০৮:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সাংবাদিক আনিস আলমগীরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী মামলা প্রত্যাহারের দাবি সম্পাদক পরিষদের সিনিয়র সাংবাদিক আনিস আলমগীর পাঁচ দিনের রিমান্ডে সমালোচনা করা যাবে না- এই বার্তাই কি দেওয়া হলো আনিস আলমগীরের ঘটনায় ড. ইউনূস চাইলে সারা দেশকে কারাগার বানাতে পারেন: আদালতে সাংবাদিক আনিস আলমগীর বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের জন্য নতুন নিরাপত্তা সতর্কতা জারি টানা পতনে আতঙ্ক: দ্বিতীয় দিনেও লাল পুঁজিবাজার, বিনিয়োগকারীদের আস্থা নড়বড়ে আগে গ্রেপ্তার, পরে মামলা: সিনিয়র সাংবাদিক আনিস আলমগীরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অভিযোগ ফ্যাসিবাদী অতীতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা হলে জাতি ক্ষমা করবে না: জামায়াত আমির ময়মনসিংহ সীমান্ত দিয়ে হাদির ওপর হামলাকারীরা ভারতে পালিয়েছে কি না, নিশ্চিত নয় বিজিবি সরকার ভারতের কাছ থেকে আরও ৫০ হাজার টন চাল কিনছে

সাবেক জাপানি প্রতিরক্ষা প্রধানকে ঘিরে চীনের ‘কাউন্টারমেজার’, টোকিওতে নিরাপত্তা বিতর্ক আরও তীব্র

লক্ষ্য ব্যক্তি, বার্তা প্রতিষ্ঠানকে

চীন জাপানের সেলফ-ডিফেন্স ফোর্সের (এসডিএফ) এক সাবেক প্রধানকে লক্ষ্য করে ‘কাউন্টারমেজার’ ঘোষণার কথা জানিয়েছে, যা টোকিওতে প্রতীকী ও কৌশলগত—দুইভাবেই ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে নিশানা করলেও বার্তাটি অনেক সময় প্রতিষ্ঠান ও নীতিনির্ধারণী পরিসরে পৌঁছে যায়—সেনাবাহিনী, প্রতিরক্ষা পরিকল্পনাকারী, এবং জনপরিসরে নিরাপত্তা নীতি নিয়ে মত গঠনকারীদের কাছে। তাই এটিকে অনেকে দেখছেন আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যু—তাইওয়ান, পূর্ব চীন সাগর, এবং ইন্দো-প্যাসিফিকে জোট-সমন্বয়—এসব বিষয়ে অবস্থান কঠোর না করার জন্য এক ধরনের সতর্ক সংকেত হিসেবে।

Japan's new premier pledges early boost to defence spending, 'proactive'  fiscal policy | Reuters

এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এল যখন জাপানে প্রতিরক্ষা ব্যয়, প্রতিরোধ ক্ষমতা, এবং অংশীদারদের সঙ্গে সামরিক-সমন্বয় কতদূর যাবে—তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে। ফলে এমন ঘোষণা দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও চাপ তৈরি করতে পারে। সরকারকে একদিকে দেখাতে হবে যে তারা চাপের কাছে নতি স্বীকার করছে না, অন্যদিকে উত্তেজনার সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা ঠেকানোর প্রয়োজনও থাকবে—কারণ অর্থনীতি, বাণিজ্য, এবং সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা এতে জড়িয়ে।

আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া ও কূটনৈতিক জটিলতা

এই ধরনের ‘টার্গেটেড’ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য অংশীদার দেশগুলোর কাছেও বার্তা পাঠায়। তারা জাপানকে উত্তর-পূর্ব এশিয়ার নিরাপত্তা ভারসাম্যে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে দেখে। চীন সাধারণত এসব পদক্ষেপকে ‘উসকানির বিরুদ্ধে বৈধ প্রতিরক্ষা’ হিসেবে ব্যাখ্যা করলেও বাস্তবে এতে মিত্রদের সমন্বয়ের তাগিদ বাড়তে পারে—গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, সমুদ্র নজরদারি, এবং সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার পরিকল্পনায়। এসব বিষয় প্রকাশ্যে কম আলোচিত হলেও প্রতিরোধ কৌশলে বড় ভূমিকা রাখে।

How Sanae Takaichi crossed China's four untouchable red lines

কূটনৈতিক দিক থেকে, ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে নেওয়া পদক্ষেপ কখনও কখনও ‘ব্যাকচ্যানেল’ স্থিতিশীলতার উদ্যোগকে জটিল করে তোলে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বড় থাকলেও রাজনৈতিক ‘সিগন্যালিং’ দুই পক্ষের অভ্যন্তরীণ প্রত্যাশা কঠোর করে দেয়, ফলে আপসের জায়গা সংকুচিত হয়। টোকিওতে ‘সংযত কিন্তু দৃঢ়’ প্রতিক্রিয়া দেখানোর চাপ বাড়তে পারে; আর বেইজিং চাইতে পারে দেখাতে যে তারা কঠোর অবস্থানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ওপর ‘রেপুটেশনাল কস্ট’ চাপাতে সক্ষম।

