রোমাঞ্চে ভরপুর সপ্তম মৌসুম
দুবাই সাফারি পার্কের সপ্তম মৌসুমে দর্শনার্থীদের জন্য অপেক্ষা করছে অভিযানে ভরা এক দিন। ১১৯ হেক্টর বিস্তৃত সবুজ থিমভিত্তিক এলাকায় সাজানো এই পার্কে রয়েছে তিন হাজারেরও বেশি প্রাণী, আধুনিক সুবিধা, শিশুদের জন্য বিশেষ বিনোদন ও নানা ইন্টারঅ্যাকটিভ আয়োজন।
শিশুদের জন্য ‘কিডস ফার্ম’
প্রবেশের পরেই শুরু হয় অভিযাত্রা—‘কিডস ফার্ম’-এ। এখানে শিশুরা ঘনিষ্ঠভাবে দেখতে পারে গরু, ছাগল, টাট্টুঘোড়া, মুরগি ও কচ্ছপের মতো বন্ধুবৎসল খামার প্রাণী। নির্দিষ্ট সময়ে প্রাণী খাওয়ানো, টাট্টুঘোড়া পরিচর্যা কিংবা ‘পনি ওয়াক’-এর সুযোগও আছে। পাশে ‘কিডস ক্যাফে’-তে ফলের রস ও হালকা খাবার পাওয়া যায়, যার দাম শুরু ২০ দিরহাম থেকে।
প্রাণীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত
রেপটাইল, মাকাও, পনি, ছাগল ও কচ্ছপসহ নানা প্রাণীর সঙ্গে খাওয়ানো ও মিথস্ক্রিয়ার সুযোগ রয়েছে মাত্র ২০ দিরহামে। তবে লেমুর খাওয়ানোর বিশেষ অভিজ্ঞতার জন্য খরচ ৭৫ দিরহাম।

আফ্রিকান ও এক্সপ্লোরার ভিলেজ
‘আফ্রিকান ভিলেজ’-এ সাদা ও বাদামী সিংহ, হাতি, বাবুন, হায়েনা-সহ নানা বন্যপ্রাণী ঘুরে বেড়ায়। শিশুরা ‘লেমুর ফিডিং’ দেখতে পারে বা ‘চিম্পাঞ্জি হাউস’-এ অংশ নিতে পারে, যা শেখার পাশাপাশি খেলার জায়গা হিসেবেও সাজানো।
রেপটাইল হাউস, গ্র্যান্ড অ্যাভিয়ারি ও ‘কোপজি কেবিন’ থেকে আফ্রিকার প্রাণীজগতকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ মিলবে।
অন্যদিকে, ‘এক্সপ্লোরার ভিলেজ’ হলো আসল সাফারি অভিজ্ঞতার কেন্দ্র। ৪৫ মিনিটের ‘এক্সপ্লোরার সাফারি ট্যুর’-এ আফ্রিকা ও এশিয়ার প্রাকৃতিক আবাসভূমির প্রতিরূপে দেখা যাবে জলহস্তী, জিরাফ, জেব্রা, গণ্ডার, বাঘ ও কুমির।
সাফারির ফাঁকে বিশ্রামের জন্য রয়েছে ‘এলিফ্যান্ট ক্যাফে’, যেখানে খাবারের দাম ২০ থেকে ৫৫ দিরহামের মধ্যে।
আরব মরুভূমির সাফারি
‘আরাবিয়ান ডেজার্ট সাফারি’-তে বিনামূল্যে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের গাইডেড ট্যুরে অংশ নেওয়া যায়। এখানে দেখা যাবে আরবীয় গজেল, অরেক্স, লাল ঘাড় উটপাখি, অ্যাডাক্স ও আরবীয় নেকড়ে—সবই স্থানীয় পরিবেশে সযত্নে সংরক্ষিত।

জীববৈচিত্র্য ও সংরক্ষণ বার্তা
এই মৌসুমের মূল থিম ‘গার্ডিয়ানস অব দ্য ওয়াইল্ড’। শিশুদের জীববৈচিত্র্য ও সংরক্ষণ বিষয়ে সচেতন করতে আয়োজন করা হয়েছে কর্মশালা, বন্যপ্রাণী আলাপ ও ইন্টারঅ্যাকটিভ প্রদর্শনী।
নতুনভাবে সাজানো ‘বার্ডস কিংডম লাইভ প্রেজেন্টেশন’-এ রয়েছে চমকপ্রদ গল্প বলার কৌশল ও উড়ান প্রদর্শনী।
প্রতিটি টিকিটের একটি অংশ সরাসরি পার্কের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও প্রজনন কর্মসূচিতে ব্যয় হয়।
এশিয়ান ভিলেজে প্রাণচাঞ্চল্য
‘ড্রাগন স্টেশন’-এর দৃষ্টিনন্দন প্রবেশদ্বার পেরিয়ে এশিয়ান ভিলেজে ঢুকতেই শোনা যায় গিবনের ডাক, যা পূর্বের রঙিন সংস্কৃতির আবহ তৈরি করে।
গ্রামের কেন্দ্রেই রয়েছে ‘এশিয়ান ভিলেজ থিয়েটার’—জল ও গাছপালায় ঘেরা গম্বুজাকৃতির মঞ্চ, যেখানে সারাদিন নানা প্রদর্শনী চলে।
শো শেষে অতিথিরা উপভোগ করতে পারেন ভারতীয় ও পূর্ব এশীয় খাবারের স্বাদ—প্যাড থাই, বাটার চিকেন, র্যামেন ও ম্যাঙ্গো স্টিকি রাইস।

‘আফ্রিকান ভিলেজ’-এ রয়েছে বার্গার, পিজা, পাস্তা, টাকোসহ পারিবারিক খাবারের আয়োজন, আর ‘আল ওয়াদি’ অঞ্চলে শান্ত পরিবেশে প্রবাহিত জলধারার ধারে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা।
ভ্রমণ তথ্য ও সময়সূচি
দুবাই সাফারি পার্ক অবস্থিত আল ওয়ারকা এলাকায়। পার্ক খোলা থাকে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত; শেষ সাফারি ছাড়ে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে।
বিশেষ ব্যবস্থায় মোটরচালিত যান রয়েছে প্রতিবন্ধী দর্শনার্থীদের জন্য, এছাড়া এয়ার-কন্ডিশন্ড ট্রেন ও শাটল বাস যুক্ত করে পার্কের প্রধান অঞ্চলগুলো। পার্কে রয়েছে স্ট্রলার পার্কিং, নামাজের জায়গা, শৌচাগার ও ভেন্ডিং মেশিন।







সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















