০৯:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১৩২) জনমত জরিপ: আমেরিকানরা শুধু জেরিম্যান্ডারিং সহ্যই করছে না — তারা এটিকে সমর্থনও করছে টম হ্যাংকসের নস্টালজিয়া ভ্রমণ: দিস ওয়ার্ল্ড অফ টুমরো মিলিয়ন মানুষের প্রিয় স্বাদ: কস্টকোর ১.৫০ ডলারের হট ডগ কম্বো আগের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৬২) দ্য ইকোনমিস্ট -এ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সাক্ষাৎকার কাবুলের ইন্টারকনটিনেন্টাল হোটেল এবং আফগানিস্তানের ইতিহাস জার্মান খামারের সমকামী ভেড়ার উল দিয়ে অভিনব ফ্যাশন শো ১৭০ বছরের পুরনো টেলিগ্রাফ মিডিয়া গ্রুপ কিনতে আলোচনায় ডেইলি মেইল প্রকাশক টাকার বিনিময়ে ইউজারনেম বিক্রি শুরু করল এক্স, বাড়ল ডিজিটাল পরিচয়ের দাম

অজ্ঞাত লাশ ও কারা হেফাজতে মৃত্যু বাড়ছে—আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় প্রশ্ন তুলছে এমএসএফ

অক্টোবর মাসে দেশে অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার ও কারা হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা সেপ্টেম্বরে তুলনায় স্পষ্টভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। সংস্থাটির মতে, এসব প্রবণতা জনজীবনে নিরাপত্তাহীনতা বাড়াচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে জনআস্থায় প্রশ্ন তৈরি করছে।

প্রতিবেদন উৎস ও পদ্ধতি

  • • এমএসএফ প্রতি মাসে মানবাধিকার পরিস্থিতির সারসংক্ষেপ প্রকাশ করে।
  • • অক্টোবরের প্রতিবেদনটি পত্রিকায় প্রকাশিত খবর ও সংস্থার নিজস্ব অনুসন্ধানের ভিত্তিতে প্রস্তুত।

মূল চিত্র—সংক্ষেপে

  • • অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার: ৬৬ (সেপ্টেম্বরে ৫২)
  • • কারা হেফাজতে মৃত্যু: ১৩ (সেপ্টেম্বরে ৮)
  • • রাজনৈতিক সহিংসতা: ৪৯টি ঘটনা; নিহত ২, আহত ৫৪৭ (সেপ্টেম্বরে ৩৮টি)
  • • গণপিটুনি: ৪৪টি ঘটনা; নিহত ১২ (সেপ্টেম্বরে নিহত ২৪)

জুলাই মাসে অজ্ঞাতনামা ৫১ লাশ উদ্ধার

অজ্ঞাতনামা লাশ: বেড়ে চলা উদ্বেগ

সংখ্যা ও ধরণ

  • • অক্টোবরে মোট ৬৬টি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার—এটি শুধু “অনাকাঙ্ক্ষিত” নয়, নাগরিক নিরাপত্তার বড় সংকেত।
  • • লাশের অবস্থান: নদী–ডোবা, সড়ক–মহাসড়কের ধারে, সেতুর নিচে, রেললাইনের পাশে, ফসলি জমি ও পরিত্যক্ত স্থানে বেশি।
  • • কিছু লাশ গলাকাটা, বস্তাবন্দী, রক্তাক্ত বা আঘাতচিহ্নসহ উদ্ধার হয়েছে—সম্ভাব্য অপরাধের ইঙ্গিত।

বয়স ও লিঙ্গ–বিন্যাস (এমএসএফের হিসাব)

  • • শিশু ১ (৭ বছর), কিশোর ১ (১৫ বছর)
  • • নারী ১১, পুরুষ ৫৩
  • • বয়সভিত্তিক:
    • ২০–৩০ বছর: পুরুষ ১৫, নারী ২
    • ৩১–৪০ বছর: পুরুষ ১৯, নারী ৬
    • ৪১–৫০ বছর: নারী ১, পুরুষ ৫
    • ৫০ বছরের বেশি: পুরুষ ১১, নারী ১
    • তিনজনের বয়স নির্ধারিত হয়নি

