০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
গভীর সমুদ্র খননের হুমকিতে হাঙর, রে ও কাইমেরা দীর্ঘ টেনিস মৌসুমের মূল্য: চোট, মানসিক ক্লান্তি আর মাঝপথে ছিটকে যাওয়া রক্ষণশীল নারীর নতুন মিডিয়া জগৎ: দুধওয়ালির পোশাক থেকে নারী জগতের নতুন রাজনীতি ভেনেজুয়েলার তেলের বিপুল ভান্ডার থাকলেও বাস্তব উৎপাদন থেকে যাবে কাগজে-কলমেই রঙে রঙে নির্বাসন ও স্বীকৃতি: কাতারে এম এফ হুসেইনের নিজের জাদুঘর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হাত ধরে বাইবেলের বৈশ্বিক যাত্রা, লক্ষ্য দুই হাজার তেত্রিশ ক্যানসারের পথ ধরেই আলঝেইমারের নতুন চিকিৎসা দিগন্ত নাইরোবির শহরের পাশে বুনো আফ্রিকা: এক দিনে সাফারির অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা যশোরে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত ঝালকাঠিতে হাদির গ্রামের বাড়িতে লুটপাট

যুক্তরাষ্ট্র–ইসরায়েল গোয়েন্দা টানাপোড়েন: গাজা যুদ্ধের মাঝেই তথ্য শেয়ার সাময়িক বন্ধ

গাজায় যুদ্ধ চলাকালীন ইসরায়েলের কিছু কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগের কারণে বাইডেন প্রশাসনের সময় যুক্তরাষ্ট্র অল্প সময়ের জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য আদান–প্রদান বন্ধ রেখেছিল। সংশ্লিষ্ট ছয়জন সূত্রের বরাতে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গাজায় ড্রোনের সরাসরি ভিডিও বন্ধের সিদ্ধান্ত
সূত্রগুলো জানায়, ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে যুক্তরাষ্ট্র গাজার আকাশে ওড়া একটি মার্কিন ড্রোনের সরাসরি ভিডিও ফিড ইসরায়েলকে দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। ওই ভিডিও মূলত হামাস যোদ্ধা ও জিম্মিদের খোঁজে ব্যবহার করা হচ্ছিল। এই স্থগিতাদেশ অন্তত কয়েক দিন কার্যকর ছিল বলে পাঁচজন সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

উচ্চমূল্যের লক্ষ্যবস্তুর তথ্য ব্যবহারে বিধিনিষেধ
শুধু ড্রোন ফিড নয়, গাজায় উচ্চমূল্যের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার ক্ষেত্রে কিছু মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য কীভাবে ব্যবহার করা যাবে, সে বিষয়েও ইসরায়েলের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছিল। কখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা স্পষ্ট করেননি সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।

বেসামরিক হতাহতের উদ্বেগই মূল কারণ
মার্কিন গোয়েন্দা মহলে উদ্বেগ বাড়ছিল যে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক মানুষ নিহত হচ্ছেন। পাশাপাশি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতের হাতে ফিলিস্তিনি বন্দিদের সঙ্গে আচরণ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনে বিদেশি কোনো দেশকে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়ার আগে যুদ্ধের আইন মানার নিশ্চয়তা পাওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু সে নিশ্চয়তা যথেষ্ট স্পষ্ট না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে তিনটি সূত্র জানিয়েছে।

সমর্থন অব্যাহত থাকলেও সিদ্ধান্ত ছিল কৌশলগত
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইডেন প্রশাসন সামগ্রিকভাবে ইসরায়েলকে অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়ে গেছে। তবে তথ্য শেয়ার বন্ধের এই সিদ্ধান্ত ছিল সীমিত ও কৌশলগত। উদ্দেশ্য ছিল, মার্কিন তথ্য যেন যুদ্ধের আইন লঙ্ঘনে ব্যবহার না হয়, তা নিশ্চিত করা।

নিশ্চয়তা দেওয়ার পর ফের শুরু হয় তথ্য আদান–প্রদান
ইসরায়েল যুদ্ধের আইন মানার নিশ্চয়তা দেওয়ার পর আবার গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার শুরু হয়। তবে যুদ্ধের সময় ঘনিষ্ঠ মিত্রের কাছ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রের গোয়েন্দা তথ্য বন্ধ রাখা সাধারণত বিরল ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে এক ধরনের চাপা টানাপোড়েনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

