১০:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
টাকার বিনিময়ে ইউজারনেম বিক্রি শুরু করল এক্স, বাড়ল ডিজিটাল পরিচয়ের দাম দি ডনের সম্পাদকীয়ঃ শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতা মাধবদীতে ভূমিকম্পে দুলল ভবন, আতঙ্কে নরসিংদী পাঁচ বছরের বেশি সময় পর চীনা নাগরিকদের জন্য বিশ্বব্যাপী ভিসা চালু করল ভারত দুবাই এয়ারশোতে তেজস দুর্ঘটনা: কে ছিলেন আইএএফ পাইলট নমনশ সৈয়াল ভূমিধস, খরা ও বর্ষায় বিধ্বস্ত ভারতের একটি রাজ্য ভারতের নতুন শ্রম বিধি ঘিরে তীব্র সমালোচনা, দেশজুড়ে বিক্ষোভের প্রস্তুতি চট্টগ্রাম বন্দরের ইজারা পরিকল্পনা ঘিরে অবরোধের ঘোষণা ভূমিকম্পের পর ছাদ ও দেয়ালের যে সব ফাটল বিপদের কারণ হতে পারে স্ত্রী নেশার টাকা না দেয়ার স্বামীর আত্মহত্যা

ভারতের নতুন শ্রম বিধি ঘিরে তীব্র সমালোচনা, দেশজুড়ে বিক্ষোভের প্রস্তুতি

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন শ্রম বিধি কার্যকর হওয়ার পর তা নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। শ্রমিক সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, এই বিধিগুলো শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করবে এবং সরকারের প্রতি “প্রতারণামূলক আচরণ” প্রদর্শন করবে। আইন প্রত্যাহারের দাবিতে তারা সর্বভারতীয় বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে।


উদ্বোধন

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নতুন শ্রম বিধি কার্যকর করার পর তা নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। বৃহৎ দশটি শ্রমিক সংগঠন এই পদক্ষেপকে শ্রমিকদের প্রতি প্রতারণামূলক আচরণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে এবং আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বভারতীয় বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে।

নতুন শ্রম বিধি নিয়ে শ্রমিক সংগঠনের নিন্দা

শুক্রবার ঘোষিত বিবৃতিতে দশটি বড় শ্রমিক সংগঠন জানায়, সরকারের নতুন শ্রম বিধি শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিপক্ষে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এসব সংগঠন বলেছে, এই বিধিগুলো “শ্রমিকদের প্রতি প্রতারণা” এবং তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। আগামী বুধবার তারা দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে।

সরকারের অবস্থান

পাঁচ বছর আগে সংসদে অনুমোদিত চারটি শ্রম বিধি এবার কার্যকর করেছে কেন্দ্র। সরকারের দাবি, পুরোনো ব্রিটিশ আমলের জটিল শ্রম আইন সংশোধন করে কর্মসংস্থান সহজ করা ও বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য। সরকার আরও বলছে, নতুন বিধিগুলো শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা ও ন্যূনতম মজুরির সুবিধা বাড়াবে।

বিধির বিতর্কিত দিক

যদিও নতুন নিয়মে সামাজিক সুরক্ষা ও ন্যূনতম মজুরি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তবে একই সঙ্গে কোম্পানিগুলোর কর্মী নিয়োগ ও ছাঁটাই আরও সহজ হয়েছে—যা শ্রমিক সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে বিরোধিতা করে আসছে। গত পাঁচ বছরে এসব পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বহুবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া

শনিবার শ্রম মন্ত্রণালয় শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ নথি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন থেকে সরকার শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে এক ডজনেরও বেশি বৈঠক করেছে।

কারখানার সময়সূচি ও নারীদের রাতের শিফট

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কারখানায় দীর্ঘ সময় কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং নারীদের রাতের শিফটে কাজ করার অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে পূর্বানুমতি নেওয়ার জন্য কোম্পানির কর্মসংখ্যা ১০০-এর বদলে ৩০০ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনবল ব্যবস্থাপনায় আরও স্বাধীনতা দেবে।

ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া

বছরের পর বছর ভারতের শ্রম আইনকে উৎপাদন খাতের অগ্রগতির অন্তরায় বলে অভিযোগ করে এসেছে নানা শিল্পমহল। তবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ান এন্টারপ্রেনিউর্স’ উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, নতুন বিধিগুলো ছোট ও মাঝারি উদ্যোগের ব্যয় বাড়াবে এবং অনেক খাতে ব্যবসা পরিচালনা বাধাগ্রস্ত হবে। তাদের দাবি, সরকার যেন পরিবর্তনের জন্য সময় দেয় এবং নমনীয় বাস্তবায়ন পদ্ধতি গ্রহণ করে।

সব সংগঠন বিরোধিতা করছে না

মোদির দলের ঘনিষ্ঠ শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সংঘ (বিএমএস) অবশ্য কিছু বিধির ওপর আরও পরামর্শ নেওয়ার শর্তে এগুলো বাস্তবায়নের পক্ষে মত দিয়েছে।

