লোকাল সার্চকে বেচাকেনার জায়গা বানানো
টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাপল এমন এক পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে যেখানে ম্যাপস অ্যাপে আশেপাশের দোকান বা রেস্তোরাঁ খুঁজলে শীর্ষে দেখা যাবে স্পন্সরড রেজাল্ট—মানে যে ব্যবসা বেশি টাকা দিয়েছে, সে আগে আসবে। এটি অ্যাপ স্টোরের পেইড সার্চ অ্যাডের মডেলেরই স্থানীয় সংস্করণ। অ্যাপলের জন্য এটি বিশাল কারণ আইফোন ব্যবহারকারীরা নেভিগেশন ও লোকেশন সার্চের জন্য ম্যাপস যেভাবেই হোক খোলে। যদি “কফি নেয়ার মি” বা “ফোন রিপেয়ার” সার্চটাই বিজ্ঞাপনী স্পট হয়ে যায়, তবে সেটি নতুন, স্থায়ী আয়ের লাইন—যা আইফোন বিক্রির ওপর নির্ভরশীল নয়।
কিছু বিশ্লেষক বলছেন, এটিই দেখায় অ্যাপল এখন পরিষেবা ও সাবস্ক্রিপশনকেই বৃদ্ধির ইঞ্জিন হিসেবে ধরেছে। অ্যাপল টিভি+, আইক্লাউড স্টোরেজ, মিউজিক—এগুলো ইতোমধ্যে পুনরাবৃত্ত আয়ের উৎস। ম্যাপসের ভেতরে পেইড ভিজিবিলিটি যোগ হলে আইফোনের প্রতিটি লোকেশন সার্চ একেকটি সম্ভাব্য বিলবোর্ডে পরিণত হবে। অ্যাপল দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে “প্রাইভেসি-ফার্স্ট” কোম্পানি হিসেবে বাজারজাত করেছে, তাই প্রশ্ন উঠবে—এখন কি সেই প্রাইভেসি ব্র্যান্ডিংকে অর্থে রূপান্তর করা হচ্ছে?
ক্ষুদ্র ব্যবসার নতুন লড়াই
ঝুঁকিটা সবচেয়ে আগে লাগবে ছোট দোকানগুলোর গায়ে। আগের মতো কেবল “রিভিউ ভালো ছিল বলে দেখা গেল” আর হবে না; এখন হয়তো একই এলাকায় থাকা একটা ছোট নুডলস শপকে বড় চেইন ব্র্যান্ডের সঙ্গে বিড করতে হবে শুধু প্রথম স্ক্রিনে উঠতে। অর্থাৎ লোকাল ডিসকভারি ক্রমেই নৈতিক মানের চেয়ে আর্থিক সামর্থ্যের প্রতিযোগিতা হয়ে যাবে।
আইনগত চাপও বাড়তে পারে। অ্যাপ স্টোরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অ্যাপল আগেই একচেটিয়া আচরণের অভিযোগের মুখে। সমালোচকেরা বলবেন, ম্যাপসেও যদি অ্যাপলই ‘দরজা’ আর ‘টোল সংগ্রাহক’ হয়, তাহলে স্থানীয় ব্যবসাগুলোর হাতে আর কী বিকল্প থাকে? সমর্থকেরা বলবে, গুগল ম্যাপস তো অনেক আগেই স্পন্সরড ফলাফল দেখায়—অ্যাপল কেবল এখন সেটার বাজারে ঢুকছে। কিন্তু ব্যবহারকারীর জন্য বাস্তবতা হবে খুব সরল: “নিয়ার মি” মানে আর শুধু দূরত্ব নয়, বরং কার বিজ্ঞাপনের বাজেট বড়।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 

