হামাস হামলার পর তথ্য শেয়ার বাড়িয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে গোয়েন্দা সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তখন গাজার ওপর দিয়ে ড্রোন উড়িয়ে সরাসরি তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছিল, যা হামাস যোদ্ধা আটক ও জিম্মি উদ্ধারে সহায়ক ছিল।

শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি বন্ধ হয়নি সহযোগিতা
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রশাসনের শেষ পর্যায়ে হোয়াইট হাউসে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আবারও কিছু তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধের প্রস্তাব দেন। তবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে প্রশাসনের আইনজীবীদের মতের ভিত্তিতে বাইডেন সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।

জনপ্রিয় সংবাদ

গভীর সমুদ্র খননের হুমকিতে হাঙর, রে ও কাইমেরা

যুক্তরাষ্ট্র–ইসরায়েল গোয়েন্দা টানাপোড়েন: গাজা যুদ্ধের মাঝেই তথ্য শেয়ার সাময়িক বন্ধ

০৫:১৯:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

গাজায় যুদ্ধ চলাকালীন ইসরায়েলের কিছু কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগের কারণে বাইডেন প্রশাসনের সময় যুক্তরাষ্ট্র অল্প সময়ের জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য আদান–প্রদান বন্ধ রেখেছিল। সংশ্লিষ্ট ছয়জন সূত্রের বরাতে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গাজায় ড্রোনের সরাসরি ভিডিও বন্ধের সিদ্ধান্ত
সূত্রগুলো জানায়, ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে যুক্তরাষ্ট্র গাজার আকাশে ওড়া একটি মার্কিন ড্রোনের সরাসরি ভিডিও ফিড ইসরায়েলকে দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। ওই ভিডিও মূলত হামাস যোদ্ধা ও জিম্মিদের খোঁজে ব্যবহার করা হচ্ছিল। এই স্থগিতাদেশ অন্তত কয়েক দিন কার্যকর ছিল বলে পাঁচজন সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

উচ্চমূল্যের লক্ষ্যবস্তুর তথ্য ব্যবহারে বিধিনিষেধ
শুধু ড্রোন ফিড নয়, গাজায় উচ্চমূল্যের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার ক্ষেত্রে কিছু মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য কীভাবে ব্যবহার করা যাবে, সে বিষয়েও ইসরায়েলের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছিল। কখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা স্পষ্ট করেননি সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।

বেসামরিক হতাহতের উদ্বেগই মূল কারণ
মার্কিন গোয়েন্দা মহলে উদ্বেগ বাড়ছিল যে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক মানুষ নিহত হচ্ছেন। পাশাপাশি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতের হাতে ফিলিস্তিনি বন্দিদের সঙ্গে আচরণ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনে বিদেশি কোনো দেশকে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়ার আগে যুদ্ধের আইন মানার নিশ্চয়তা পাওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু সে নিশ্চয়তা যথেষ্ট স্পষ্ট না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে তিনটি সূত্র জানিয়েছে।

সমর্থন অব্যাহত থাকলেও সিদ্ধান্ত ছিল কৌশলগত
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইডেন প্রশাসন সামগ্রিকভাবে ইসরায়েলকে অস্ত্র ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়ে গেছে। তবে তথ্য শেয়ার বন্ধের এই সিদ্ধান্ত ছিল সীমিত ও কৌশলগত। উদ্দেশ্য ছিল, মার্কিন তথ্য যেন যুদ্ধের আইন লঙ্ঘনে ব্যবহার না হয়, তা নিশ্চিত করা।

নিশ্চয়তা দেওয়ার পর ফের শুরু হয় তথ্য আদান–প্রদান
ইসরায়েল যুদ্ধের আইন মানার নিশ্চয়তা দেওয়ার পর আবার গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার শুরু হয়। তবে যুদ্ধের সময় ঘনিষ্ঠ মিত্রের কাছ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রের গোয়েন্দা তথ্য বন্ধ রাখা সাধারণত বিরল ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে এক ধরনের চাপা টানাপোড়েনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

হামাস হামলার পর তথ্য শেয়ার বাড়িয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে গোয়েন্দা সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তখন গাজার ওপর দিয়ে ড্রোন উড়িয়ে সরাসরি তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছিল, যা হামাস যোদ্ধা আটক ও জিম্মি উদ্ধারে সহায়ক ছিল।

শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি বন্ধ হয়নি সহযোগিতা
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রশাসনের শেষ পর্যায়ে হোয়াইট হাউসে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আবারও কিছু তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধের প্রস্তাব দেন। তবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে প্রশাসনের আইনজীবীদের মতের ভিত্তিতে বাইডেন সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।