এমএসএফের পর্যবেক্ষণ

  • • কেবল উদ্ধার নয়, পরিচয় শনাক্ত করাই জরুরি—অপরাধতদন্ত, সুরতহাল–ময়নাতদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
  • • পরিচয় শনাক্তে ব্যর্থতা ও তদন্তের ধীরগতি জনআস্থায় আঘাত করছে; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

বম জাতিগোষ্ঠীর ৩ নাগরিকের কারা হেফাজতে মৃত্যুর বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি ১৫৫  নাগরিকের

কারা হেফাজতে মৃত্যু: অব্যাহত ঊর্ধ্বগতি

সংখ্যা ও কারাগারভিত্তিক চিত্র

  • • অক্টোবরে হেফাজতে মৃত্যু ১৩; সেপ্টেম্বরে ছিল ৮।
  • • মরদেহের পরিচয়াবলি: ৬ জন কয়েদি, ৭ জন হাজতি।
  • • কারাগার অনুসারে:
    • ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ): ৪ কয়েদি, ২ হাজতি
    • কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার (গাজীপুর): ১ কয়েদি
    • শেরপুর জেলা কারাগার: ১ কয়েদি
    • খুলনা, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলা কারাগার: প্রতিটিতে ১ জন করে হাজতি
  • • সব বন্দীর মৃত্যু কারাগারের বাইরে হাসপাতালে হয়েছে—কারাগারের ভেতরের স্বাস্থ্যঝুঁকি, চিকিৎসায় বিলম্ব বা রেফারেল প্রোটোকল নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলছে।

এমএসএফের মন্তব্য (নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের সারকথা)

  • • হেফাজতে মৃত্যু ও অজ্ঞাত লাশ—দুটোই মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির ইঙ্গিত।
  • • লাশ উদ্ধার করেই দায়িত্ব শেষ নয়; পরিচয় শনাক্ত, সুরতহাল–ময়নাতদন্ত, মৃত্যুকারণ নিরূপণ ও মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর—সবই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তব্য।
  • • বর্তমান চর্চায় “অস্বাভাবিক মৃত্যু” মামলা করেই থেমে যাওয়া উচিত নয়; জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে।

রাজনৈতিক সহিংসতা ও গণপিটুনিতে জুলাই মাসে নিহত ২৫: এমএসএফ | The Daily Star  Bangla

রাজনৈতিক সহিংসতা ও গণপিটুনি: ধারাবাহিকতা ও পরিবর্তন

রাজনৈতিক সহিংসতা

  • • অক্টোবরে ৪৯টি ঘটনায় ৫৪৯ জন ভুক্তভোগী—নিহত ২ (উভয়েই বিএনপির কর্মী–সমর্থক), আহত ৫৪৭; গুলিবিদ্ধ ৪।
  • • সেপ্টেম্বরে ঘটনা ছিল ৩৮টি—সেখান থেকে অক্টোবরে সংখ্যায় বৃদ্ধি।
  • • ১১টি ঘটনায় পার্টি অফিস, বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা–অগ্নিকাণ্ড ও ককটেল বিস্ফোরণ হলেও হতাহতের খবর নেই—ভয় প্রদর্শন ও সম্পদনাশের প্রবণতা জোরালো।

গণপিটুনি

  • • ঘটনা ৪৪ (সেপ্টেম্বরে ৪৩)—সংখ্যায় সামান্য বৃদ্ধি।
  • • নিহত ১২—যদিও সেপ্টেম্বরে নিহত ছিল ২৪; তবু ‘জনশাস্তি’ নামের এ বেআইনি সহিংসতা থামছে না।

