০৯:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশ ব্যাংকে অগ্নি নিরাপত্তা জোরদার, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবিগঞ্জের মাধবপুরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ নতুন ড্রোন মডেলে নিষেধাজ্ঞা আরও কড়াকড়ি যুক্তরাষ্ট্রে, তালিকায় ডিজেআইসহ সব বিদেশি ড্রোন জবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন: নারী-বান্ধব ক্যাম্পাস গড়তে জেসিডির ১৩ দফা ইশতেহার ক্রীড়াপ্রেমী প্রকৌশলী মাসুদ হাসান জামালীর ইন্তেকাল বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কে রাজনীতির ঊর্ধ্বে বাণিজ্যকে গুরুত্ব দিচ্ছে ঢাকা: ড. সালেহউদ্দিন হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, প্রাণ গেল পাঁচজনের রমজান সামনে রেখে ভারত ও পাকিস্তান থেকে এক লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন সরকারের শুরুর উত্থান ধরে রাখতে পারল না ডিএসই, চট্টগ্রাম বাজারে ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত অনলাইন ভ্যাট সেবায় নতুন পরিচয়, আইভাসের নাম বদলে ইভ্যাট সিস্টেম চালু এনবিআরের

শক্তিই ন্যায়ের প্রতীক— ক্ষমতার খেলায় ট্রাম্পের ‘শান্তি রাজনীতি’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈদেশিক কূটনীতি ক্রমেই এক নতুন মাত্রা নিচ্ছে—যেখানে শান্তির নামে চলছে ক্ষমতা বিস্তারের রাজনীতি। গাজা থেকে ইউক্রেন, ভেনেজুয়েলা থেকে মেক্সিকো—যেখানেই তিনি হস্তক্ষেপ করছেন, মূল উদ্দেশ্য তার ব্যক্তিগত প্রভাব ও প্রেসিডেন্টের কর্তৃত্ব বাড়ানো।


ক্ষমতার রাজনীতি ও ‘শান্তির’ অভিনয়

মিশরের রেড সাগরের তীরে শারম আল শেখে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক সম্মেলনে বিশাল বিলবোর্ডে ট্রাম্প ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসির ছবি ছিল—‘একসঙ্গে শান্তিতে’ শিরোনামে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এই শান্তি কাদের জন্য?
ট্রাম্পের কাছে শান্তির মানে হলো নিজের শক্তি প্রদর্শন। গাজা বা ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি, ভেনেজুয়েলার উপকূলে নৌবাহিনীর বোমা হামলা কিংবা মার্কিন শহরে সেনা মোতায়েন—সবকিছুই তার ক্ষমতা সুদৃঢ় করার হাতিয়ার।
তিনি যখন শান্তি চান, সেটিও ব্যক্তিকেন্দ্রিক—অন্য স্বৈরশাসকদের সঙ্গে করা চুক্তি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ দূর করে না। আর যখন যুদ্ধ করেন, তখন সেটিও একক সিদ্ধান্ত—কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই সামরিক পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করেন না।


গাজায় যুদ্ধবিরতি: জয় নাকি অভিনয়

অক্টোবরে গাজা যুদ্ধবিরতিতে শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি ও কিছু মানবিক সাহায্য প্রবেশে ট্রাম্প চাপ প্রয়োগ করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর। এতে তিনি কৃতিত্ব পেলেও, গাজাকে শাসন করবে বা হামাস কীভাবে নিরস্ত্র হবে—এই মৌলিক প্রশ্নগুলোর কোনো উত্তর মেলেনি।
ফলে শান্তির সূচনার বদলে এটি পরিণত হয় ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বিজয় প্রদর্শনীতে। ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যু, জাতিসংঘের গণহত্যার অভিযোগ—সবকিছুর মধ্যেই ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ‘সাহসী নেতা’ আখ্যা দিয়ে তার বিচার মওকুফের আহ্বান জানান। ইসরায়েলের তথাকথিত বিজয়কে প্রশংসা করেন।


