অনুমান করছি বিশ শতকের শুরুর দিকে পরিকল্পনা করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় পাগলা গারদ নির্মিত হবে।

ঐ সময়কার রিপোর্ট ঘাটলে এরকম বর্ণনা অনেক গাওয়া যাবে। কে লিখেছেন, পাগলদেরও কাজে লাগানো হতো। ক্রের রিপোর্ট অনুযায়ী (১৮৬৮) মিটফোর্ড হাসপাতালের বাগান ও অন্যান্য কাজে প্রায় ৭৩ জনকে বহাল করা হয়েছিল। পাগলা গারদে সেই সময় গার্হস্থ্য কাজ করার জন্য ছিল ৩৫ জন। ২৬ জন মহিলা রোগী রান্না-বান্না ধোয়ামোছার কাজ করত। ২০৩ জন পাগলের জন্য ছিল একজন নেটিভ ডাক্তার।
১৮৫৭ থেকে ১৮৬৬ সাল পর্যন্ত বছরে গড়ে ৯৫ জন পাগলকে ভর্তি করা হয়েছিল ঢাকার পাগলা গারদে। রোগীরা এসেছিল ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, কাছাড়, ত্রিপুরা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বাকেরগঞ্জ, ফরিদপুর, পাবনা, বগুড়া, কুচবিহার ও মাসাম থেকে। এই লুনাটিক অ্যাসাইলাম কখন বন্ধ হয়েছিল জানি না। তবে, অনুমান করছি বিশ শতকের শুরুর দিকে পরিকল্পনা করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় পাগলা গারদ নির্মিত হবে। সেটি নির্মিত হলে মনে হয় সব রোগীদের সেখানে সরিয়ে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আসলে শুধু ককেশিয়ানদের জন্য নয়, ব্রিটিশ ‘দয়ালু’ সাম্রাজ্যে রাস্তাঘাটে পাগল ঘুরে বেড়াবে এটি তারা সরকারের জন্য মর্যাদাকর ভাবেনি। সে জন্য অ্যাসাইলাম বা পাগলা গারদ গড়েছে। তবে সেখানেও শ্রেণীবিভাগের কারণে ইউরোপিয়ানদের জন্য একরকম নেটিভদের জন্য ছিল অন্য ব্যবস্থা। ঢাকা লুনাটিক অ্যাসাইলাম বা পাগলা গারদ এর উদাহরণ।
রাখতে হবে তাই রাখা। এই যখন দৃষ্টিভঙ্গি সেখানে এইসব গারদের অবস্থা অনুমেয়। চিকিৎসার ব্যবস্থা তেমন ছিল না। থাকার ব্যবস্থা ছিল অস্বাস্থ্যকর। যাদের নিয়োগ দেয়া হতো তাদের বেতন ছিল যৎসামান্য। আসলে মানসিক চিকিৎসার জগতও তখন বিস্তৃত হয়নি। কোনো রকম পাগল ভেতরে রাখা এই ছিল পাগলা গারদ।
(চলবে)
মুনতাসীর মামুন 


















