০৪:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
স্ট্রেঞ্জার থিংস ৫ ইভেন্টে ফটোগ্রাফারকে ‘ইউ স্মাইল’—মিলি ববি ব্রাউনের এক ঝটকা জবাব ভাইরাল অনলাইন স্ক্যাম এখন ডকুমেন্টারির গল্প নয়—রোলিং স্টোন জানালো ঠকবে কি না, বুঝবেন কীভাবে কানাডা–মার্কিন সীমান্তে আরও তেল নিয়ে যেতে এনারব্রিজের ১.৪ বিলিয়ন ডলারের নতুন পরিকল্পনা মাইক্রোসফটকে বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে ওপেনএআই—ফাঁস হওয়া তথ্য জানাল এআই দৌড়ের আসল খরচ অপরাধ আর অভিবাসন ইস্যুতে ডান দিকে সরে যাচ্ছে চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছুটির দিনেও বিষাক্ত বাতাসে ঢাকা, রাজধানীবাসীর ‘স্বাভাবিক’ হয়ে যাওয়া অস্বস্তি এভরিওয়ান’স আ স্টার!’–এ বয়ব্যান্ড তকমা উল্টে দিল ৫ সেকেন্ডস অব সামার যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমারে বেঁচে থাকার শেষ ভরসা ছাদজুড়ে সোলার প্যানেল ইইউ আইনের চাপে ইউরোপে হোয়াটসঅ্যাপে তৃতীয় পক্ষের চ্যাট আসছে যুক্তরাষ্ট্র–দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ পারমাণবিক সাবমেরিন পরিকল্পনা আলোচনায়

দুই বিচারকের পদত্যাগে পাকিস্তানে সাংবিধানিক সংকট তীব্রতর

সাংবিধানিক সংশোধনের পর সুপ্রিম কোর্টের এখতিয়ার কমে যায়
• প্রতিবাদ জানিয়ে দুই শীর্ষ বিচারকের পদত্যাগ
• সংশোধনের মাধ্যমে সেনাপ্রধানের মেয়াদ বাড়ানো ও ক্ষমতা বৃদ্ধি
• সংকটের মধ্যেই নতুন ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্টের কার্যক্রম শুরু


ইসলামাবাদ, ১৪ নভেম্বর — পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত শুক্রবার জরুরি ভিত্তিতে সব বিচারকের বৈঠক ডাকে। কারণ, চলতি সপ্তাহে পার্লামেন্ট যে সাংবিধানিক সংশোধন অনুমোদন করেছে, তাতে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এই সংশোধনের প্রতিবাদে দুই বিচারক পদত্যাগ করে বলেছেন, এটি দেশের সংবিধানের ওপর ‘গুরুতর আঘাত’।

সংশোধন অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট আর সাংবিধানিক মামলার শুনানি করতে পারবে না। একইসঙ্গে সেনাপ্রধানের ক্ষমতা বাড়ানো ও তাঁর মেয়াদ বাড়ানোর ব্যবস্থাও এতে যুক্ত হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ—এটি দেশের গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেবে।

বৈঠকে বসলেও আদালত এই নতুন আইন স্থগিত করবে—এমন সম্ভাবনা আইনজীবীরা কম দেখছেন। সংশোধনের আগে সুপ্রিম কোর্টে মোট ২৪ জন বিচারক ছিলেন।


বিরোধী দমন ও বিচার বিভাগের ভূমিকা

সরকার ইতোমধ্যে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন–পীড়ন চালাচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে কারারুদ্ধ। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী এই দমননীতির নেতৃত্ব দিচ্ছে, আর গণতন্ত্র রক্ষায় আদালতই ছিল শেষ আশ্রয়স্থল।
তবে সামরিক বাহিনী বারবার রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সরকার দাবি করেছে, নতুন সংশোধন দেশের শাসনব্যবস্থা উন্নত করবে এবং ভারতের সঙ্গে গত মে মাসের সংঘাতের সময় সেনাবাহিনীর ভূমিকা বিবেচনায় সেনাপ্রধানকে স্বীকৃতি দেবে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ পার্লামেন্টে বলেন, “আজ পাকিস্তান সাংবিধানিক পথ বেছে নিয়েছে। বিচারকরা রাজনীতি করতেন, তারা পার্লামেন্টকে দুর্বল করতেন।”


বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ‘অক্ষম করে দেওয়া হয়েছে’

পদত্যাগপত্রে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারক সৈয়দ মনসুর আলী শাহ বলেন, “এই সংশোধন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ঐক্য ভেঙে দিয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সততা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, দেশকে কয়েক দশক পিছনে ঠেলে দিয়েছে।”

আরেক বিচারক আথার মিনাল্লাহ লিখেছেন, “যে সংবিধান রক্ষা করার শপথ নিয়েছিলাম, তা আর আগের মতো নেই। যা আছে, তা কেবল একটি ছায়া — যার মধ্যে জনগণের কণ্ঠস্বর নেই, প্রাণ নেই।”

শুক্রবার সংশোধনের ফলে তৈরি হওয়া নতুন ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্টের প্রধান বিচারপতি শপথ নেন। এই আদালতেই এখন সব সাংবিধানিক মামলা শুনানি হবে, এবং বিচারপতিদের নিয়োগ দেবে সরকার।


সেনাপ্রধানের মেয়াদ ও ক্ষমতা বৃদ্ধি

নতুন সংশোধনে বর্তমান সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ নামে নতুন পদমর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এতে তিনি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীরও আনুষ্ঠানিক প্রধান হয়ে গেলেন। পাশাপাশি তিনি ফিল্ড মার্শাল পদে বহাল থাকবেন এবং আজীবন আইনি দায়মুক্তি পাবেন।