‘নতুন বিশ্বব্যবস্থা’র উত্থান

গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে কেবল মানুষের দেহ নয়, বিধ্বস্ত হয়েছে নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাও। কিন্তু শারম আল শেখে উপস্থিত বহু নেতা তাতে আপত্তি তোলেননি।
মিশরের স্বৈরশাসক এল-সিসি—যিনি ৬০ হাজার রাজনৈতিক বন্দিকে আটক রেখেছেন—তাকে ট্রাম্প ‘অপরাধ দমনের সফল উদাহরণ’ বলে প্রশংসা করেন।
ইউরোপীয় ডানপন্থী নেতাদের মধ্যেও ট্রাম্প প্রশংসা করেন হাঙ্গেরির ভিক্টর অরবান ও ইতালির জর্জিয়া মেলোনিকে। তুরস্কের এরদোয়ান ও গালফ রাষ্ট্রগুলোর নেতারাও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ তালিকায় রয়েছেন—যাদের কেউ কেউ তার পারিবারিক ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন।


শান্তি নয়, প্রভাব বিস্তার

গাজায় মানবিক সংকট চললেও ট্রাম্পের মূল বার্তা ছিল তার ব্যক্তিগত ‘মহত্ব’ এবং নোবেল শান্তি পুরস্কারের প্রচারণা। কিন্তু এই ‘শান্তি’ মূলত স্বৈরশাসকদের মধ্যে গোপন চুক্তি, যেখানে জনগণের ভূমিকা নেই।
ইউক্রেন প্রসঙ্গে তিনি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে চাপ দিয়েছেন দেশের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড রাশিয়াকে ছেড়ে দিতে এবং মার্কিন খনিজ অধিকার স্বীকার করতে। ফলে ইউক্রেন নিরাপত্তাহীন অবস্থায় থেকে গেছে।


লাতিন আমেরিকায় নতুন আগ্রাসন

ট্রাম্প নিজেকে ‘শান্তির প্রেসিডেন্ট’ বললেও, তার নবনামকৃত ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার’ ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার নৌকা ধ্বংস করছে। তিনি দাবি করেছেন এটি মাদকবিরোধী অভিযান, যদিও ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাঠানোর বড় উৎস নয়।
আসলে লক্ষ্য হলো শাসন পরিবর্তন। ট্রাম্প ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ‘নার্কো–ট্র্যাফিকার’ ঘোষণা দিয়েছেন, সিআইএকে গোপন অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছেন এবং সীমান্তে সামরিক শক্তি মোতায়েন করেছেন।


আমেরিকার আঞ্চলিক আধিপত্যের নকশা

ট্রাম্পের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এখানেই শেষ নয়। তিনি মেক্সিকোতে বিমান হামলার হুমকি দিয়েছেন, পানামা খাল ফেরত দাবি করেছেন, মেক্সিকো উপসাগরের নাম বদলে দিয়েছেন ‘গালফ অব আমেরিকা’ হিসেবে, এমনকি গ্রিনল্যান্ড ও কানাডা সংযুক্ত করার ভাবনাও প্রকাশ করেছেন।
ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার নেতাদের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে একযোগে কাজ করছেন—যেখানে তিনি ২০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দিয়েছেন আর্জেন্টিনার মিত্র প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলেইকে।


অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব

ট্রাম্পের বৈদেশিক ‘শক্তি কূটনীতি’ তার অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। গাজার যুদ্ধকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের অজুহাত বানিয়েছেন।
তিনি ১৭৯৮ সালের ‘এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্ট’ ব্যবহার করে অভিবাসীদের দেশ থেকে বিতাড়িত করেছেন, আর প্রতিবাদ দমনে সেনা পাঠিয়েছেন শহরগুলোতে।


স্বৈরতন্ত্রের দিকে বিশ্ব

হাঙ্গেরির অরবান ও রাশিয়ার পুতিনের মতো নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে ট্রাম্প এমন এক বিশ্ব গড়ছেন, যেখানে আন্তর্জাতিক আইন ও যুদ্ধাপরাধের দায় এড়িয়ে স্বৈরশাসকদের জন্য জায়গা তৈরি হচ্ছে।
অরবান সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, যাতে পুতিনকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো যায় কোনো বাধা ছাড়াই।


