কোথায় চালানো যাবে—সেটাই মূল প্রশ্ন
মার্কিন ডেমোক্র্যাটদের একটি নতুন প্রস্তাবিত বিল টেসলা ও অন্যান্য নির্মাতাকে তাদের লেভেল–২ ড্রাইভিং সিস্টেম কোথায় এবং কী পরিস্থিতিতে চালানো যাবে—তা স্পষ্ট সীমারেখায় বেঁধে দিতে বাধ্য করতে পারে। বিলটির কেন্দ্রীয় ধারণা হলো “অপারেশনাল ডিজাইন ডোমেইন” বা ODD—অর্থাৎ কোন রাস্তা, কোন গতি, কোন ভৌগোলিক এলাকা এবং কোন আবহাওয়ায় একটি সিস্টেম কাজ করার জন্য নকশা করা। সমর্থকদের যুক্তি, এই সীমা আইনগতভাবে নির্দিষ্ট হলে দুর্ঘটনা ও ভুল বোঝাবুঝি কমতে পারে।
লেভেল–২ সিস্টেম মানে পূর্ণ স্বয়ংচালিত নয়। সাধারণত লেন সেন্টারিং ও অ্যাডাপটিভ ক্রুজ কন্ট্রোল একসঙ্গে থাকে, কিন্তু চালকের নজরদারি সারাক্ষণ প্রয়োজন। সমালোচকদের বক্তব্য, বিজ্ঞাপন বা ফিচারের নাম দেখে অনেক চালক এটিকে “অটোপাইলট” ভাবতে শুরু করে, ফলে দায়িত্বের জায়গায় বিপজ্জনক বিভ্রান্তি তৈরি হয়। বিলের উদ্যোক্তারা মূলত সেই ধূসর অঞ্চলে আইনগত গার্ডরেল বসাতে চাইছেন।

গাড়ির সফটওয়্যার দ্রুত বদলালেও নিরাপত্তা নীতি ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামো অনেক সময় পিছিয়ে থাকে। বাস্তবে ODD বাধ্যতামূলক হলে কোম্পানিগুলোকে জিওফেন্সিং, কেবল হাইওয়ে-কেন্দ্রিক সীমা, ম্যাপড জোন বা আবহাওয়াভিত্তিক কন্ডিশন নির্ধারণ করতে হতে পারে। চালকদের ক্ষেত্রে এর মানে হতে পারে—কোনো রাস্তায় সিস্টেম অনই হবে না, বা আবহাওয়া/পরিস্থিতি বদলালে নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে।
টেসলার ক্ষেত্রে বিষয়টি বেশি আলোচিত, কারণ তাদের ড্রাইভার-অ্যাসিস্ট ব্র্যান্ডিং দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রে। বিলটি ধারণাগতভাবে কোনো এক কোম্পানিকে লক্ষ্য করে না, কিন্তু যে ধরনের উন্নত সহায়তা “বড় পরিসরে” ব্যবহার করা যায়—সেটির সীমাবদ্ধতা নিয়ে সরাসরি কথা বলে। লক্ষ্য একটাই—যে পরিস্থিতিতে সফটওয়্যার তৈরি হয়নি, সেখানে চালক যেন সেটিকে ঠেলে ব্যবহার না করতে পারে।
সমর্থকদের দাবি, এটি স্বচ্ছতা ও প্রয়োগযোগ্যতার প্রশ্ন। কোনো নির্মাতা যদি নিরাপত্তার কথা বলে, তাহলে তারা কোন শর্তে নিরাপদ—তা নির্দিষ্ট করবে এবং সেই শর্তের বাইরে সিস্টেম চালানো রোধ করবে। সম্ভাব্য বিরোধিতা আসতে পারে শিল্পখাত থেকে—তাদের যুক্তি হতে পারে এটি উদ্ভাবন ধীর করবে বা অতিরিক্ত কমপ্লায়েন্স চাপ বাড়াবে, বিশেষ করে যেসব সিস্টেম চালকের মনোযোগের ওপর নির্ভর করে।

চালক ও নিয়ন্ত্রকদের জন্য সম্ভাব্য প্রভাব
সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হবে—আইনগতভাবে ধরে নেওয়া হবে লেভেল–২ সিস্টেম “সীমার মধ্যে” চালাতে হবে, চালক চাইলেও সীমা ভাঙতে পারবে না। এতে দুর্ঘটনার তদন্ত ও দায় নির্ধারণের বিতর্কও বদলাতে পারে। যদি কোনো গাড়ি ঘোষিত ODD-এর বাইরে চলতে থাকে, নিয়ন্ত্রকেরা বলবে এটি অপব্যবহার, বা নির্মাতা অপব্যবহার ঠেকাতে ব্যর্থ।
এটি বাজারের ভাষাও মানসম্মত করতে পারে। এখন নানা কোম্পানির নানা নাম, নানা দাবি—ভোক্তা বিভ্রান্ত হয়। ODD-কেন্দ্রিক নিয়ম হলে সবাইকে একই কাঠামোয় বলতে হবে: কোথায় কাজ করে, কখন কাজ করে, আর কী করতে পারে না। এতে বোঝাপড়া বাড়বে, যদিও “বড় বড় দাবি” কমে যেতে পারে।
বিলটি আইন হবে কি না, তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক গতি ও শিল্পখাতের লবিংয়ের ওপর। তবে পাশ না হলেও এটি ভবিষ্যৎ দিক নির্দেশ করছে—ডেমোর চেয়ে অপারেশনাল সীমা, নিরাপত্তা যুক্তি, এবং প্রমাণভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ বেশি গুরুত্ব পাবে।

সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















