১২:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দ্য লাইফ অব আ শোগার্ল’-এ অশালীনতা ও রক্ষণশীলতার মিশেল—আমেরিকার সাংস্কৃতিক টানাপোড়েনের প্রতিচ্ছবি মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-৩৫২) পরবর্তী পাঁচ বছরে ঘরোয়া ভোগব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি চীনের ভয়াবহ এক আত্মজীবনী—যৌন নির্যাতন, ক্ষমতার অন্ধকার এবং এক নারীর করুণ লড়াইয়ের কাহিনি চীনের নারী দর্শকশক্তি বদলে দিচ্ছে দেশটির চলচ্চিত্রজগৎ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৪৫) ঢাকার অর্থনীতির ৫৬ শতাংশ উৎপাদন খাতে—ডিসিসিআই প্রতিবেদন শেয়ারবাজারে সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে ১৮ শতাংশ এশিয়া সফরে ট্রাম্প—চীনের প্রেসিডেন্ট শি’র সঙ্গে বড় বাণিজ্য চুক্তির চেষ্টা ইসলামাবাদ–কাবুল দ্বিতীয় দফা সংলাপ শুরু

যদি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কোনো প্রচলিত যুদ্ধ হয়, পাকিস্তান হেরে যাবে — সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা জন কিরিয়াকু

যুদ্ধ নয়, শান্তিই একমাত্র সমাধান

সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র কর্মকর্তা জন কিরিয়াকু বলেছেন, যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো প্রচলিত যুদ্ধ হয় তাহলে পাকিস্তান নিশ্চিতভাবে পরাজিত হবে। তিনি বলেন, “ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাস্তব যুদ্ধ থেকে কোনো ভালো কিছু আসবে না। পাকিস্তান হেরে যাবে — একেবারেই সহজভাবে বললে, তারা হেরে যাবে।”

কিরিয়াকু, যিনি পাকিস্তানে সিআইএ’র সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, জানান যে পাকিস্তানকে এখন উপলব্ধি করতে হবে—যুদ্ধ কোনো লাভ বয়ে আনবে না; বরং রাষ্ট্রের স্থিতি ও উন্নয়ন বিপদের মুখে পড়বে।


পেন্টাগনের নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র

জন কিরিয়াকু আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেন: ২০০২ সালে পাকিস্তানে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি অনানুষ্ঠানিকভাবে জানতে পান যে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার আসলে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

তার ভাষায়, “আমাকে জানানো হয়েছিল যে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ পেন্টাগনের হাতে ছিল। তবে ভারত এ তথ্য জানত না। আমি সন্দেহ করি যুক্তরাষ্ট্র কখনও ভারতকে জানায়নি যে পাকিস্তানের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে রয়েছে, কারণ পাকিস্তান সর্বদা প্রকাশ্যে দাবি করে এসেছে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”


ভারতের অবস্থান: পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল সহ্য নয়

কিরিয়াকু বলেন, ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে পাকিস্তানের ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল’ তারা সহ্য করবে না এবং কোনো সন্ত্রাসী হামলার জবাবে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে। তিনি ভারতের বিভিন্ন প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের উদাহরণ তুলে ধরেন:

  • ২০১৬ সালে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক;
  • ২০১৯ সালের বালাকোট বিমান হামলা;
  • এবং সাম্প্রতিক “অপারেশন সিন্ধুর”, যা সীমান্তের সন্ত্রাসী অবকাঠামোর বিরুদ্ধে চালানো হয়।

আবদুল কাদির খান প্রসঙ্গে মন্তব্য

সাবেক এই সিআইএ কর্মকর্তা জানান, তিনি সরাসরি সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে নিযুক্ত থাকলেও তার এক সহকর্মী পাকিস্তানের পরমাণু বিজ্ঞানী আবদুল কাদির খানের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতেন। কিরিয়াকু বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র চাইলে ইসরায়েলের মতো কৌশল গ্রহণ করে আবদুল কাদির খানকে সরিয়ে দিতে পারত; কিন্তু সৌদি আরবের রাজনৈতিক সমর্থন তার পক্ষে থাকায় ওয়াশিংটন তা করেনি।”


কিরিয়াকুর সিআইএ জীবন ও বিতর্ক

জন কিরিয়াকু সিআইএ’র সঙ্গে ১৫ বছর কাজ করেছেন — প্রথমার্ধে বিশ্লেষণ বিভাগে এবং পরবর্তী সময়ে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে। ২০০৭ সালে তিনি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে সংস্থার নির্যাতনমূলক জিজ্ঞাসাবাদ প্রোগ্রামের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেন, যা পরে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করে।

