মা নেই, তবু খাঁচাও নয়
কেনিয়ার মাসাই মারা সংরক্ষিত এলাকায় এক চিতা শাবকের মা সিংহের হামলায় মারা গেছে। শাবকটি এখনো নিজে শিকার ধরার বয়সে যায়নি। পুরোপুরি ছেড়ে দিলে সহজ শিকার হয়ে যেত হায়েনা ও অন্য শিকারির কাছে। তাই বনরক্ষীরা শাবকটিকে কাছ থেকে মনিটর করছে, সীমিত বোতলদুধ খাওয়াচ্ছে, কিন্তু খাঁচায় তুলছে না। তারা চায় শাবকটি ঘাসের মাঠেই বড় হোক, বন্য পরিবেশে দৌড়ানো, লুকোনো ও শিকার তাড়া করার অভ্যাস শিখুক। একইসাথে টহলদল পর্যায়ক্রমে পাহারা দিচ্ছে, যেন পাচারচক্র বা পর্যটকের ভিড় শাবকটিকে চাপ না দেয়।

বন্যপ্রাণী বনাম পর্যটন আয়ের সমীকরণ
এই ঘটনা আবার সামনে এনেছে পুরোনো বিতর্ক: মানুষ কতদূর পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করলে তা “রক্ষা” থাকে, আর কখন সেটা “পোষ মানানো” হয়ে দাঁড়ায়। পূর্ব আফ্রিকায় চিতার সংখ্যা বছর বছর কমছে; খরা, জমি দখল আর অবৈধ বেচাকেনা মিলিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হচ্ছে। গাইডরা বলছেন, অনিয়মিত বৃষ্টি ও ঘাস কমে যাওয়া সিংহ ও চিতাকে ছোট এলাকায় ঠেলে দেয়, মুখোমুখি সংঘর্ষ বাড়ে। একই সময়ে কেনিয়ার সাফারি অর্থনীতি বেঁচে থাকা বন্য শিকারির ওপর নির্ভরশীল; পর্যটকরা বাচ্চা চিতা বাঁচতে দেখলে ভবিষ্যতে আরো বুকিং আসে, স্থানীয় কমিউনিটিও আয় পায়। সমালোচকেরা সতর্ক করছেন, মানুষ খুব বেশি হাতে ধরে বাঁচালে একধরনের “অর্ধবন্য শো-প্রাণী” তৈরি হয়, যা প্রকৃতিকে বিকৃত করে। বনরক্ষীরা বলছেন, পরিকল্পনা হলো মানুষি সহায়তা ধীরে ধীরে কমিয়ে দেওয়া, যাতে শাবকটি শেষ পর্যন্ত একা শিকার করতে পারে। তাদের ভাষায়, বিকল্প ছিল প্রায় নিশ্চিত মৃত্যু।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















