্ধ, নিরাপত্তা যাচাই চলবে মার্কিন ডলার ভুলে যান, বরং পানি ও জ্বালানি সম্পদের দিকে নজর দিন পরিষ্কার জ্বালানির অগ্রগতি সত্ত্বেও বৈশ্বিক নির্গমন কমছে ধীরগতিতে এআই বিনিয়োগে টেক জায়ান্টদের সামনে নতুন প্রশ্ন শীতের চাপে ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল ও কূটনীতি নতুন মোড়ে ভবিষ্যৎ গেমিংয়ের মঞ্চে আবুধাবি বিশ্ববিদ্যালয়, তরুণ প্রতিভায় নতুন দিগন্ত দুবাইয়ে প্রকৃতিনির্ভর পর্যটনের নতুন দিগন্ত, আরভি রুটে পাহাড়–সমুদ্র–মরুভূমির অভিজ্ঞতা চীনের সঙ্গে জার্মানির বাণিজ্য ঘাটতি নতুন উচ্চতার পথে, সতর্ক করছেন বিশ্লেষকেরা প্রাকযুদ্ধের বিএমডব্লিউ ক্যাব্রিওলেট পেবল বিচে গৌরব, ইতিহাসের গাড়িতে মঞ্চ জয়

আলো-অন্ধকারে দীপশিখা: কলকাতার কালীপূজা, বিশেষ আকর্ষণ কালিঘাট মন্দিরে

কলকাতা যেন অন্য এক জগৎ—আলো, শব্দ, ধূপের গন্ধ আর ঢাকের তালে মুখরিত। কালীপূজার রাতে এই শহর পরিণত হয় পূর্ণিমার মতো দীপ্ত এক নগরে। আর সেই ভক্তি ও উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু হলো দক্ষিণ কলকাতার ঐতিহ্যবাহী কালিঘাট মন্দির, যেখানে দেবী কালী স্বয়ং ‘মা’ হয়ে উপস্থিত হন লাখো মানুষের হৃদয়ে।


কলকাতার কালীপূজার আবহ

দীপাবলির রাতে যখন ভারতের নানা প্রান্তে আলোয় সেজে ওঠে ঘরবাড়ি, তখন কলকাতা মোহময় হয়ে ওঠে কালীপূজার জোয়ারে। আলোর রেখায়, তোরণে ও অলিগলির প্রতিটি মোড়ে বাজে উৎসবের ঢাক। স্কুল, ক্লাব, পরিবার—সবাই মেতে ওঠে দেবী আরাধনায়।
কলকাতার কালীপূজায় একদিকে যেমন আধ্যাত্মিক ভক্তি, অন্যদিকে তেমনি রয়েছে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উচ্ছ্বাস। সৃজনশীল থিমে সাজানো প্যান্ডেল, শিল্পীদের নিপুণ মূর্তি, আর সারারাত ভক্তিমূলক সংগীত—সব মিলিয়ে যেন এক জীবন্ত শিল্পকলা মেলা।


কালিঘাট: দেবীর অমোঘ উপস্থিতি

কলকাতার হৃদয়ে অবস্থিত কালিঘাট মন্দির কেবল একটি পূজাস্থল নয়, এটি এক ঐতিহ্যের প্রতীক। বিশ্বাস করা হয়, দেবী সতীর শরীরের এক অংশ এখানে পতিত হয়েছিল, ফলে এটি ভারতের অন্যতম শাক্তপীঠ।
কালীপূজার রাতে কালিঘাট মন্দিরে মানুষের ঢল নামে। ভোর থেকে শুরু হয় আরতি ও পূজা, যা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। মন্দির চত্বরে তখন ধূপের গন্ধে বাতাস ভারী, আর ভক্তদের মুখে একটাই প্রার্থনা—“মা, রক্ষা করো।”
দেবীর কালো আভা, লাল জিভ, আর ত্রিশূল হাতে প্রতীকী শক্তির রূপ এখানে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।


পুজো আয়োজন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

কালিঘাট মন্দির কমিটি ও কলকাতা পুলিশ প্রতিবছর বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্যান্ডেল ঘিরে থাকে নিরাপত্তা রক্ষী, ভক্তদের জন্য আলাদা প্রবেশ ও প্রস্থান পথ থাকে। ফুল, প্রসাদ ও প্রদীপ বিক্রেতারা গলির প্রতিটি পাশে বসে, আর ভক্তরা সার বেঁধে দেবীর দর্শনে অপেক্ষা করেন।
দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ ভক্তিসংগীত গেয়ে সময় কাটান, কেউ আবার চোখ বন্ধ করে নীরবে প্রার্থনা করেন।


কালিঘাটের কালী: শহরের আত্মা

কলকাতার বহু পরিবারে কালীপূজার আগের দিন থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি—মিষ্টি তৈরি, আলপনা, আর প্রদীপ সাজানো। কিন্তু শহরের আসল প্রাণস্পন্দন ধরা পড়ে কালিঘাটে।
এখানে কালীপূজা শুধু ধর্মীয় আচার নয়, এটি মানুষের মনে শক্তি, সাহস ও সহানুভূতির প্রতীক। দেবী কালী যেন বলেন—অন্ধকারের মধ্যেও আলোর পথ খুঁজে নিতে হয়।