বিশ্লেষণ: জননিরাপত্তা ও জবাবদিহির ঘাটতি

  • • অজ্ঞাত লাশ ও হেফাজতে মৃত্যু বাড়া—উভয়ই তদন্তক্ষমতা, ফরেনসিক অবকাঠামো, কারাগারের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও নজরদারির দুর্বলতা তুলে ধরে।
  • • রাজনৈতিক সহিংসতা ও গণপিটুনি—আইনের শাসনের বদলে শক্তির প্রকাশ ও জনরোষকে ‘আইনের বিকল্প’ বানানোর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
  • • আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আস্থাহীনতা গভীর হলে অপরাধতদন্তে সহযোগিতা কমে, বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়—দুষ্টচক্র আরও শক্তিশালী হয়।

 

করণীয়: নীতি ও প্রক্রিয়ায় তাৎক্ষণিক অগ্রাধিকার

অজ্ঞাত লাশের পরিচয় শনাক্তে জাতীয় প্রোটোকল

  • • দ্রুত ডিএনএ প্রোফাইলিং, নিখোঁজ ডেটাবেইসের সঙ্গে মিল, একীভূত আইটি প্ল্যাটফর্ম চালু।

হেফাজতে মৃত্যুর স্বয়ংক্রিয় স্বাধীন তদন্ত

  • • প্রতিটি ঘটনায় তৃতীয় পক্ষের মেডিকেল বোর্ড, সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ, টাইমলাইন প্রকাশ।

কারাগারের স্বাস্থ্যমান উন্নয়ন

  • • স্ক্রিনিং–রেফারেল গাইডলাইন, জরুরি চিকিৎসায় সাড়া–সময়ের মানদণ্ড, মানবসম্পদ–ওষুধ–ডায়াগনস্টিক সক্ষমতা বৃদ্ধি।

রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিরোধে সর্বদলীয় আচরণবিধি

  • • সমাবেশ–মিছিল–নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে যৌথ মনিটরিং ও দ্রুত বিচার ট্র্যাক।

গণপিটুনি প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও পুলিশি সাড়া–সময়ের মানদণ্ড

  • • ‘ভুয়া অপরাধী’ চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত গুজব দমনে তাৎক্ষণিক তথ্যপ্রচার ও কমিউনিটি পুলিশিং সক্রিয়করণ।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি

  • • মাসিকভাবে হেফাজতে মৃত্যু, অজ্ঞাত লাশ, তদন্তের অগ্রগতি ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থার ড্যাশবোর্ড প্রকাশ।
জনপ্রিয় সংবাদ

পুরান ঢাকার অতীত দিনের কথা ( কিস্তি-১৩২)

অজ্ঞাত লাশ ও কারা হেফাজতে মৃত্যু বাড়ছে—আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় প্রশ্ন তুলছে এমএসএফ

০৬:৪৩:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

অক্টোবর মাসে দেশে অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার ও কারা হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা সেপ্টেম্বরে তুলনায় স্পষ্টভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। সংস্থাটির মতে, এসব প্রবণতা জনজীবনে নিরাপত্তাহীনতা বাড়াচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে জনআস্থায় প্রশ্ন তৈরি করছে।

প্রতিবেদন উৎস ও পদ্ধতি

  • • এমএসএফ প্রতি মাসে মানবাধিকার পরিস্থিতির সারসংক্ষেপ প্রকাশ করে।
  • • অক্টোবরের প্রতিবেদনটি পত্রিকায় প্রকাশিত খবর ও সংস্থার নিজস্ব অনুসন্ধানের ভিত্তিতে প্রস্তুত।

মূল চিত্র—সংক্ষেপে

  • • অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার: ৬৬ (সেপ্টেম্বরে ৫২)
  • • কারা হেফাজতে মৃত্যু: ১৩ (সেপ্টেম্বরে ৮)
  • • রাজনৈতিক সহিংসতা: ৪৯টি ঘটনা; নিহত ২, আহত ৫৪৭ (সেপ্টেম্বরে ৩৮টি)
  • • গণপিটুনি: ৪৪টি ঘটনা; নিহত ১২ (সেপ্টেম্বরে নিহত ২৪)

