ধারাবাহিকতা ও আত্মবিশ্বাসই সাফল্যের মূল
হ্যান্ডস্ট্যান্ডে সফল হতে গেলে সবচেয়ে জরুরি হলো শক্তি, নিয়মিত অনুশীলন ও আত্মবিশ্বাস। দেয়াল এখানে হয়ে ওঠে নিরাপদ সহচর—এটি আপনার ভারসাম্য ঠিক রাখে, ফলে পড়ে যাওয়ার ভয় কমে যায়। একই সঙ্গে “ডেড হ্যাং” অনুশীলন কাঁধ, গ্রিপ ও আগের হাতের পেশি মজবুত করে, যা হ্যান্ডস্ট্যান্ডে ভর রাখার জন্য অপরিহার্য।
বিশেষজ্ঞ কাইলের পরামর্শ, সপ্তাহে অন্তত তিন দিন অনুশীলন করা উচিত। যেমন দৌড়বিদ দিনে একবার দৌড়ালে খুব ধীরে উন্নতি হয়, তেমনি হ্যান্ডস্ট্যান্ডও নিয়মিত না করলে ফল পাওয়া কঠিন। প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিটের ড্রিল—যেমন নিয়মিত শক্তি প্রশিক্ষণের পর কয়েকটি নির্দিষ্ট অনুশীলন—অভ্যাসে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
উষ্ণায়নের প্রয়োজনীয়তা
অনেকে সরাসরি অনুশীলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন, কিন্তু কাইল বলেন, “আমি কখনও ঠান্ডা শরীরে হ্যান্ডস্ট্যান্ড করি না।” তিনি অনুশীলনের আগে সবসময় কবজি, কাঁধ, নিতম্ব ও হ্যামস্ট্রিং গরম করে নেন, এবং বসা অবস্থায় স্ট্র্যাডল পজিশনে কিছু সময় থাকেন যাতে শরীর নমনীয় হয়। যদি আপনার রুটিনে নিয়মিত ওয়ার্ম-আপ থাকে, তাহলে এটি আলাদা করে করা সহজ।

দেয়াল অনুশীলন: ভারসাম্যের প্রথম ধাপ
ওয়ার্ম-আপ শেষে দেয়ালের সামনে ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড করে হ্যান্ডস্ট্যান্ড অনুশীলন করুন। কাইলের মতে, এটি শরীরকে অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। ড. লায়ন বলেন, “যদি শরীরের সোজাসুজি ভঙ্গি শিখতে চান, দেয়ালের দিকে মুখ করে দাঁড়ান; আবার যদি উল্টো হয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতে চান, তবে পিঠ দেয়ালের দিকে রাখুন।”
অ্যাঞ্জেলা গারগানো জানান, প্রথমে পা একটি চেয়ার বা উঁচু জায়গায় রেখে ‘পাইক পজিশন’-এ হাতের ওপর ভর দিতে পারেন। এতে শরীর উল্টো অবস্থায় অভ্যস্ত হয়। এরপর একবারে একটি পা তুলতে অনুশীলন শুরু করুন।
ভারসাম্যের পরের ধাপ: খেলার মতো চর্চা
কাইলের পরামর্শ, অনুশীলনের শেষে একটু “খেলার সময়” রাখুন—দেখুন আপনি কয়েক সেকেন্ডের জন্য ভারসাম্য রাখতে পারেন কি না। নতুনদের ক্ষেত্রে এটি অনুশীলনের ক্ষুদ্র অংশ হলেও, প্রতিবারই তিন–চার সেকেন্ড ভারসাম্য টিকিয়ে সেই অনুভূতিকে পুনরায় ধরার চেষ্টা করুন। প্রতিটি প্রচেষ্টার পর এক মিনিট বিরতি নিন।
পড়া শেখাও অনুশীলনের অংশ
গারগানো বলেন, “অনেকেই শেখে না কীভাবে নিরাপদে পড়তে হয়।” আপনি চাইলে হাত ভাঁজ করে সামনে গড়িয়ে পড়তে পারেন, অথবা কার্টহুইলের মতো পাশ ঘুরে বেরিয়ে আসতে পারেন। এটি আপনাকে আঘাতের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করবে।

শ্বাস ও মনোযোগের ভারসাম্য
ড. লায়ন বলেন, “শ্বাস-নিয়ন্ত্রণ ও শরীরের টান বজায় রাখার কৌশল অনেকেই অবমূল্যায়ন করেন। আসলে এটি এক ধরনের চলমান ধ্যান।” হ্যান্ডস্ট্যান্ডের সময় শরীরের প্রতিটি অংশে নিয়ন্ত্রিত টান তৈরি করতে হয়, একই সঙ্গে গভীরভাবে শ্বাস নিতে হয়—এটি এক ধরনের মানসিক প্রশান্তিও আনে।
আত্মবিশ্লেষণের উপায়: ক্যামেরা
নিজের অনুশীলনের ভিডিও ধারণ করা অত্যন্ত কার্যকর। ড. লায়ন বলেন, “যা আপনাকে সোজা মনে হয়, বাস্তবে তা অনেক সময় নয়। নিজের শরীরকে ক্রিয়ায় দেখা রিয়েল-টাইম প্রতিক্রিয়া দেয়।” এতে ভঙ্গি ও অবস্থার সোজাসুজি ত্রুটি সহজেই ধরা পড়ে।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
শেষে কাইলের সুপারিশ, অনলাইন বা অফলাইন যে কোনো হ্যান্ডস্ট্যান্ড প্রশিক্ষণ কোর্সে যুক্ত হওয়া যেতে পারে। যেমন ক্যালিসথেনিকস ট্রেনিং সেন্টারের ভার্চুয়াল তিন–ধাপের প্রোগ্রাম, অথবা নিকটস্থ যোগ স্টুডিওর ওয়ার্কশপ। পেশাদার দিকনির্দেশনা অনুশীলনকে অনেক বেশি কাঠামোবদ্ধ ও কার্যকর করে তোলে।
ট্যাগ: #হ্যান্ডস্ট্যান্ড #শরীরচর্চা #ফিটনেস #নারীস্বাস্থ্য #ওয়ার্কআউট #সারাক্ষণ_রিপোর্ট
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