কিরিয়াকুর মতে, পাকিস্তান যদি যুদ্ধের পরিবর্তে বাস্তবতা মেনে নেয় এবং শান্তি ও কূটনীতির পথে অগ্রসর হয়, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হতে পারে। অন্যথায়, ভারতের সঙ্গে যেকোনো সামরিক সংঘাত পাকিস্তানের অস্তিত্ব ও অর্থনীতির জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

‘দ্য লাইফ অব আ শোগার্ল’-এ অশালীনতা ও রক্ষণশীলতার মিশেল—আমেরিকার সাংস্কৃতিক টানাপোড়েনের প্রতিচ্ছবি

যদি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কোনো প্রচলিত যুদ্ধ হয়, পাকিস্তান হেরে যাবে — সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা জন কিরিয়াকু

০৮:০২:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

যুদ্ধ নয়, শান্তিই একমাত্র সমাধান

সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র কর্মকর্তা জন কিরিয়াকু বলেছেন, যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো প্রচলিত যুদ্ধ হয় তাহলে পাকিস্তান নিশ্চিতভাবে পরাজিত হবে। তিনি বলেন, “ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাস্তব যুদ্ধ থেকে কোনো ভালো কিছু আসবে না। পাকিস্তান হেরে যাবে — একেবারেই সহজভাবে বললে, তারা হেরে যাবে।”

কিরিয়াকু, যিনি পাকিস্তানে সিআইএ’র সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, জানান যে পাকিস্তানকে এখন উপলব্ধি করতে হবে—যুদ্ধ কোনো লাভ বয়ে আনবে না; বরং রাষ্ট্রের স্থিতি ও উন্নয়ন বিপদের মুখে পড়বে।


পেন্টাগনের নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র

জন কিরিয়াকু আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেন: ২০০২ সালে পাকিস্তানে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি অনানুষ্ঠানিকভাবে জানতে পান যে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার আসলে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

তার ভাষায়, “আমাকে জানানো হয়েছিল যে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ পেন্টাগনের হাতে ছিল। তবে ভারত এ তথ্য জানত না। আমি সন্দেহ করি যুক্তরাষ্ট্র কখনও ভারতকে জানায়নি যে পাকিস্তানের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে রয়েছে, কারণ পাকিস্তান সর্বদা প্রকাশ্যে দাবি করে এসেছে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”


ভারতের অবস্থান: পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল সহ্য নয়

কিরিয়াকু বলেন, ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে পাকিস্তানের ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল’ তারা সহ্য করবে না এবং কোনো সন্ত্রাসী হামলার জবাবে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে। তিনি ভারতের বিভিন্ন প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের উদাহরণ তুলে ধরেন:

  • ২০১৬ সালে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক;
  • ২০১৯ সালের বালাকোট বিমান হামলা;
  • এবং সাম্প্রতিক “অপারেশন সিন্ধুর”, যা সীমান্তের সন্ত্রাসী অবকাঠামোর বিরুদ্ধে চালানো হয়।

আবদুল কাদির খান প্রসঙ্গে মন্তব্য

সাবেক এই সিআইএ কর্মকর্তা জানান, তিনি সরাসরি সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে নিযুক্ত থাকলেও তার এক সহকর্মী পাকিস্তানের পরমাণু বিজ্ঞানী আবদুল কাদির খানের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতেন। কিরিয়াকু বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র চাইলে ইসরায়েলের মতো কৌশল গ্রহণ করে আবদুল কাদির খানকে সরিয়ে দিতে পারত; কিন্তু সৌদি আরবের রাজনৈতিক সমর্থন তার পক্ষে থাকায় ওয়াশিংটন তা করেনি।”


কিরিয়াকুর সিআইএ জীবন ও বিতর্ক

জন কিরিয়াকু সিআইএ’র সঙ্গে ১৫ বছর কাজ করেছেন — প্রথমার্ধে বিশ্লেষণ বিভাগে এবং পরবর্তী সময়ে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে। ২০০৭ সালে তিনি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে সংস্থার নির্যাতনমূলক জিজ্ঞাসাবাদ প্রোগ্রামের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেন, যা পরে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করে।

কিরিয়াকুর মতে, পাকিস্তান যদি যুদ্ধের পরিবর্তে বাস্তবতা মেনে নেয় এবং শান্তি ও কূটনীতির পথে অগ্রসর হয়, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হতে পারে। অন্যথায়, ভারতের সঙ্গে যেকোনো সামরিক সংঘাত পাকিস্তানের অস্তিত্ব ও অর্থনীতির জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।