০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
পূর্ব কঙ্গোতে সবচেয়ে সংকটময় সময়ে বন্ধ হলো বিনা খরচের প্রসূতি সেবা হারিয়ে যাচ্ছে শকুন এশিয়ার মহাকাশ মানচিত্রে নতুন কেন্দ্র হতে চায় হোক্কাইডো স্পেসপোর্ট অমিতাভ ঘোষের নতুন বই ‘ঘোস্ট-আই’: অতীত, জলবায়ু সংকট আর এক অদ্ভুত বাস্তবতার খোঁজ ভোট না দিলে ঘরে থাকার হুঁশিয়ারি: শরীয়তপুরে বিএনপি নেতার বক্তব্যে তোলপাড় হাদিকে গুলির ঘটনায় ‘মাথায় বাজ পড়ার মতো’ ধাক্কা খেলেন সিইসি হাদির অবস্থা আরও সংকটজনক, সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে মস্তিষ্কের ফোলা বেড়েছে রোহিঙ্গা আশ্রয় মানবিক দায়িত্ব, প্রত্যাবাসন জরুরি এক বছরে ২৫৮ কারখানা বন্ধ, কর্মহীন এক লাখ শ্রমিক: এএফডব্লিউএ নির্বাচনে সব ঝুঁকি দূর সম্ভব নয়, সতর্ক থাকতে হবে দল ও প্রার্থীদের: ইসি সানাউল্লাহ

পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা ঝাঁকুনি: এসআইআর পুনর্গণনায় বাদ পড়তে পারে প্রায় ৫৮ লক্ষ নাম, কলকাতায় সর্বাধিক প্রভাব

পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ায় বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের মোট ভোটারের প্রায় সাত দশমিক ছয় শতাংশের নাম চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে। সংখ্যার হিসেবে যা প্রায় আটান্ন লক্ষেরও বেশি। এই বাদ পড়ার হার সবচেয়ে বেশি হতে পারে কলকাতায় এবং শহরের আশপাশের বিধানসভা কেন্দ্রগুলোতে।

সংশোধন প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ
গ্রীষ্মকালীন দুই হাজার ছাব্বিশ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে চলা এই বিতর্কিত সংশোধন প্রক্রিয়ার গণনা ধাপ শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে। আগামী মঙ্গলবার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত তালিকা। এর আগে বিহারে হওয়া অনুরূপ সংশোধনে প্রায় আট শতাংশ নাম বাদ পড়েছিল, পশ্চিমবঙ্গেও প্রায় একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।

কোথায় কতটা বাদ পড়তে পারে
জেলা ভিত্তিক হিসাবে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ বাদ পড়ার হার কলকাতায়, প্রায় পঁচিশ শতাংশেরও বেশি। এর পরেই রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান এবং হাওড়া। তুলনায় পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও কোচবিহারে বাদ পড়ার হার অনেক কম থাকতে পারে। বিধানসভা কেন্দ্রের ক্ষেত্রে জোড়াসাঁকো, চৌরঙ্গি, হাওড়া উত্তর, কলকাতা পোর্ট ও বালিগঞ্জে বাদ পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এই কেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগেই আগের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল।

সংখ্যার হিসেবে বড় কাটছাঁট
মোট সংখ্যার দিক থেকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, উত্তর চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, কলকাতা উত্তর ও হুগলিতে সর্বাধিক নাম বাদ পড়তে পারে। শুধু দক্ষিণ চব্বিশ পরগনাতেই আট লক্ষের বেশি নাম তালিকা থেকে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভবানীপুর কেন্দ্রেও প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজার ভোটারের ফর্ম সংগ্রহ করা যায়নি বলে কমিশনের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন।

কেন বাদ পড়ছে নাম
নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, যেসব ফর্ম সংগ্রহ করা যায়নি তার বড় অংশ মৃত ভোটার, স্থায়ীভাবে অন্যত্র চলে যাওয়া বা খোঁজ না পাওয়া ব্যক্তিদের। এর পাশাপাশি দ্বৈত নাম ও পুরনো তালিকার সঙ্গে তথ্যের অসামঞ্জস্যও বড় কারণ। দুই হাজার দুই সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখার সময়ই এই গরমিল ধরা পড়েছে।

