ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত: ট্রাম্পের অনুমতিতে পারমাণবিক সাবমেরিন প্রকল্প
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়াকে পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন নির্মাণের অনুমতি দেবে। বৃহস্পতিবার সকালে ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পোস্ট করে জানান, এটি দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
তিনি লিখেছেন, “পুরনো ডিজেলচালিত সাবমেরিন নয়, বরং আধুনিক ও দ্রুতগতির পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।” এই সাবমেরিনগুলো যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া শহরের একটি জাহাজঘাঁটিতে তৈরি করা হবে বলে ট্রাম্প পরে আরও এক পোস্টে উল্লেখ করেন।
বাণিজ্য চুক্তি ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সমন্বয়
এই অনুমোদন আসে বুধবার ঘোষিত এক নতুন বাণিজ্য চুক্তির পর। চুক্তি অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়া কম শুল্ক সুবিধার বিনিময়ে প্রতিবছর ২০০ বিলিয়ন ডলার নগদ অর্থ প্রদান করবে এবং অতিরিক্ত ১৫০ বিলিয়ন ডলার যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ নির্মাণ প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে।

ট্রাম্প বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ জাহাজনির্মাতা দেশ, আর আমেরিকান শিপবিল্ডিং শিল্প পুনরুজ্জীবন তার প্রশাসনের অগ্রাধিকার। তিনি তার সফরকে “দক্ষিণ কোরিয়ার মহান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক দারুণ অভিজ্ঞতা” বলে আখ্যা দেন।
পারমাণবিক জ্বালানি চুক্তিতে ছাড়ের অনুরোধ
বৈঠকে প্রেসিডেন্ট লি ট্রাম্পের কাছে দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়াকরণে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার আহ্বান জানান। তিনি যুক্তি দেন, পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন থাকলে দক্ষিণ কোরিয়া চীন ও উত্তর কোরিয়ার সাবমেরিনগুলোকে আরও কার্যকরভাবে ট্র্যাক করতে পারবে।
লি বলেন, “এতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর ওপর চাপও অনেকটা কমে আসবে।” তিনি আরও স্পষ্ট করে জানান, “আমাদের লক্ষ্য কোনো পারমাণবিক অস্ত্রবাহী সাবমেরিন তৈরি নয়, বরং সমুদ্রপথে প্রতিরক্ষার সক্ষমতা বাড়ানো।”

ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও প্রতিক্রিয়া
বর্তমানে প্রায় ২৮,০০০ মার্কিন সেনা দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছে, যা উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসন প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নতুন সাবমেরিন প্রকল্পটি দুই দেশের নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও গভীর করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, এই ঘোষণা এমন এক সময় এল যখন উত্তর কোরিয়া গত মার্চে নিজেদের পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন প্রদর্শনের দাবি করেছিল। পিয়ংইয়ংয়ের সেই দাবি আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল, কারণ এটি আঞ্চলিক অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমতি শুধু প্রযুক্তিগত নয়, রাজনৈতিকভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ এক পদক্ষেপ। এটি যুক্তরাষ্ট্র–দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং একই সঙ্গে চীন ও উত্তর কোরিয়ার সামরিক উপস্থিতির প্রতি এক কৌশলগত বার্তা হিসেবে কাজ করবে।
#যুক্তরাষ্ট্র, #দক্ষিণ_কোরিয়া, #পারমাণবিক_#সাবমেরিন,# ডোনাল্ড_ট্রাম্প, #লি_জে_মিয়ং,# প্রতিরক্ষা, #চীন,# উত্তর_কোরিয়া
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