স্বল্পমেয়াদে এই ঘটনা জাপানের নীতিনির্ধারণী বিতর্ককে আরও ধারালো করতে পারে—প্রতিরোধ ব্যর্থ হলে ঝুঁকি কতটা, আর উত্তেজনা বাড়ালে ঝুঁকি কতটা—এই তুলনা নতুন করে সামনে আসবে। একই সঙ্গে এটি দেখায়, আধুনিক ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় সামরিক শক্তি ছাড়াও প্রশাসনিক বিধিনিষেধ, তথ্যযুদ্ধ, এবং বাছাই করা সীমাবদ্ধতা দিয়ে প্রতিপক্ষের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার প্রবণতা বাড়ছে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে, এটি অঞ্চলে উত্তেজনা শিথিল হওয়ার চেয়ে ঘনীভূত হওয়ারই আরেকটি ইঙ্গিত।

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক আনিস আলমগীরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী মামলা প্রত্যাহারের দাবি সম্পাদক পরিষদের

সাবেক জাপানি প্রতিরক্ষা প্রধানকে ঘিরে চীনের ‘কাউন্টারমেজার’, টোকিওতে নিরাপত্তা বিতর্ক আরও তীব্র

০৫:০৮:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

লক্ষ্য ব্যক্তি, বার্তা প্রতিষ্ঠানকে

চীন জাপানের সেলফ-ডিফেন্স ফোর্সের (এসডিএফ) এক সাবেক প্রধানকে লক্ষ্য করে ‘কাউন্টারমেজার’ ঘোষণার কথা জানিয়েছে, যা টোকিওতে প্রতীকী ও কৌশলগত—দুইভাবেই ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে নিশানা করলেও বার্তাটি অনেক সময় প্রতিষ্ঠান ও নীতিনির্ধারণী পরিসরে পৌঁছে যায়—সেনাবাহিনী, প্রতিরক্ষা পরিকল্পনাকারী, এবং জনপরিসরে নিরাপত্তা নীতি নিয়ে মত গঠনকারীদের কাছে। তাই এটিকে অনেকে দেখছেন আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যু—তাইওয়ান, পূর্ব চীন সাগর, এবং ইন্দো-প্যাসিফিকে জোট-সমন্বয়—এসব বিষয়ে অবস্থান কঠোর না করার জন্য এক ধরনের সতর্ক সংকেত হিসেবে।

Japan's new premier pledges early boost to defence spending, 'proactive'  fiscal policy | Reuters

এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এল যখন জাপানে প্রতিরক্ষা ব্যয়, প্রতিরোধ ক্ষমতা, এবং অংশীদারদের সঙ্গে সামরিক-সমন্বয় কতদূর যাবে—তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে। ফলে এমন ঘোষণা দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও চাপ তৈরি করতে পারে। সরকারকে একদিকে দেখাতে হবে যে তারা চাপের কাছে নতি স্বীকার করছে না, অন্যদিকে উত্তেজনার সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা ঠেকানোর প্রয়োজনও থাকবে—কারণ অর্থনীতি, বাণিজ্য, এবং সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা এতে জড়িয়ে।

আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া ও কূটনৈতিক জটিলতা

এই ধরনের ‘টার্গেটেড’ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য অংশীদার দেশগুলোর কাছেও বার্তা পাঠায়। তারা জাপানকে উত্তর-পূর্ব এশিয়ার নিরাপত্তা ভারসাম্যে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে দেখে। চীন সাধারণত এসব পদক্ষেপকে ‘উসকানির বিরুদ্ধে বৈধ প্রতিরক্ষা’ হিসেবে ব্যাখ্যা করলেও বাস্তবে এতে মিত্রদের সমন্বয়ের তাগিদ বাড়তে পারে—গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, সমুদ্র নজরদারি, এবং সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার পরিকল্পনায়। এসব বিষয় প্রকাশ্যে কম আলোচিত হলেও প্রতিরোধ কৌশলে বড় ভূমিকা রাখে।

How Sanae Takaichi crossed China's four untouchable red lines

কূটনৈতিক দিক থেকে, ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে নেওয়া পদক্ষেপ কখনও কখনও ‘ব্যাকচ্যানেল’ স্থিতিশীলতার উদ্যোগকে জটিল করে তোলে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বড় থাকলেও রাজনৈতিক ‘সিগন্যালিং’ দুই পক্ষের অভ্যন্তরীণ প্রত্যাশা কঠোর করে দেয়, ফলে আপসের জায়গা সংকুচিত হয়। টোকিওতে ‘সংযত কিন্তু দৃঢ়’ প্রতিক্রিয়া দেখানোর চাপ বাড়তে পারে; আর বেইজিং চাইতে পারে দেখাতে যে তারা কঠোর অবস্থানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ওপর ‘রেপুটেশনাল কস্ট’ চাপাতে সক্ষম।

স্বল্পমেয়াদে এই ঘটনা জাপানের নীতিনির্ধারণী বিতর্ককে আরও ধারালো করতে পারে—প্রতিরোধ ব্যর্থ হলে ঝুঁকি কতটা, আর উত্তেজনা বাড়ালে ঝুঁকি কতটা—এই তুলনা নতুন করে সামনে আসবে। একই সঙ্গে এটি দেখায়, আধুনিক ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় সামরিক শক্তি ছাড়াও প্রশাসনিক বিধিনিষেধ, তথ্যযুদ্ধ, এবং বাছাই করা সীমাবদ্ধতা দিয়ে প্রতিপক্ষের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত করার প্রবণতা বাড়ছে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে, এটি অঞ্চলে উত্তেজনা শিথিল হওয়ার চেয়ে ঘনীভূত হওয়ারই আরেকটি ইঙ্গিত।