দলীয় ফলাফলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেসব কেন্দ্রে বাদ পড়ার হার বেশি সেখানে তৃণমূলের জয় কিংবা হার—এর সঙ্গে সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। একই ভাবে মুসলিম জনসংখ্যার অনুপাত বেশি এমন জেলাগুলিতেও গড়ের তুলনায় কম নাম বাদ পড়তে পারে বলে তথ্য ইঙ্গিত দিচ্ছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছে, প্রকৃত ভোটারদের কোনওভাবেই বঞ্চিত হতে দেওয়া হবে না। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর কর্মীরা ঘরে ঘরে গিয়ে যাচাই করবেন বলে দলটির দাবি। অন্যদিকে বিজেপির বক্তব্য, আগের নির্বাচনে ভুয়ো ভোটারের কারণেই তৃণমূল জিতেছিল এবং তালিকা পরিষ্কার হলে প্রকৃত চিত্র সামনে আসবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

পূর্ব কঙ্গোতে সবচেয়ে সংকটময় সময়ে বন্ধ হলো বিনা খরচের প্রসূতি সেবা

পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা ঝাঁকুনি: এসআইআর পুনর্গণনায় বাদ পড়তে পারে প্রায় ৫৮ লক্ষ নাম, কলকাতায় সর্বাধিক প্রভাব

০৫:৫৪:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ায় বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের মোট ভোটারের প্রায় সাত দশমিক ছয় শতাংশের নাম চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে। সংখ্যার হিসেবে যা প্রায় আটান্ন লক্ষেরও বেশি। এই বাদ পড়ার হার সবচেয়ে বেশি হতে পারে কলকাতায় এবং শহরের আশপাশের বিধানসভা কেন্দ্রগুলোতে।

সংশোধন প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ
গ্রীষ্মকালীন দুই হাজার ছাব্বিশ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে চলা এই বিতর্কিত সংশোধন প্রক্রিয়ার গণনা ধাপ শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে। আগামী মঙ্গলবার খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত তালিকা। এর আগে বিহারে হওয়া অনুরূপ সংশোধনে প্রায় আট শতাংশ নাম বাদ পড়েছিল, পশ্চিমবঙ্গেও প্রায় একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।

কোথায় কতটা বাদ পড়তে পারে
জেলা ভিত্তিক হিসাবে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ বাদ পড়ার হার কলকাতায়, প্রায় পঁচিশ শতাংশেরও বেশি। এর পরেই রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান এবং হাওড়া। তুলনায় পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও কোচবিহারে বাদ পড়ার হার অনেক কম থাকতে পারে। বিধানসভা কেন্দ্রের ক্ষেত্রে জোড়াসাঁকো, চৌরঙ্গি, হাওড়া উত্তর, কলকাতা পোর্ট ও বালিগঞ্জে বাদ পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এই কেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগেই আগের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল।

সংখ্যার হিসেবে বড় কাটছাঁট
মোট সংখ্যার দিক থেকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, উত্তর চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, কলকাতা উত্তর ও হুগলিতে সর্বাধিক নাম বাদ পড়তে পারে। শুধু দক্ষিণ চব্বিশ পরগনাতেই আট লক্ষের বেশি নাম তালিকা থেকে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভবানীপুর কেন্দ্রেও প্রায় পঁয়তাল্লিশ হাজার ভোটারের ফর্ম সংগ্রহ করা যায়নি বলে কমিশনের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন।

কেন বাদ পড়ছে নাম
নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, যেসব ফর্ম সংগ্রহ করা যায়নি তার বড় অংশ মৃত ভোটার, স্থায়ীভাবে অন্যত্র চলে যাওয়া বা খোঁজ না পাওয়া ব্যক্তিদের। এর পাশাপাশি দ্বৈত নাম ও পুরনো তালিকার সঙ্গে তথ্যের অসামঞ্জস্যও বড় কারণ। দুই হাজার দুই সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখার সময়ই এই গরমিল ধরা পড়েছে।

দলীয় ফলাফলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেসব কেন্দ্রে বাদ পড়ার হার বেশি সেখানে তৃণমূলের জয় কিংবা হার—এর সঙ্গে সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। একই ভাবে মুসলিম জনসংখ্যার অনুপাত বেশি এমন জেলাগুলিতেও গড়ের তুলনায় কম নাম বাদ পড়তে পারে বলে তথ্য ইঙ্গিত দিচ্ছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছে, প্রকৃত ভোটারদের কোনওভাবেই বঞ্চিত হতে দেওয়া হবে না। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর কর্মীরা ঘরে ঘরে গিয়ে যাচাই করবেন বলে দলটির দাবি। অন্যদিকে বিজেপির বক্তব্য, আগের নির্বাচনে ভুয়ো ভোটারের কারণেই তৃণমূল জিতেছিল এবং তালিকা পরিষ্কার হলে প্রকৃত চিত্র সামনে আসবে।