ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার প্রভাবে জীবনযাত্রায় বিরাট ধ্বংস
২০২৫ সালের শেষ দিকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা দেখা দিয়েছে, যা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানি ও জনজীবনের বিরূপ প্রভাব তৈরি করেছে। বিশেষত সুমাত্রা ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোতে পুরো সম্প্রদায়ের জীবন বিপর্যস্ত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় সেন্যারের প্রভাবে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা প্রদেশে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলাবদ্ধতা, ভূমিধস ও অতিবৃষ্টির কারণে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং অসংখ্য মানুষ আহত বা নিখোঁজ রয়েছে। একই সময়ে ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়া শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন এলাকা তীব্র বৃষ্টিপাতে প্লাবিত করেছে, যার ফলে ভূমিকম্পের মতো ভূমিধস ও সড়ক, ব্রিজ ভাঙচুরের মতো বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
সমুদ্রের পানি গরম থাকার কারণে এই মৌসুমের ঘূর্ণিঝড়গুলোর শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। সমুদ্রের তাপমাত্রা অনিয়মিতভাবে বেড়ে যাওয়ায় বৃষ্টি ও ঝড়ের তীব্রতা বাড়ছে এবং বন্যার পানি দ্রুত উঁচু হয়ে ওঠছে। শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় পাহাড়ি এলাকায় বন্যা ও ভূমিধস পুরো গ্রামগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে।

অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণও বিপুল। সড়ক, বিদ্যুৎ, স্থাপনা ও কৃষিজমি ধ্বংস হওয়ায় স্থানীয় ও জাতীয় অর্থনীতিতে বড় প্রভাব পড়েছে। বহু পরিবার এখন অনাস্থায় রয়েছেন এবং ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছেন।
বিভিন্ন দেশের প্রস্তুতি ও Early Warning System-এ পার্থক্য থাকায় কিছু অঞ্চলে আগেভাগেই মানুষের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে। তবে অনেক উন্নয়নশীল ও গ্রামীণ এলাকাতে পর্যাপ্ত সতর্কতা ও আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় বিপর্যয়ের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের অতিবৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আরও ঘন হতে পারে। উষ্ণ বায়ু আরও বেশি জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারে, যা ভারী বৃষ্টিপাত ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে ত্বরান্বিত করে।
সরকার ও ত্রাণ সংস্থাগুলো পুনর্বাসন ও অবকাঠামো মেরামতের পরিকল্পনা করছি। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের আজকের বাস্তবতা মোকাবেলা করতে বেশি স্থায়ী পরিকল্পনার প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
আগামী দিনে এই অঞ্চলে শক্তিশালী Early Warning System, জলাধার ও বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও স্থায়ী উন্নয়ন পরিকল্পনা থাকলে ভবিষ্যতের বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব হবে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















