বেইজিংয়ের ধৈর্য বনাম ওয়াশিংটনের ঝলক
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে এবারের এপিক (APEC) সম্মেলনের প্রথম আলো ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসেছিলেন, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন, কিছু শুল্ক হালকা করার অস্থায়ী সমঝোতা হয়েছে এবং সংবাদ শিরোনাম গেছে এই বার্তায় যে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই শক্তির মধ্যে টানাপোড়েন কিছুটা নরম হচ্ছে। কিন্তু ট্রাম্প দেশ ছাড়ার পরই স্পষ্ট হয়ে যায়, আসল কাজটি বাকি। চীন পুরো সপ্তাহটি কাজে লাগিয়ে একের পর এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বসেছে, অবকাঠামো ও সরবরাহশৃঙ্খল নিয়ে প্রস্তাব দিয়েছে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শিল্পায়নে নিজেদের আরও গভীরভাবে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এতে ছোট অর্থনীতিগুলোর মধ্যে এই প্রশ্নটা জোরে উঠেছে—আলো নিভে যাওয়ার পর আমেরিকা কি আগ্রহ ধরে রাখতে পারবে, নাকি আবারও ফাঁকা মাঠ পেলেই চীন খেলাটা এগিয়ে নেবে।
ইন্দো-প্যাসিফিক সমীকরণে নতুন চাপ
সপ্তাহজুড়ে আলোচনায় আরেকটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে—এখানকার দেশগুলো নিরাপত্তায় এখনও মার্কিন নৌ-সমর্থনই চায়, বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগর ও তাইওয়ান প্রণালিতে। কিন্তু একই সঙ্গে তারা চীনা কাঁচামাল, যন্ত্রাংশ ও পর্যটকের ওপরও নির্ভরশীল। এই দুই চাহিদার মাঝেই বেইজিং এখন দর কষছে। তারা জানিয়ে দিয়েছে, বিরল ধাতু ও কিছু কৃষিপণ্য সরবরাহ অব্যাহত থাকবে যদি ওয়াশিংটন এক বছরের জন্য কয়েক দফা শুল্ক বাড়ানো স্থগিত রাখে। বদলে চীন সমুদ্রবিষয়ক আচরণবিধি দ্রুত চূড়ান্ত করতে বলেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গড়া বিভিন্ন প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞা থেকে দূরে থাকার তাগিদ দিয়েছে। এতে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলো বুঝতে পারছে, শুধু মার্কিন প্রেসিডেন্টের আগমনেই ভারসাম্য আসবে না; প্রায় সারা বছরই দৃশ্যমান উপস্থিতি রাখতে হবে। টোকিও তাই মধ্য এশিয়া থেকে শুরু করে প্রশান্ত মহাসাগরের ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র পর্যন্ত নতুন অংশীদার খুঁজছে, যাতে চীন-আমেরিকার দ্বৈরথে প্রতিবার একইভাবে পক্ষ নিতে না হয়।
																			
																সারাক্ষণ রিপোর্ট 								 



















