ভিডিও গেমসের আধিপত্য: প্রযুক্তির পরিবর্তন এবং সামাজিক জীবনে এর ভূমিকা
গত এক দশকে ভিডিও গেমসের প্রতি ছেলেদের আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী ছেলেরা তাদের সপ্তাহে গেম খেলার সময় প্রায় দ্বিগুণ করেছে, প্রায় ১০ ঘণ্টা। আমেরিকান টাইম ইউজ সার্ভে থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, এই পরিবর্তন প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সম্পর্কিত, যা গেমসকে আরও আকর্ষণীয় এবং সহজলভ্য করেছে।
ভিডিও গেমস এবং শারীরিক ক্রিয়াকলাপের প্রভাব
গেম খেলার এই সময় বৃদ্ধি শারীরিক ক্রিয়াকলাপ, সহপাঠীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ, পড়াশোনা, চাকরি এবং ঘুমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শিক্ষকরা বলছেন, এটি শ্রেণীকক্ষে মনোযোগে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে এবং অনেকে মনে করছেন, গেম খেলা আধুনিক তরুণদের জীবনকে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় আবদ্ধ করে ফেলছে। তবে, গবেষকরা এবং ছেলেরা জানিয়েছেন, এই ভার্চুয়াল দুনিয়াতে তারা বাস্তব বন্ধুত্ব তৈরি করে এবং এর মাধ্যমে একে অপরের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে।

গেমিং এবং সামাজিক সম্পর্ক
পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপে দেখা গেছে, ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী ৯৭ শতাংশ ছেলেই ভিডিও গেম খেলে, যেখানে ৭৩ শতাংশ মেয়ে গেম খেললেও ছেলেরা অনেক বেশি সময় খেলে। ছেলেরা সাধারণত গেম খেলতে বন্ধুদের সাথে যুক্ত থাকে, যেমন ফেসটাইম বা ডিসকর্ডে কথা বলার মাধ্যমে। গবেষকরা বলেন, এই গেমিং একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সুযোগ, যেখানে ছেলেরা তাদের সম্পর্কগুলো গড়ে তোলে।
প্রযুক্তির পরিবর্তন এবং গেমের আসক্তি
২০১০ দশকে গেমসের প্রযুক্তি এবং ব্যবসায়িক মডেলে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। অনেক গেম এখন ফ্রি টু প্লে (বিনা মূল্যে শুরু) হওয়ায়, গেম কোম্পানিগুলোর লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে খেলোয়াড়দের সময় অধিক করে তোলা এবং তাদের কাছে ছোটখাটো পণ্য বিক্রি করা। এই ধরনের গেমস নিরবচ্ছিন্নভাবে আপডেট হয় এবং খেলোয়াড়দের আকর্ষণ বজায় রাখে।
গেমিংয়ের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক
গেমিং একদিকে যেখানে মস্তিষ্কের কিছু উন্নতি ঘটায়, সেখানে এর আসক্তি এবং অতিরিক্ত সময় ব্যয় অনেকের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে ছেলেরা গেমিংয়ের প্রতি বেশী আসক্ত হয়ে পড়ছে, যা তাদের বাস্তব জীবনের সম্পর্ক এবং শারীরিক কার্যকলাপে বাধা সৃষ্টি করছে।

পিতামাতার ভূমিকায় প্রয়োজনীয় সতর্কতা
এমনকি গবেষকরা মনে করেন, গেমিং এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে, তবে পিতামাতাদের উচিত গেমের প্রতি সন্তানের সময় ব্যবস্থাপনা করা এবং তাদের গেম খেলার নিরাপত্তা বিষয়ক সতর্কতা দেওয়া। কিছু গেম যেমন নিরাপদ, আবার কিছু গেমে সহিংসতা বা বাজি ধরা সংক্রান্ত উপাদান থাকে, যা পিতামাতাদের জানানো উচিত।
এছাড়া, কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, প্রযুক্তি কোম্পানির উচিত এমন গেমগুলো বন্ধ করা, যা শিশুদের জন্য অনিরাপদ বা আসক্তিকর হতে পারে।
#ভিডিওগেমস #প্রযুক্তি #যুবসমাজ #গেমিং #সামাজিকসম্পর্ক #গবেষণা
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















