একসাথে দেখা বনাম অ্যালগরিদমে ডুবে থাকা
হ্যালোইনকে ঘিরে টেলিভিশন ও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের কৌশল এখন দুই ভাগে স্পষ্টভাবে দাঁড়িয়েছে। একদিকে ঐতিহ্যবাহী চ্যানেলগুলো শনিবার রাতকে জাতীয় অভ্যাস বানাতে চায়: ড্যান্স কম্পিটিশন, থিমড স্পেশাল, ক্লাসিক মুভি, ক্রাইম ডকু — সব একসাথে সাজানো, যেন পরিবার একই সময়ে বসে দেখে, রিয়েল টাইমে প্রতিক্রিয়া দেয়, আর পরদিন স্কুল বা অফিসে সেই আলাপ নিয়ে যায়। এই “এপয়েন্টমেন্ট টিভি” মডেল তাদের বৈধতা জোগায়, বিশেষত যখন বাজেট চাপে পড়ে এবং দর্শক জিজ্ঞেস করে কেন আমরা এখনও পাবলিক-ব্রডকাস্টিংয়ের জন্য টাকা দেব।
অন্যদিকে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলো পুরো অক্টোবরজুড়ে ভয়-বিনোদনের ব্যাঙ্ক খুলে দেয়। পরিবার-বান্ধব স্পুকি অ্যানিমেশন থেকে শুরু করে সিরিয়াল কিলার ডকু আর রিবুটেড স্ল্যাশার — যা চাই, যখন চাই। এখানে আর “শনিবার রাত ৮টা ২০” নেই; আছে অ্যালগরিদম-তৈরি মুড। এতে হ্যালোইন একরাতে সীমাবদ্ধ না থেকে হয়ে উঠেছে সাবস্ক্রিপশন বিক্রির মৌসুম। প্রতিটি নতুন স্পেশাল বা ড্রপকে ব্যবহার করা হয় “এখনি সাবস্ক্রাইব করো” ট্রিগার হিসেবে।
কমফোর্ট কনটেন্টের দখলযুদ্ধ
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২৫ সালের দর্শক চায় প্রেডিক্টেবল আরাম। অর্থনৈতিক চাপ, যুদ্ধের খবর, রাজনৈতিক কোলাহলে মানুষ ক্লান্ত। পরিচিত এক ড্যান্স-অফ ফরম্যাট বা বহুবার দেখা ভৌতিক ফ্র্যাঞ্চাইজি মানসিকভাবে সহজপাচ্য। ঐতিহ্যবাহী টিভি বলছে, “দেখুন, আমরা এখনো সবাইকে একই সময়ে এক স্ক্রিনে জড়ো করতে পারি।” স্ট্রিমিং বলছে, “আমরা তোমার মাথার ভয়ের ধরনটা ব্যক্তিগতভাবে সাজিয়ে দেব, যখনই তুমি চাও।” কে জিতবে সেটা শুধু রেটিংস নয়; সেটাই ঠিক করবে কে ভবিষ্যতে তোমার মাসিক সাবস্ক্রিপশনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ফলে হ্যালোইন এখন শুধু ভয় দেখানোর উৎসব নয়; এটা মানসিক সেফ জোন বিক্রির ব্যবসা। আর সেই ব্যবসা ঘুরছে এক প্রশ্নের চারপাশে: “তুমি কেমন ভৌতিক চাও?”
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