সরকার বলেছে — নতুন পদে নিয়োগ হওয়ায় তাঁর পাঁচ বছরের মেয়াদ আবার শুরু হচ্ছে। অর্থাৎ তিনি ২০৩০ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবেন এবং চাইলে আরও পাঁচ বছর বাড়ানো যাবে। ২০২২ সালে মুনির সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান।

সামরিক বাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।


#Pakistan_Crisis | #Judicial_Amendment |#Military_Power | #Constitutional_Reform

জনপ্রিয় সংবাদ

স্ট্রেঞ্জার থিংস ৫ ইভেন্টে ফটোগ্রাফারকে ‘ইউ স্মাইল’—মিলি ববি ব্রাউনের এক ঝটকা জবাব ভাইরাল

দুই বিচারকের পদত্যাগে পাকিস্তানে সাংবিধানিক সংকট তীব্রতর

০১:৪৮:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

সাংবিধানিক সংশোধনের পর সুপ্রিম কোর্টের এখতিয়ার কমে যায়
• প্রতিবাদ জানিয়ে দুই শীর্ষ বিচারকের পদত্যাগ
• সংশোধনের মাধ্যমে সেনাপ্রধানের মেয়াদ বাড়ানো ও ক্ষমতা বৃদ্ধি
• সংকটের মধ্যেই নতুন ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্টের কার্যক্রম শুরু


ইসলামাবাদ, ১৪ নভেম্বর — পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত শুক্রবার জরুরি ভিত্তিতে সব বিচারকের বৈঠক ডাকে। কারণ, চলতি সপ্তাহে পার্লামেন্ট যে সাংবিধানিক সংশোধন অনুমোদন করেছে, তাতে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এই সংশোধনের প্রতিবাদে দুই বিচারক পদত্যাগ করে বলেছেন, এটি দেশের সংবিধানের ওপর ‘গুরুতর আঘাত’।

সংশোধন অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট আর সাংবিধানিক মামলার শুনানি করতে পারবে না। একইসঙ্গে সেনাপ্রধানের ক্ষমতা বাড়ানো ও তাঁর মেয়াদ বাড়ানোর ব্যবস্থাও এতে যুক্ত হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ—এটি দেশের গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেবে।

বৈঠকে বসলেও আদালত এই নতুন আইন স্থগিত করবে—এমন সম্ভাবনা আইনজীবীরা কম দেখছেন। সংশোধনের আগে সুপ্রিম কোর্টে মোট ২৪ জন বিচারক ছিলেন।


বিরোধী দমন ও বিচার বিভাগের ভূমিকা

সরকার ইতোমধ্যে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন–পীড়ন চালাচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে কারারুদ্ধ। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী এই দমননীতির নেতৃত্ব দিচ্ছে, আর গণতন্ত্র রক্ষায় আদালতই ছিল শেষ আশ্রয়স্থল।
তবে সামরিক বাহিনী বারবার রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সরকার দাবি করেছে, নতুন সংশোধন দেশের শাসনব্যবস্থা উন্নত করবে এবং ভারতের সঙ্গে গত মে মাসের সংঘাতের সময় সেনাবাহিনীর ভূমিকা বিবেচনায় সেনাপ্রধানকে স্বীকৃতি দেবে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ পার্লামেন্টে বলেন, “আজ পাকিস্তান সাংবিধানিক পথ বেছে নিয়েছে। বিচারকরা রাজনীতি করতেন, তারা পার্লামেন্টকে দুর্বল করতেন।”


বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ‘অক্ষম করে দেওয়া হয়েছে’

পদত্যাগপত্রে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারক সৈয়দ মনসুর আলী শাহ বলেন, “এই সংশোধন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ঐক্য ভেঙে দিয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সততা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, দেশকে কয়েক দশক পিছনে ঠেলে দিয়েছে।”

আরেক বিচারক আথার মিনাল্লাহ লিখেছেন, “যে সংবিধান রক্ষা করার শপথ নিয়েছিলাম, তা আর আগের মতো নেই। যা আছে, তা কেবল একটি ছায়া — যার মধ্যে জনগণের কণ্ঠস্বর নেই, প্রাণ নেই।”

শুক্রবার সংশোধনের ফলে তৈরি হওয়া নতুন ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্টের প্রধান বিচারপতি শপথ নেন। এই আদালতেই এখন সব সাংবিধানিক মামলা শুনানি হবে, এবং বিচারপতিদের নিয়োগ দেবে সরকার।


সেনাপ্রধানের মেয়াদ ও ক্ষমতা বৃদ্ধি

নতুন সংশোধনে বর্তমান সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ নামে নতুন পদমর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এতে তিনি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীরও আনুষ্ঠানিক প্রধান হয়ে গেলেন। পাশাপাশি তিনি ফিল্ড মার্শাল পদে বহাল থাকবেন এবং আজীবন আইনি দায়মুক্তি পাবেন।

সরকার বলেছে — নতুন পদে নিয়োগ হওয়ায় তাঁর পাঁচ বছরের মেয়াদ আবার শুরু হচ্ছে। অর্থাৎ তিনি ২০৩০ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবেন এবং চাইলে আরও পাঁচ বছর বাড়ানো যাবে। ২০২২ সালে মুনির সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান।

সামরিক বাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।


#Pakistan_Crisis | #Judicial_Amendment |#Military_Power | #Constitutional_Reform