জুলাই মাসে অজ্ঞাতনামা ৫১ লাশ উদ্ধার

অজ্ঞাতনামা লাশ: বেড়ে চলা উদ্বেগ

সংখ্যা ও ধরণ

  • • অক্টোবরে মোট ৬৬টি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার—এটি শুধু “অনাকাঙ্ক্ষিত” নয়, নাগরিক নিরাপত্তার বড় সংকেত।
  • • লাশের অবস্থান: নদী–ডোবা, সড়ক–মহাসড়কের ধারে, সেতুর নিচে, রেললাইনের পাশে, ফসলি জমি ও পরিত্যক্ত স্থানে বেশি।
  • • কিছু লাশ গলাকাটা, বস্তাবন্দী, রক্তাক্ত বা আঘাতচিহ্নসহ উদ্ধার হয়েছে—সম্ভাব্য অপরাধের ইঙ্গিত।

বয়স ও লিঙ্গ–বিন্যাস (এমএসএফের হিসাব)

  • • শিশু ১ (৭ বছর), কিশোর ১ (১৫ বছর)
  • • নারী ১১, পুরুষ ৫৩
  • • বয়সভিত্তিক:
    • ২০–৩০ বছর: পুরুষ ১৫, নারী ২
    • ৩১–৪০ বছর: পুরুষ ১৯, নারী ৬
    • ৪১–৫০ বছর: নারী ১, পুরুষ ৫
    • ৫০ বছরের বেশি: পুরুষ ১১, নারী ১
    • তিনজনের বয়স নির্ধারিত হয়নি

এমএসএফের পর্যবেক্ষণ

  • • কেবল উদ্ধার নয়, পরিচয় শনাক্ত করাই জরুরি—অপরাধতদন্ত, সুরতহাল–ময়নাতদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
  • • পরিচয় শনাক্তে ব্যর্থতা ও তদন্তের ধীরগতি জনআস্থায় আঘাত করছে; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

বম জাতিগোষ্ঠীর ৩ নাগরিকের কারা হেফাজতে মৃত্যুর বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি ১৫৫  নাগরিকের

কারা হেফাজতে মৃত্যু: অব্যাহত ঊর্ধ্বগতি

সংখ্যা ও কারাগারভিত্তিক চিত্র

  • • অক্টোবরে হেফাজতে মৃত্যু ১৩; সেপ্টেম্বরে ছিল ৮।
  • • মরদেহের পরিচয়াবলি: ৬ জন কয়েদি, ৭ জন হাজতি।
  • • কারাগার অনুসারে:
    • ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ): ৪ কয়েদি, ২ হাজতি
    • কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার (গাজীপুর): ১ কয়েদি
    • শেরপুর জেলা কারাগার: ১ কয়েদি
    • খুলনা, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম, সিরাজগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলা কারাগার: প্রতিটিতে ১ জন করে হাজতি
  • • সব বন্দীর মৃত্যু কারাগারের বাইরে হাসপাতালে হয়েছে—কারাগারের ভেতরের স্বাস্থ্যঝুঁকি, চিকিৎসায় বিলম্ব বা রেফারেল প্রোটোকল নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলছে।

এমএসএফের মন্তব্য (নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের সারকথা)

  • • হেফাজতে মৃত্যু ও অজ্ঞাত লাশ—দুটোই মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির ইঙ্গিত।
  • • লাশ উদ্ধার করেই দায়িত্ব শেষ নয়; পরিচয় শনাক্ত, সুরতহাল–ময়নাতদন্ত, মৃত্যুকারণ নিরূপণ ও মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর—সবই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তব্য।
  • • বর্তমান চর্চায় “অস্বাভাবিক মৃত্যু” মামলা করেই থেমে যাওয়া উচিত নয়; জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা বাড়াতে হবে।

