গেমার ও স্ট্রিমিং ব্যবহারকারীদের নিশানা
চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ড পোকো নতুন ফ্ল্যাগশিপ ‘পোকো এফ৮ আল্ট্রা’ বাজারে এনেছে, যেখানে অডিও প্রযুক্তি কোম্পানি বসের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ স্পিকার সিস্টেম। ফোনটির বড় ওএলইডি ডিসপ্লে, উচ্চ রিফ্রেশ রেটের সঙ্গে থাকছে তথাকথিত ‘ট্রিপল স্পিকার’ সিস্টেম—ফ্রেমের ভেতর বসানো বাড়তি সাবউউফারসহ। পোকো বলছে, এর লক্ষ্য সেই সব ব্যবহারকারী, যারা মোবাইল গেম, সিনেমা, কেড্রামা বা কে–পপ কনসার্ট বেশি দেখেন এবং আলাদা ব্লুটুথ স্পিকার না নিয়ে ফোন থেকেই শক্তিশালী শব্দ চান। কোম্পানির ডেমোতে দেখা গেছে, আগের মডেলগুলোর তুলনায় জোরালো ভলিউম, কথোপকথন ও ব্যাকগ্রাউন্ড শব্দের আলাদা স্পষ্টতা এবং বেসের বাড়তি গভীরতা।
ভিতরের হার্ডওয়্যারে ফোনটি ফ্ল্যাগশিপ মানের প্রসেসর, দ্রুত চার্জিং সুবিধাসহ বড় ব্যাটারি এবং উচ্চ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা সেটআপ ব্যবহার করেছে। তবে আসল গল্পটি অডিও নিয়ে—পোকো বলছে, বস ও তাদের নিজস্ব ইঞ্জিনিয়াররা একসঙ্গে বসে গেম, সিনেমা, গান ও ভিডিও কলের আলাদা আলাদা সাউন্ড প্রোফাইল টিউন করেছেন। অ্যান্ড্রয়েডের মাঝারি ও উচ্চমাঝারি দামের সেগমেন্টে এখন প্রসেসর, ডিসপ্লে ও ব্যাটারি প্রায় এক রকম হয়ে যাওয়ায় ব্র্যান্ডগুলোকে আলাদা হওয়ার জন্য ডিজাইন, ক্যামেরা বা অডিওতে নতুন কিছু যুক্ত করতে হচ্ছে। পোকো–বস অংশীদারি সেই প্রবণতারই অংশ; বিশেষ করে তরুণ ব্যবহারকারীদের কথা ভেবে, যারা প্রায় সব কনটেন্ট ফোনেই দেখে।
অডিও ব্র্যান্ডিং কতটা সত্যিকারের পরিবর্তন আনবে
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মাঝারি দামের অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ভিড়ে পোকোর জন্য বসের নামটি একটি বাড়তি আস্থার জায়গা তৈরি করতে পারে। এত দিনে অনেক ল্যাপটপ ও বাজেট ডিভাইসে বিভিন্ন অডিও ব্র্যান্ডের লোগো ব্যবহার হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে শব্দের মানে বড় পরিবর্তন দেখা যায়নি; ফলে ব্যবহারকারীর মধ্যে সন্দেহও আছে। তাই এফ৮ আল্ট্রা কতটা ‘বাস্তব’ উন্নতি আনতে পারে, তা নির্ভর করবে দৈনন্দিন ব্যবহারে অভিজ্ঞতার ওপর—মেট্রোতে হেডফোন ছাড়া ভিডিও দেখা, হোস্টেলে ছোট পর্দায় সিনেমা চালানো, অথবা বন্ধুদের সঙ্গে হঠাৎ কে–পপ প্লেলিস্ট চালিয়ে দেওয়া—এসব পরিস্থিতিতে পার্থক্য বোঝা গেলে তবেই কথাটি ছড়াবে।
অন্যদিকে পাতলা ফোনের ভেতর সাবউউফার বসানো মানে দীর্ঘমেয়াদে তাপ, কম্পন ও টেকসই হওয়া নিয়ে প্রশ্নও তৈরি হয়। তবু অনেকেই মনে করছেন, শুধুই বেঞ্চমার্ক স্কোর নয়, মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতায় নজর দেওয়া এ ধরনের ফোনগুলো ভবিষ্যতে আলাদা ফ্যানবেস তৈরি করতে পারে। ক্রমাগত কমপ্রেসড স্ট্রিমিং, সস্তা ইয়ারবাড আর গড়পড়তা বিল্ট-ইন স্পিকারের যুগে ছোট স্ক্রিনে বড় শব্দ—এটিই হয়তো অনেকের পরের আপগ্রেডের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















