০২:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

মন্দার মাঝেও উজ্জ্বল কোরিয়ান সিনেমা: ব্লু ড্রাগন ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডসে ইতিহাস, সাফল্য ও নতুন সম্ভাবনার বার্তা

দক্ষিণ কোরিয়ার বক্স অফিসে দীর্ঘদিনের মন্দা সত্ত্বেও ৪৬তম ব্লু ড্রাগন ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস দেখিয়ে দিয়েছে—মৌলিক গল্প, ওয়েবটুন রূপান্তর এবং দক্ষ নির্মাতাদের সমন্বয়ে দর্শকদের মন এখনো জেতা সম্ভব। বুধবার রাতে সিউলের কেবিএস হলে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানকে কোরিয়ার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র সম্মাননা হিসেবে গণ্য করা হয়।


ওয়েবটুন ভিত্তিক সিনেমার দারুণ সাফল্য
নেভার ওয়েবটুনের সহপ্রতিষ্ঠান স্টুডিও এন তৈরি করেছে সিনেমা ‘মাই ডটার ইজ আ জম্বি’। জনপ্রিয় ওয়েবটুন শিল্পী লি ইউন-চাং-এর ২০১৮ সালের সৃষ্টি অবলম্বনে নির্মিত এই ছবি এ বছর সর্বাধিক ৫.৬৩ মিলিয়ন দর্শক টেনে এনে ২০২৫ সালের সবচেয়ে বেশি দেখা সিনেমার জায়গা দখল করে।
পরিবারকে কেন্দ্র করে হাস্যরস, আবেগ এবং মানবিকতার সমন্বয়ে নির্মিত ছবিটি দর্শকের প্রশংসা কুড়ায় এবং অডিয়েন্স চয়েস অ্যাওয়ার্ডে ‘সর্বাধিক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

স্টুডিও এন–এর সিইও কওন মি-কিয়ং বলেন,
“এই পুরস্কার প্রমাণ করে যে মৌলিক গল্প বলার শক্তিই আমাদের মূল ভিত্তি। ওয়েবটুনের কল্পনা ও চলচ্চিত্রের অভিজ্ঞতার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে পেরেছি। শক্ত ভিত্তির গল্প নিয়ে কনটেন্ট বিস্তারের কাজ ভবিষ্যতেও চালিয়ে যাব।”


শিল্পমান বজায় রাখার উদাহরণ: পার্ক চান-উকের বড় অর্জন
বিশ্বখ্যাত পরিচালক পার্ক চান-উক তাঁর নতুন থ্রিলার ‘নো আদার চয়েস’-এর মাধ্যমে আবারও প্রমাণ করেছেন—কোরিয়ান চলচ্চিত্র এখনো পরিচালকনির্ভর শক্তিশালী কনটেন্ট তৈরি করতে সক্ষম।
ছবিটি এবারের আসরে সাতটি বিভাগে পুরস্কার জিতে নেয়—এর মধ্যে ছিল সেরা চলচ্চিত্র ও সেরা পরিচালকের সম্মান।


ইতিহাস গড়া দম্পতি: হিউন বিন ও সন ইয়েজিন
অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আলোচিত মুহূর্ত আসে বাস্তব জীবনের তারকা দম্পতি হিউন বিন ও সন ইয়েজিনের সাফল্যে।
হিউন বিন ‘হার্বিন’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা এবং সন ইয়েজিন ‘নো আদার চয়েস’ ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন। তাঁদের যুগল বিজয় দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ছড়ায়।

মঞ্চে উঠে সন ইয়েজিন বলেন,
“এই সম্মানের জন্য কৃতজ্ঞ, কিন্তু জানি—চলচ্চিত্র শিল্প কঠিন সময় পার করছে। আমাদের সবাইকে এক হয়ে লড়াই করতে হবে।”


নতুন প্রতিভার উত্থান
অনুষ্ঠানে নবাগত তারকাদের উপস্থিতিও নতুন আশার সঞ্চার করে।
অ্যান বো-হ্যুন (‘প্রিটি ক্রেজি’) সেরা নবাগত অভিনেতা এবং কিম দো-ইয়ন (‘ইডিয়ট গার্লস অ্যান্ড স্কুল ঘোস্ট: স্কুল অ্যানিভার্সারি’) সেরা নবাগত অভিনেত্রী হন।


স্বল্প বাজেটেও বড় প্রশংসা: ‘দ্য আগলি’
ইওন সাংহো পরিচালিত নিম্ন বাজেটের ছবি ‘দ্য আগলি’ সমালোচকদের কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসা পায়।
ছবিটি মোট ১৫টি প্রধান বিভাগের মধ্যে ১০টিতে মনোনয়ন পেয়ে প্রমাণ করে—ছোট বাজেটেও শক্তিশালী গল্প, দৃঢ় নির্মাণশৈলী এবং সৃজনশীল চিন্তা নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে।


এবারের ব্লু ড্রাগন ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস প্রমাণ করেছে—মন্দার মধ্যেও কোরিয়ান চলচ্চিত্রশিল্প টিকে আছে প্রতিভা, নতুন গল্প, এবং সৃজনশীল রূপান্তরের শক্তিতে। বড় তারকা, নতুন নির্মাতা ও স্বল্প বাজেটের সাহসী পরীক্ষানিরীক্ষা—সব মিলিয়ে কোরিয়ান সিনেমার ভবিষ্যৎ এখনো উজ্জ্বল।