শক্তির রাজনীতির বিপদ

এটি প্রকৃত শান্তি নয়, বরং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী নিয়মভিত্তিক বিশ্বের অবসান। শক্তিশালী রাষ্ট্রের আধিপত্য সাময়িকভাবে শৃঙ্খলা আনতে পারে, কিন্তু ইতিহাস প্রমাণ করে—যখন ‘শক্তিই ন্যায়’ হয়ে দাঁড়ায়, তখন ধ্বংসই হয় অনিবার্য।

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ ব্যাংকে অগ্নি নিরাপত্তা জোরদার, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

শক্তিই ন্যায়ের প্রতীক— ক্ষমতার খেলায় ট্রাম্পের ‘শান্তি রাজনীতি’

১২:৫১:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈদেশিক কূটনীতি ক্রমেই এক নতুন মাত্রা নিচ্ছে—যেখানে শান্তির নামে চলছে ক্ষমতা বিস্তারের রাজনীতি। গাজা থেকে ইউক্রেন, ভেনেজুয়েলা থেকে মেক্সিকো—যেখানেই তিনি হস্তক্ষেপ করছেন, মূল উদ্দেশ্য তার ব্যক্তিগত প্রভাব ও প্রেসিডেন্টের কর্তৃত্ব বাড়ানো।


ক্ষমতার রাজনীতি ও ‘শান্তির’ অভিনয়

মিশরের রেড সাগরের তীরে শারম আল শেখে অনুষ্ঠিত সাম্প্রতিক সম্মেলনে বিশাল বিলবোর্ডে ট্রাম্প ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসির ছবি ছিল—‘একসঙ্গে শান্তিতে’ শিরোনামে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এই শান্তি কাদের জন্য?
ট্রাম্পের কাছে শান্তির মানে হলো নিজের শক্তি প্রদর্শন। গাজা বা ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি, ভেনেজুয়েলার উপকূলে নৌবাহিনীর বোমা হামলা কিংবা মার্কিন শহরে সেনা মোতায়েন—সবকিছুই তার ক্ষমতা সুদৃঢ় করার হাতিয়ার।
তিনি যখন শান্তি চান, সেটিও ব্যক্তিকেন্দ্রিক—অন্য স্বৈরশাসকদের সঙ্গে করা চুক্তি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ দূর করে না। আর যখন যুদ্ধ করেন, তখন সেটিও একক সিদ্ধান্ত—কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই সামরিক পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করেন না।


গাজায় যুদ্ধবিরতি: জয় নাকি অভিনয়

অক্টোবরে গাজা যুদ্ধবিরতিতে শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি ও কিছু মানবিক সাহায্য প্রবেশে ট্রাম্প চাপ প্রয়োগ করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর। এতে তিনি কৃতিত্ব পেলেও, গাজাকে শাসন করবে বা হামাস কীভাবে নিরস্ত্র হবে—এই মৌলিক প্রশ্নগুলোর কোনো উত্তর মেলেনি।
ফলে শান্তির সূচনার বদলে এটি পরিণত হয় ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বিজয় প্রদর্শনীতে। ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যু, জাতিসংঘের গণহত্যার অভিযোগ—সবকিছুর মধ্যেই ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ‘সাহসী নেতা’ আখ্যা দিয়ে তার বিচার মওকুফের আহ্বান জানান। ইসরায়েলের তথাকথিত বিজয়কে প্রশংসা করেন।


‘নতুন বিশ্বব্যবস্থা’র উত্থান

গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে কেবল মানুষের দেহ নয়, বিধ্বস্ত হয়েছে নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাও। কিন্তু শারম আল শেখে উপস্থিত বহু নেতা তাতে আপত্তি তোলেননি।
মিশরের স্বৈরশাসক এল-সিসি—যিনি ৬০ হাজার রাজনৈতিক বন্দিকে আটক রেখেছেন—তাকে ট্রাম্প ‘অপরাধ দমনের সফল উদাহরণ’ বলে প্রশংসা করেন।
ইউরোপীয় ডানপন্থী নেতাদের মধ্যেও ট্রাম্প প্রশংসা করেন হাঙ্গেরির ভিক্টর অরবান ও ইতালির জর্জিয়া মেলোনিকে। তুরস্কের এরদোয়ান ও গালফ রাষ্ট্রগুলোর নেতারাও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ তালিকায় রয়েছেন—যাদের কেউ কেউ তার পারিবারিক ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন।


