লিরিক অপেরায় স্ম্যাশিং পাম্পকিনস ক্লাসিকের নতুন রূপ
স্ম্যাশিং পাম্পকিনসের কিংবদন্তী অ্যালবাম ‘মেলন কোলি অ্যান্ড দ্য ইনফিনিট স্যাডনেস’ প্রকাশের ৩০ বছর পূর্তিতে একে অপেরা মঞ্চে নতুন রূপে হাজির করেছেন ব্যান্ডের ফ্রন্টম্যান বিলি করগান। রোলিং স্টোনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিকাগোর সিভিক অপেরা হাউসে ‘আ নাইট অব মেলন কোলি অ্যান্ড ইনফিনিট স্যাডনেস’ শিরোনামের কনসার্ট সিরিজের উদ্বোধনী রাতে করগানকে ঘিরে ছিল লিরিক অপেরা অর্কেস্ট্রা, পূর্ণ কোরাস এবং একদল অপেরা সোলিস্ট। সেখানে ‘টুনাইট, টুনাইট’, ‘১৯৭৯’ আর ‘বুলেট উইথ বাটারফ্লাই উইংস’-এর মতো জনপ্রিয় গানগুলো নতুন অর্কেস্ট্রেশন ও কণ্ঠ বিন্যাসে পরিবেশিত হয়। ভক্তদের ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, করগান নিজেই গিটার বাজিয়ে গান করছেন, আর অপেরা গায়কেরা পর্যায়ক্রমে মূল লাইনগুলোকে আরিয়া ও এনসেম্বলে রূপ দিচ্ছেন।
এই প্রযোজনার সংগীত পরিচালনায় আছেন জেমস লো, যিনি করগানের সঙ্গে মিলে নতুন অর্কেস্ট্রেশন তৈরি করেছেন। সোপ্রানো সিডনি মানকাসোলা, মেজো-সোপ্রানো জোই রিমস, টেনর ডমিনিক চেনেস এবং ব্যারিটোন এডওয়ার্ড পার্কস—এই চার গায়কের কণ্ঠে পরিচিত সুরগুলো যেন একেবারে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। অ্যালবামের গাঢ় আবহ আর গিটার-নির্ভর সাউন্ড এবার পূর্ণ তার, ব্রাস ও কোরাসের স্তর পেরিয়ে প্রবল গাম্ভীর্যে হাজির হচ্ছে অপেরা হলের অ্যাকুস্টিকে। ‘ডিসপাইট অল মাই রেজ, আই এম স্টিল জাস্ট আ র্যাট ইন অ্যা কেজ’—এই বহুল উদ্ধৃত লাইনটি এখন আসছে দীর্ঘ অর্কেস্ট্রাল বিল্ড-আপের পর, যা গানের নাটকীয়তাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। আয়োজনটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন বিশ্বের অনেক ব্যান্ড নিজেদের ক্লাসিক অ্যালবাম নতুন ট্যুর, ডিলাক্স সংস্করণ ও ডকুমেন্টারির মাধ্যমে পুনরায় উপস্থাপন করছে; কিন্তু পূর্ণ অপেরা অর্কেস্ট্রার সঙ্গে এ ধরনের সহযোগিতা এখনো ব্যতিক্রমী।
রক অ্যালবাম থেকে আধুনিক সং সাইকল
আগের এক বিবৃতিতে করগান বলেছেন, অপেরা কোম্পানির সঙ্গে ‘মেলন কোলি’ পুনর্বিন্যাস করতে গিয়ে তিনি নিজের লেখা গানগুলোকে নতুন, “শক্তিশালী” ভাবে আবিষ্কার করছেন। মূল অ্যালবামে ছিল অর্কেস্ট্রাল ব্যালাড থেকে শুরু করে ভারী গিটার রিফ পর্যন্ত নানা মুড, যা শুরু থেকেই এক ধরনের চলচ্চিত্রীয় ব্যাপ্তি তৈরি করেছিল। এবার স্টেজ কনসার্টে সম্পূর্ণ অর্কেস্ট্রা ও কোরাসের মাধ্যমে সেই সুরগুলোকে সাজানো হচ্ছে আধুনিক যুগের এক ধরনের সং সাইকলের মতো। লিরিক অপেরার জন্যও এটি কৌশলগত—তারা অনেক দিন ধরেই ক্লাসিক অপেরা রেপার্টরিওর পাশাপাশি পপ কালচার–ভিত্তিক প্রজেক্ট দিয়ে নতুন দর্শক টানার চেষ্টা করছে।
শিকাগোর এই শোগুলো অপেরা ও রক—দুই ঘরানার দর্শকদের একই হলে টেনে আনার সুযোগ করে দিয়েছে। নিয়মিত অপেরা-দর্শকরা দেখছেন কীভাবে ৯০–এর দশকের অল্টারনেটিভ রক সিম্ফনিক পোশাকে কাজ করে, আর রক ভক্তদের অনেকেই প্রথমবারের মতো অপেরা হাউসে ঢুকছেন। সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়ায় কেউ কেউ বলছেন, তাদের কাছে এখনো মূল অ্যালবামের কাঁচা সাউন্ডই প্রিয়; অন্যেরা আবার লিখছেন, অর্কেস্ট্রার সামনে বসে পরিচিত গান শুনতে গিয়ে পুরনো স্মৃতির সঙ্গে নতুন আবেগ জুড়েছে। এই পরীক্ষামূলক সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও ব্যান্ডকে একই পথ অনুসরণ করতে উৎসাহিত করবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত এতটুকু স্পষ্ট—এক প্রজন্মের সঙ্গীত এখন এমন সব ফরম্যাটে ফিরে আসছে, যা নতুন শ্রোতাকে যুক্ত করার পাশাপাশি পুরোনো ভক্তদেরও গানগুলো নতুন করে শোনার সুযোগ করে দিচ্ছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