#KoreanCinema #BlueDragonAwards #FilmIndustryInsights

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্দার মাঝেও উজ্জ্বল কোরিয়ান সিনেমা: ব্লু ড্রাগন ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডসে ইতিহাস, সাফল্য ও নতুন সম্ভাবনার বার্তা

১২:৪৫:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়ার বক্স অফিসে দীর্ঘদিনের মন্দা সত্ত্বেও ৪৬তম ব্লু ড্রাগন ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস দেখিয়ে দিয়েছে—মৌলিক গল্প, ওয়েবটুন রূপান্তর এবং দক্ষ নির্মাতাদের সমন্বয়ে দর্শকদের মন এখনো জেতা সম্ভব। বুধবার রাতে সিউলের কেবিএস হলে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানকে কোরিয়ার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র সম্মাননা হিসেবে গণ্য করা হয়।


ওয়েবটুন ভিত্তিক সিনেমার দারুণ সাফল্য
নেভার ওয়েবটুনের সহপ্রতিষ্ঠান স্টুডিও এন তৈরি করেছে সিনেমা ‘মাই ডটার ইজ আ জম্বি’। জনপ্রিয় ওয়েবটুন শিল্পী লি ইউন-চাং-এর ২০১৮ সালের সৃষ্টি অবলম্বনে নির্মিত এই ছবি এ বছর সর্বাধিক ৫.৬৩ মিলিয়ন দর্শক টেনে এনে ২০২৫ সালের সবচেয়ে বেশি দেখা সিনেমার জায়গা দখল করে।
পরিবারকে কেন্দ্র করে হাস্যরস, আবেগ এবং মানবিকতার সমন্বয়ে নির্মিত ছবিটি দর্শকের প্রশংসা কুড়ায় এবং অডিয়েন্স চয়েস অ্যাওয়ার্ডে ‘সর্বাধিক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

স্টুডিও এন–এর সিইও কওন মি-কিয়ং বলেন,
“এই পুরস্কার প্রমাণ করে যে মৌলিক গল্প বলার শক্তিই আমাদের মূল ভিত্তি। ওয়েবটুনের কল্পনা ও চলচ্চিত্রের অভিজ্ঞতার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে পেরেছি। শক্ত ভিত্তির গল্প নিয়ে কনটেন্ট বিস্তারের কাজ ভবিষ্যতেও চালিয়ে যাব।”


শিল্পমান বজায় রাখার উদাহরণ: পার্ক চান-উকের বড় অর্জন
বিশ্বখ্যাত পরিচালক পার্ক চান-উক তাঁর নতুন থ্রিলার ‘নো আদার চয়েস’-এর মাধ্যমে আবারও প্রমাণ করেছেন—কোরিয়ান চলচ্চিত্র এখনো পরিচালকনির্ভর শক্তিশালী কনটেন্ট তৈরি করতে সক্ষম।
ছবিটি এবারের আসরে সাতটি বিভাগে পুরস্কার জিতে নেয়—এর মধ্যে ছিল সেরা চলচ্চিত্র ও সেরা পরিচালকের সম্মান।


ইতিহাস গড়া দম্পতি: হিউন বিন ও সন ইয়েজিন
অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আলোচিত মুহূর্ত আসে বাস্তব জীবনের তারকা দম্পতি হিউন বিন ও সন ইয়েজিনের সাফল্যে।
হিউন বিন ‘হার্বিন’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা এবং সন ইয়েজিন ‘নো আদার চয়েস’ ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন। তাঁদের যুগল বিজয় দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ছড়ায়।

মঞ্চে উঠে সন ইয়েজিন বলেন,
“এই সম্মানের জন্য কৃতজ্ঞ, কিন্তু জানি—চলচ্চিত্র শিল্প কঠিন সময় পার করছে। আমাদের সবাইকে এক হয়ে লড়াই করতে হবে।”


নতুন প্রতিভার উত্থান
অনুষ্ঠানে নবাগত তারকাদের উপস্থিতিও নতুন আশার সঞ্চার করে।
অ্যান বো-হ্যুন (‘প্রিটি ক্রেজি’) সেরা নবাগত অভিনেতা এবং কিম দো-ইয়ন (‘ইডিয়ট গার্লস অ্যান্ড স্কুল ঘোস্ট: স্কুল অ্যানিভার্সারি’) সেরা নবাগত অভিনেত্রী হন।


স্বল্প বাজেটেও বড় প্রশংসা: ‘দ্য আগলি’
ইওন সাংহো পরিচালিত নিম্ন বাজেটের ছবি ‘দ্য আগলি’ সমালোচকদের কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসা পায়।
ছবিটি মোট ১৫টি প্রধান বিভাগের মধ্যে ১০টিতে মনোনয়ন পেয়ে প্রমাণ করে—ছোট বাজেটেও শক্তিশালী গল্প, দৃঢ় নির্মাণশৈলী এবং সৃজনশীল চিন্তা নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে।


এবারের ব্লু ড্রাগন ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস প্রমাণ করেছে—মন্দার মধ্যেও কোরিয়ান চলচ্চিত্রশিল্প টিকে আছে প্রতিভা, নতুন গল্প, এবং সৃজনশীল রূপান্তরের শক্তিতে। বড় তারকা, নতুন নির্মাতা ও স্বল্প বাজেটের সাহসী পরীক্ষানিরীক্ষা—সব মিলিয়ে কোরিয়ান সিনেমার ভবিষ্যৎ এখনো উজ্জ্বল।


#KoreanCinema #BlueDragonAwards #FilmIndustryInsights