শান্তি নয়, প্রভাব বিস্তার

গাজায় মানবিক সংকট চললেও ট্রাম্পের মূল বার্তা ছিল তার ব্যক্তিগত ‘মহত্ব’ এবং নোবেল শান্তি পুরস্কারের প্রচারণা। কিন্তু এই ‘শান্তি’ মূলত স্বৈরশাসকদের মধ্যে গোপন চুক্তি, যেখানে জনগণের ভূমিকা নেই।
ইউক্রেন প্রসঙ্গে তিনি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে চাপ দিয়েছেন দেশের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড রাশিয়াকে ছেড়ে দিতে এবং মার্কিন খনিজ অধিকার স্বীকার করতে। ফলে ইউক্রেন নিরাপত্তাহীন অবস্থায় থেকে গেছে।


লাতিন আমেরিকায় নতুন আগ্রাসন

ট্রাম্প নিজেকে ‘শান্তির প্রেসিডেন্ট’ বললেও, তার নবনামকৃত ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার’ ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার নৌকা ধ্বংস করছে। তিনি দাবি করেছেন এটি মাদকবিরোধী অভিযান, যদিও ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাঠানোর বড় উৎস নয়।
আসলে লক্ষ্য হলো শাসন পরিবর্তন। ট্রাম্প ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ‘নার্কো–ট্র্যাফিকার’ ঘোষণা দিয়েছেন, সিআইএকে গোপন অভিযান চালানোর অনুমতি দিয়েছেন এবং সীমান্তে সামরিক শক্তি মোতায়েন করেছেন।


আমেরিকার আঞ্চলিক আধিপত্যের নকশা

ট্রাম্পের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এখানেই শেষ নয়। তিনি মেক্সিকোতে বিমান হামলার হুমকি দিয়েছেন, পানামা খাল ফেরত দাবি করেছেন, মেক্সিকো উপসাগরের নাম বদলে দিয়েছেন ‘গালফ অব আমেরিকা’ হিসেবে, এমনকি গ্রিনল্যান্ড ও কানাডা সংযুক্ত করার ভাবনাও প্রকাশ করেছেন।
ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার নেতাদের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে একযোগে কাজ করছেন—যেখানে তিনি ২০ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা দিয়েছেন আর্জেন্টিনার মিত্র প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলেইকে।


অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব

ট্রাম্পের বৈদেশিক ‘শক্তি কূটনীতি’ তার অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। গাজার যুদ্ধকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের অজুহাত বানিয়েছেন।
তিনি ১৭৯৮ সালের ‘এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্ট’ ব্যবহার করে অভিবাসীদের দেশ থেকে বিতাড়িত করেছেন, আর প্রতিবাদ দমনে সেনা পাঠিয়েছেন শহরগুলোতে।


স্বৈরতন্ত্রের দিকে বিশ্ব

হাঙ্গেরির অরবান ও রাশিয়ার পুতিনের মতো নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে ট্রাম্প এমন এক বিশ্ব গড়ছেন, যেখানে আন্তর্জাতিক আইন ও যুদ্ধাপরাধের দায় এড়িয়ে স্বৈরশাসকদের জন্য জায়গা তৈরি হচ্ছে।
অরবান সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, যাতে পুতিনকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো যায় কোনো বাধা ছাড়াই।


শক্তির রাজনীতির বিপদ

এটি প্রকৃত শান্তি নয়, বরং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী নিয়মভিত্তিক বিশ্বের অবসান। শক্তিশালী রাষ্ট্রের আধিপত্য সাময়িকভাবে শৃঙ্খলা আনতে পারে, কিন্তু ইতিহাস প্রমাণ করে—যখন ‘শক্তিই ন্যায়’ হয়ে দাঁড়ায়, তখন ধ্বংসই হয় অনিবার্য।