রাজনৈতিক সহিংসতা ও গণপিটুনিতে জুলাই মাসে নিহত ২৫: এমএসএফ | The Daily Star  Bangla

রাজনৈতিক সহিংসতা ও গণপিটুনি: ধারাবাহিকতা ও পরিবর্তন

রাজনৈতিক সহিংসতা

  • • অক্টোবরে ৪৯টি ঘটনায় ৫৪৯ জন ভুক্তভোগী—নিহত ২ (উভয়েই বিএনপির কর্মী–সমর্থক), আহত ৫৪৭; গুলিবিদ্ধ ৪।
  • • সেপ্টেম্বরে ঘটনা ছিল ৩৮টি—সেখান থেকে অক্টোবরে সংখ্যায় বৃদ্ধি।
  • • ১১টি ঘটনায় পার্টি অফিস, বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা–অগ্নিকাণ্ড ও ককটেল বিস্ফোরণ হলেও হতাহতের খবর নেই—ভয় প্রদর্শন ও সম্পদনাশের প্রবণতা জোরালো।

গণপিটুনি

  • • ঘটনা ৪৪ (সেপ্টেম্বরে ৪৩)—সংখ্যায় সামান্য বৃদ্ধি।
  • • নিহত ১২—যদিও সেপ্টেম্বরে নিহত ছিল ২৪; তবু ‘জনশাস্তি’ নামের এ বেআইনি সহিংসতা থামছে না।

বিশ্লেষণ: জননিরাপত্তা ও জবাবদিহির ঘাটতি

  • • অজ্ঞাত লাশ ও হেফাজতে মৃত্যু বাড়া—উভয়ই তদন্তক্ষমতা, ফরেনসিক অবকাঠামো, কারাগারের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও নজরদারির দুর্বলতা তুলে ধরে।
  • • রাজনৈতিক সহিংসতা ও গণপিটুনি—আইনের শাসনের বদলে শক্তির প্রকাশ ও জনরোষকে ‘আইনের বিকল্প’ বানানোর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
  • • আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আস্থাহীনতা গভীর হলে অপরাধতদন্তে সহযোগিতা কমে, বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়—দুষ্টচক্র আরও শক্তিশালী হয়।

 

করণীয়: নীতি ও প্রক্রিয়ায় তাৎক্ষণিক অগ্রাধিকার

অজ্ঞাত লাশের পরিচয় শনাক্তে জাতীয় প্রোটোকল

  • • দ্রুত ডিএনএ প্রোফাইলিং, নিখোঁজ ডেটাবেইসের সঙ্গে মিল, একীভূত আইটি প্ল্যাটফর্ম চালু।

হেফাজতে মৃত্যুর স্বয়ংক্রিয় স্বাধীন তদন্ত

  • • প্রতিটি ঘটনায় তৃতীয় পক্ষের মেডিকেল বোর্ড, সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ, টাইমলাইন প্রকাশ।

কারাগারের স্বাস্থ্যমান উন্নয়ন

  • • স্ক্রিনিং–রেফারেল গাইডলাইন, জরুরি চিকিৎসায় সাড়া–সময়ের মানদণ্ড, মানবসম্পদ–ওষুধ–ডায়াগনস্টিক সক্ষমতা বৃদ্ধি।

রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিরোধে সর্বদলীয় আচরণবিধি

  • • সমাবেশ–মিছিল–নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে যৌথ মনিটরিং ও দ্রুত বিচার ট্র্যাক।

গণপিটুনি প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও পুলিশি সাড়া–সময়ের মানদণ্ড

  • • ‘ভুয়া অপরাধী’ চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত গুজব দমনে তাৎক্ষণিক তথ্যপ্রচার ও কমিউনিটি পুলিশিং সক্রিয়করণ।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি

  • • মাসিকভাবে হেফাজতে মৃত্যু, অজ্ঞাত লাশ, তদন্তের অগ্রগতি ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থার ড্যাশবোর্ড প্রকাশ।