কালিঘাটের কালীপূজা শুধু কলকাতার নয়, সমগ্র বাংলার এক আত্মিক ঐতিহ্য। এটি এমন এক উৎসব, যেখানে ভক্তি, শিল্প, সংগীত ও মানবতার এক অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটে। কালী মা যেন প্রতি বছর এই নগরীর অন্ধকারে আলো জ্বালিয়ে দেন—ভয় নয়, শক্তি ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে।


#কালীপূজা #কালিঘাট #কলকাতা #দীপাবলি #সারাক্ষণরিপোর্ট #বাংলাঅনুষ্ঠান #ঐতিহ্য #ভক্তি

জনপ্রিয় সংবাদ

অর্থনৈতিক চাপে ম্লান ইয়ালদা, তবু পারিবারিক বন্ধনই ইরানিদের উৎসব

আলো-অন্ধকারে দীপশিখা: কলকাতার কালীপূজা, বিশেষ আকর্ষণ কালিঘাট মন্দিরে

০১:২২:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

কলকাতা যেন অন্য এক জগৎ—আলো, শব্দ, ধূপের গন্ধ আর ঢাকের তালে মুখরিত। কালীপূজার রাতে এই শহর পরিণত হয় পূর্ণিমার মতো দীপ্ত এক নগরে। আর সেই ভক্তি ও উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু হলো দক্ষিণ কলকাতার ঐতিহ্যবাহী কালিঘাট মন্দির, যেখানে দেবী কালী স্বয়ং ‘মা’ হয়ে উপস্থিত হন লাখো মানুষের হৃদয়ে।


কলকাতার কালীপূজার আবহ

দীপাবলির রাতে যখন ভারতের নানা প্রান্তে আলোয় সেজে ওঠে ঘরবাড়ি, তখন কলকাতা মোহময় হয়ে ওঠে কালীপূজার জোয়ারে। আলোর রেখায়, তোরণে ও অলিগলির প্রতিটি মোড়ে বাজে উৎসবের ঢাক। স্কুল, ক্লাব, পরিবার—সবাই মেতে ওঠে দেবী আরাধনায়।
কলকাতার কালীপূজায় একদিকে যেমন আধ্যাত্মিক ভক্তি, অন্যদিকে তেমনি রয়েছে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উচ্ছ্বাস। সৃজনশীল থিমে সাজানো প্যান্ডেল, শিল্পীদের নিপুণ মূর্তি, আর সারারাত ভক্তিমূলক সংগীত—সব মিলিয়ে যেন এক জীবন্ত শিল্পকলা মেলা।


কালিঘাট: দেবীর অমোঘ উপস্থিতি

কলকাতার হৃদয়ে অবস্থিত কালিঘাট মন্দির কেবল একটি পূজাস্থল নয়, এটি এক ঐতিহ্যের প্রতীক। বিশ্বাস করা হয়, দেবী সতীর শরীরের এক অংশ এখানে পতিত হয়েছিল, ফলে এটি ভারতের অন্যতম শাক্তপীঠ।
কালীপূজার রাতে কালিঘাট মন্দিরে মানুষের ঢল নামে। ভোর থেকে শুরু হয় আরতি ও পূজা, যা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। মন্দির চত্বরে তখন ধূপের গন্ধে বাতাস ভারী, আর ভক্তদের মুখে একটাই প্রার্থনা—“মা, রক্ষা করো।”
দেবীর কালো আভা, লাল জিভ, আর ত্রিশূল হাতে প্রতীকী শক্তির রূপ এখানে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।


পুজো আয়োজন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা

কালিঘাট মন্দির কমিটি ও কলকাতা পুলিশ প্রতিবছর বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্যান্ডেল ঘিরে থাকে নিরাপত্তা রক্ষী, ভক্তদের জন্য আলাদা প্রবেশ ও প্রস্থান পথ থাকে। ফুল, প্রসাদ ও প্রদীপ বিক্রেতারা গলির প্রতিটি পাশে বসে, আর ভক্তরা সার বেঁধে দেবীর দর্শনে অপেক্ষা করেন।
দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ ভক্তিসংগীত গেয়ে সময় কাটান, কেউ আবার চোখ বন্ধ করে নীরবে প্রার্থনা করেন।


কালিঘাটের কালী: শহরের আত্মা

কলকাতার বহু পরিবারে কালীপূজার আগের দিন থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি—মিষ্টি তৈরি, আলপনা, আর প্রদীপ সাজানো। কিন্তু শহরের আসল প্রাণস্পন্দন ধরা পড়ে কালিঘাটে।
এখানে কালীপূজা শুধু ধর্মীয় আচার নয়, এটি মানুষের মনে শক্তি, সাহস ও সহানুভূতির প্রতীক। দেবী কালী যেন বলেন—অন্ধকারের মধ্যেও আলোর পথ খুঁজে নিতে হয়।


কালিঘাটের কালীপূজা শুধু কলকাতার নয়, সমগ্র বাংলার এক আত্মিক ঐতিহ্য। এটি এমন এক উৎসব, যেখানে ভক্তি, শিল্প, সংগীত ও মানবতার এক অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটে। কালী মা যেন প্রতি বছর এই নগরীর অন্ধকারে আলো জ্বালিয়ে দেন—ভয় নয়, শক্তি ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে।


#কালীপূজা #কালিঘাট #কলকাতা #দীপাবলি #সারাক্ষণরিপোর্ট #বাংলাঅনুষ্ঠান #ঐতিহ্য #ভক্তি