রাজ্যগুলোর ভূমিকা

ভারতের রাজ্য সরকারগুলোকে মজুরি, শিল্প সম্পর্ক, সামাজিক নিরাপত্তা এবং কর্মস্থল নিরাপত্তা সম্পর্কিত নতুন কেন্দ্রীয় শ্রম বিধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিজস্ব নিয়ম তৈরি করতে হবে।

#ভারত #শ্রমবিধি #বিক্ষোভ #মোদিসরকার #শ্রমিকঅধিকার #সারাক্ষণরিপোর্ট


জনপ্রিয় সংবাদ

টাকার বিনিময়ে ইউজারনেম বিক্রি শুরু করল এক্স, বাড়ল ডিজিটাল পরিচয়ের দাম

ভারতের নতুন শ্রম বিধি ঘিরে তীব্র সমালোচনা, দেশজুড়ে বিক্ষোভের প্রস্তুতি

০৮:৪৪:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন শ্রম বিধি কার্যকর হওয়ার পর তা নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। শ্রমিক সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে, এই বিধিগুলো শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করবে এবং সরকারের প্রতি “প্রতারণামূলক আচরণ” প্রদর্শন করবে। আইন প্রত্যাহারের দাবিতে তারা সর্বভারতীয় বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে।


উদ্বোধন

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নতুন শ্রম বিধি কার্যকর করার পর তা নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। বৃহৎ দশটি শ্রমিক সংগঠন এই পদক্ষেপকে শ্রমিকদের প্রতি প্রতারণামূলক আচরণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে এবং আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বভারতীয় বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে।

নতুন শ্রম বিধি নিয়ে শ্রমিক সংগঠনের নিন্দা

শুক্রবার ঘোষিত বিবৃতিতে দশটি বড় শ্রমিক সংগঠন জানায়, সরকারের নতুন শ্রম বিধি শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিপক্ষে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এসব সংগঠন বলেছে, এই বিধিগুলো “শ্রমিকদের প্রতি প্রতারণা” এবং তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। আগামী বুধবার তারা দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে।

সরকারের অবস্থান

পাঁচ বছর আগে সংসদে অনুমোদিত চারটি শ্রম বিধি এবার কার্যকর করেছে কেন্দ্র। সরকারের দাবি, পুরোনো ব্রিটিশ আমলের জটিল শ্রম আইন সংশোধন করে কর্মসংস্থান সহজ করা ও বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য। সরকার আরও বলছে, নতুন বিধিগুলো শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা ও ন্যূনতম মজুরির সুবিধা বাড়াবে।

বিধির বিতর্কিত দিক

যদিও নতুন নিয়মে সামাজিক সুরক্ষা ও ন্যূনতম মজুরি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তবে একই সঙ্গে কোম্পানিগুলোর কর্মী নিয়োগ ও ছাঁটাই আরও সহজ হয়েছে—যা শ্রমিক সংগঠনগুলো দীর্ঘদিন ধরে বিরোধিতা করে আসছে। গত পাঁচ বছরে এসব পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বহুবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া

শনিবার শ্রম মন্ত্রণালয় শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ নথি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন থেকে সরকার শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে এক ডজনেরও বেশি বৈঠক করেছে।

কারখানার সময়সূচি ও নারীদের রাতের শিফট

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কারখানায় দীর্ঘ সময় কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং নারীদের রাতের শিফটে কাজ করার অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে পূর্বানুমতি নেওয়ার জন্য কোম্পানির কর্মসংখ্যা ১০০-এর বদলে ৩০০ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনবল ব্যবস্থাপনায় আরও স্বাধীনতা দেবে।

ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া

বছরের পর বছর ভারতের শ্রম আইনকে উৎপাদন খাতের অগ্রগতির অন্তরায় বলে অভিযোগ করে এসেছে নানা শিল্পমহল। তবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ান এন্টারপ্রেনিউর্স’ উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, নতুন বিধিগুলো ছোট ও মাঝারি উদ্যোগের ব্যয় বাড়াবে এবং অনেক খাতে ব্যবসা পরিচালনা বাধাগ্রস্ত হবে। তাদের দাবি, সরকার যেন পরিবর্তনের জন্য সময় দেয় এবং নমনীয় বাস্তবায়ন পদ্ধতি গ্রহণ করে।

সব সংগঠন বিরোধিতা করছে না

মোদির দলের ঘনিষ্ঠ শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সংঘ (বিএমএস) অবশ্য কিছু বিধির ওপর আরও পরামর্শ নেওয়ার শর্তে এগুলো বাস্তবায়নের পক্ষে মত দিয়েছে।

রাজ্যগুলোর ভূমিকা

ভারতের রাজ্য সরকারগুলোকে মজুরি, শিল্প সম্পর্ক, সামাজিক নিরাপত্তা এবং কর্মস্থল নিরাপত্তা সম্পর্কিত নতুন কেন্দ্রীয় শ্রম বিধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিজস্ব নিয়ম তৈরি করতে হবে।

#ভারত #শ্রমবিধি #বিক্ষোভ #মোদিসরকার #শ্রমিকঅধিকার #সারাক্ষণরিপোর্ট