ফিরে এল জুডি–নিক, আরও বড় তদন্তের গল্প নিয়ে
প্রায় এক দশক পর ডিজনির অ্যানিমেটেড হিট ‘জুটোপিয়া’ নতুন সিক্যুয়েল নিয়ে বড় পর্দায় ফিরেছে। ‘জুটোপিয়া ২’-এ আবারও দেখা মিলছে খরগোশ পুলিশ জুডি হপস আর ধূর্ত শেয়াল নিক ওয়াইল্ডের, তবে এবার তাদের তদন্ত সীমিত নয় কেবল সিটির ভেতরের ছোটখাটো অপরাধে। নতুন ছবিতে যোগ হয়েছে সরীসৃপ ধনকুবেররাই, জমি দখল আর ক্লাইমেট ওয়ালের ব্যবসা—যার পেছনে লুকিয়ে থাকে ক্ষমতা আর নিয়ন্ত্রণের বড় খেলা। শিশুরা যেখানে রঙিন শহর, তাড়া-পাল্টা আর মজার চরিত্র দেখে আনন্দ পাচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্ক দর্শকেরা সেখানে খুঁজে পাচ্ছেন ভূমি উন্নয়ন, বৈষম্য আর সহাবস্থানের টানাপোড়েনের ইঙ্গিত।
পুরোনো চারটি জলবায়ু অঞ্চল—সাভানা, সাহারা, রেইনফরেস্ট আর টুন্দ্রা—এবার আরও বিস্তারিত, নতুন নতুন গলি ও জনপদ নিয়ে পর্দায় উঠেছে। চোস্ত গতি, সূক্ষ্ম হিউমার আর সম্পর্কের জটিলতা মিলিয়ে চলচ্চিত্রটি প্রথম ছবির চেয়ে কিছুটা বেশি ‘বড়দের’ কথাও বলেছে। সহ-নির্মাতা বাইরন হাওয়ার্ড ও জ্যারেড বুশ আবারও পরিচালকের চেয়ারে, ফলে আগের ছন্দ ও টোন বজায় থাকলেও এবার গল্পের ফোকাস বেশি সম্পর্কের পারস্পরিক সম্মান, ভুল স্বীকার আর ‘পার্টনারশিপ’ টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে। থেরাপি সেশনের মতো দৃশ্য আর নতুন ধনী ‘লিঙ্কসলি’ পরিবারের চরিত্রগুলো গল্পে এনে দিয়েছে সমকালীন অফিস, পরিবার ও ক্ষমতার রাজনীতির স্বাদ।

ডিজনির সিক্যুয়েল কৌশল ও পরিবারমুখী বাজার
পারিবারিক অ্যানিমেশন বাজার এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ভরপুর—কোরিয়ান কনটেন্ট, অ্যানিমে ও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের সিরিজ শিশুদের দৃষ্টি কাড়ছে লাগাতার। এমন সময়ে ডিজনির জন্য প্রতিটি সিক্যুয়েল ঝুঁকিও বটে, সুযোগও বটে। ‘জুটোপিয়া ২’ নিয়ে প্রথম দিককার পর্যালোচনায় যে বিষয়টি স্পষ্ট, তা হলো—শুধু পুরোনো রসিকতা আর পরিচিত মুখের ওপর ভর না করে চরিত্রদের নতুন আবেগী পথচলা ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তৈরি করা হয়েছে। ভূমি দখল, উন্নয়ন প্রকল্প কিংবা জলবায়ু প্রাচীরের মতো উপমা ব্যবহার করে শিশুদের উপযোগী ভাষায় বড় প্রশ্ন তোলা হয়েছে, যা একই সঙ্গে চিন্তা ও বিনোদন—দুটিই ধরে রাখে।
ডিজনির জন্য সফলতা মানে কেবল বক্স অফিস নয়; এ বিশ্বকে আরও ছোট সিরিজ, স্পিন–অফ বা শর্ট ফিল্মে ভাগ করে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করার সুযোগও। জুডি–নিকের পুনরাগমন যদি দর্শকদের উষ্ণ সাড়া পায়, তাহলে জুটোপিয়ার নির্দিষ্ট অঞ্চল বা পার্শ্বচরিত্র ঘিরে নতুন কনটেন্ট বানানো সহজ হবে, আর মার্চেন্ডাইজিং লাইনেরও নতুন প্রাণ পাবে। সব মিলিয়ে, এমন সময়ে যখন শিশুদের অনেকেই কে–ড্রামা ও কে–পপের জগতে ঢুকে যাচ্ছে, ডিজনি দেখাতে চাইছে—ভালোভাবে তৈরি একটি অ্যানিমেটেড শহরের ভেতরেও বাস্তব বিশ্বের ক্ষমতা, বন্ধুত্ব আর ন্যায়বোধের গল্প নতুন করে বলা যায়।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















