রাতেও গরম, শরীরের রিসেট বন্ধ
দক্ষিণ এশিয়ার বড় শহরগুলোতে একসময় গভীর রাতে অন্তত একটু ঠান্ডা হাওয়া নামত। এখন সেই “রিলিফ আওয়ার” প্রায় গায়েব। দ্য আটলান্টিক জানাচ্ছে, ঢাকা, দিল্লি, করাচি—সবখানেই রাত বারোটার পরও ভারী গরম ও আর্দ্রতা থাকে। এতে শরীরের তাপমাত্রা আর হার্ট রেট পুরোপুরি নামে না, ফলে ঘুম technically হলেও বিশ্রাম হয় না। চিকিৎসকেরা বলছেন, মাথাব্যথা, চট করে রাগ ওঠা, মনোযোগে ভাটা—এসব ক্রমশ রাতের গরমের সাথেই লিঙ্কড। যারা রাস্তায় কাজ করে, রাইডার বা ভ্যানচালক, তারা সকালে কাজ শুরু করে আগেই ক্লান্ত অবস্থায়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে, আয় কমছে। এটি ধীরগতির সংকট; কোনো নাটকীয় বন্যা বা ঝড় নেই, কিন্তু লাখো মানুষ প্রতিদিন ঘুমের ঘাটতি জমাচ্ছে।

শীতল বাতাস এখন শ্রেণি বৈষম্য
সমস্যাটি বর্ণহীনও নয়, শ্রেণিভেদীও। টাকাওয়ালা পরিবার ইনভার্টার এসি, ব্যাটারি ব্যাকআপ ফ্যান, সিল করা জানালা—সব করতে পারছে। নিম্নআয়ের পরিবার এখনও সিলিং ফ্যানের গরম হাওয়া নিয়েই বেঁচে আছে। অনেক এলাকায় আবার লোডশেডিংয়ের সময় ডিজেল জেনারেটর চালু হয়, যেটা ঘরের ভেতরের বাতাস আরও ভারী আর দূষিত করে। নগর পরিকল্পনাবিদরা সতর্ক করেছেন, আমাদের বিল্ডিং কোড সাধারণত দুপুরের গরম মাথায় রেখে বানানো, রাতের বায়ু চলাচল বা ইনসুলেশনকে বাধ্যতামূলক করে না। এই গ্যাপ এখন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরিণত হচ্ছে, বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ আর যাদের আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট বা হার্টের অসুখ আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারকে “কুল স্লিপ”কে একধরনের পাবলিক সার্ভিস হিসেবে ভাবতে হবে—যেমন একসময় বিশুদ্ধ পানিকে দেখা হতো—নইলে গরম রাত মানেই হবে উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়া, মানসিক অস্থিরতা বাড়া, আর শহরের স্ট্রেস আরও চড়া হওয়া।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















