জ্বালানি ও প্রযুক্তি সরবরাহ নিরাপদ করার কৌশল
জাপানের মিনামিতোরিশিমা নামের ক্ষুদ্র দ্বীপের আশপাশের সমুদ্রভাগে থাকা দুর্লভ মাটিখনিজ যৌথভাবে উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে টোকিও ও ওয়াশিংটন। শুক্রবার টোকিওতে ঘোষিত এই সমঝোতার মাধ্যমে দু’দেশ এমন এক সরবরাহচ্যানেল গড়তে চায়, যা চীনের ওপর নির্ভরতা অনেকটাই কমাবে। কারণ বৈদ্যুতিক গাড়ি, বায়ু টারবাইন, চিপ ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে ব্যবহৃত বেশিরভাগ রেয়ার আর্থ এখনো চীনের মাধ্যমে পরিশোধিত হয় এবং বেইজিং কয়েক দফা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ তুলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। জাপানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সমুদ্রতল জরিপ, প্রযুক্তি বিনিময় ও পরে বাণিজ্যিক উত্তোলন—সব ধাপেই যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত থাকবে। অন্যদিকে মার্কিন পক্ষ বলছে, এটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ‘ঝুঁকি-বণ্টনমূলক’ শিল্পনীতির অংশ, যাতে কোনো একক দেশের সিদ্ধান্তেই জাপান বা যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ জ্বালানি প্রকল্প থমকে না যায়। ২০২৩ সালের জরিপে দ্বীপটির কাছে এমন খনিজের অস্তিত্ব নিশ্চিত হলেও ব্যয়, পরিবহন ও পরিশোধন অবকাঠামোর অভাবে প্রকল্পটি ধীর ছিল; নতুন চুক্তি সেই স্থবিরতা ভাঙবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পরিবেশগত শর্ত ও ভূরাজনৈতিক বার্তা
তবে জাপান স্বীকার করেছে, গভীর সমুদ্রে খনিজ উত্তোলন সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তাই পলির বিস্তার কমানো, মাছ ধরার ওপর প্রভাব মাপা এবং টানা নজরদারির মতো শর্ত বাধ্যতামূলক করা হবে। দেশটির পরিবেশ সংগঠনগুলো বলছে, এই প্রকল্প যদি অনুমোদন পায়, তাহলে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের অন্য দেশগুলোও একই নজির দেখিয়ে গভীর সমুদ্রে খনন শুরু করতে পারে। কৌশলগত দৃষ্টিতে এটি চীন–যুক্তরাষ্ট্র প্রতিযোগিতাকে আরও ছড়িয়ে দেবে—কারণ রেয়ার আর্থের স্থিতিশীল মজুদ থাকলে টোকিও ও ওয়াশিংটনের প্রতিরক্ষা ও উচ্চপ্রযুক্তি শিল্প চীনের চাপ অনেকটাই ঠেকাতে পারবে। তা সত্ত্বেও বাস্তব খনিজ বাজারে এই প্রকল্পের ফল দেখা দিতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে; তাই জাপানি উৎপাদকরা পুনর্ব্যবহার ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অংশীদারিত্বও চালিয়ে যাবে। এক অর্থে, আজকের ঘোষণা তাৎক্ষণিক সরবরাহের চেয়ে অনেক বেশি প্রতীকী ও রাজনৈতিক বার্তা বহন করছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















