০৬:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
অনুমতি ছাড়া বৈঠক করায় সৌদি আরবে আটক বাংলাদেশিরা, সতর্ক দূতাবাস ওয়ার্নার ব্রাদার্স লটে নেটফ্লিক্স শীর্ষদের উপস্থিতি: স্টুডিওর ভবিষ্যৎ নিয়ে লড়াই আরও তীব্র ক্যারিবীয় ছোট দ্বীপে বিপন্ন ইগুয়ানার ‘লাভ নেস্ট’: সংরক্ষণ প্রকল্পে জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে ক্যালিফোর্নিয়ার ইভানপাহ বিতর্ক আবার সামনে: ‘স্ট্র্যান্ডেড’ সৌর সম্পদের খরচ কে দেবে? হাঁটিয়ে আনা হয়েছিল মোয়াই, ইস্টার দ্বীপের পাথর মূর্তির রহস্যে নতুন ব্যাখ্যা টেসলা-ধাঁচের ড্রাইভার-অ্যাসিস্টে সীমা টানতে নতুন মার্কিন বিল ফোনের পর্দায় বন্দী মানুষ, মঞ্চে একাকিত্বের নতুন ভাষা বন্ডি বিচে হনুক্কাহ উৎসবে ভয়াবহ হামলা, মুহূর্তেই আনন্দের আসর রক্তাক্ত বন্ডি বিচে রক্তাক্ত হামলা, উগ্র মতাদর্শের ছায়া দেখছে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী দুই দিনের আলোচনায় ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের শান্তি-আলোচক দল

আইএস আবার সক্রিয়, সিরিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া ছড়াচ্ছে রক্তাক্ত ছায়া

সিরিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া—দুটি ভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া নৃশংস হামলা আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছে, তথাকথিত ইসলামিক স্টেট এখনও পুরোপুরি নিস্তেজ হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো স্পষ্ট করে দিচ্ছে, ভূখণ্ড হারালেও এই জঙ্গি সংগঠনের সহিংসতা ও প্রভাব রয়ে গেছে বিশ্বজুড়ে।

সিরিয়ায় মার্কিন নাগরিক হত্যা
সপ্তাহান্তে সিরিয়ায় তিনজন মার্কিন নাগরিক হত্যার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে আইএসের সম্পৃক্ততার আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, এই ধরনের হামলা দেখাচ্ছে যে সংগঠনটি সুযোগ পেলেই আন্তর্জাতিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে প্রস্তুত।

অস্ট্রেলিয়ায় ভয়াবহ হামলার ইঙ্গিত
একই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার একটি ধর্মীয় সমাবেশে চালানো হামলাও তদন্তকারীদের দৃষ্টি কেড়েছে। হামলাকারীদের গাড়ি থেকে আইএসের পতাকা ও বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, বাবা ও ছেলে—এই দুই হামলাকারী দীর্ঘদিন ধরে চরমপন্থার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি অঞ্চলে সামরিক ধাঁচের প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বাস্তব জঙ্গিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ অনেক সময় সহিংসতায় ঝাঁপিয়ে পড়ার শেষ ধাক্কা দেয়।

সাহসিক প্রতিরোধেও থামেনি ট্র্যাজেডি
এই হামলায় অস্ট্রেলিয়ায় কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে। তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত, যদি না কয়েকজন সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে প্রতিরোধে নামতেন। একজন পথচারী হামলাকারীর অস্ত্র কিছু সময়ের জন্য কেড়ে নিতে সক্ষম হন। পরে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, এক প্রবীণ ব্যক্তি হামলাকারীর হাত থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ও তাঁর স্ত্রী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন, একে অপরের হাত ধরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

আইএসের কৌশল ও বৈশ্বিক উদ্বেগ
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন করে তথাকথিত খেলাফত গড়ার ক্ষমতা না থাকলেও আইএস এখন বিচ্ছিন্ন হামলার মাধ্যমে আমেরিকান, ইহুদি ও খ্রিস্টান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এই বাস্তবতা থেকেই সিরিয়ায় সীমিত মার্কিন সেনা উপস্থিতি বজায় রাখার কৌশল নেওয়া হয়েছে, যাতে সেখানেই জঙ্গিদের দমন করা যায়, অন্য শহরে নয়।

সিরিয়ায় সীমিত সেনা উপস্থিতির তাৎপর্য
বর্তমানে সিরিয়ায় এক হাজারের কম মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। তারা মূলত উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থান করছে। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে সহায়তা করা এবং আটক আইএস সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, এই সীমিত উপস্থিতি স্থানীয় অংশীদারদের শক্তিশালী করে এবং বড় আকারের যুদ্ধ এড়াতে সহায়তা করে।

ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ ও সতর্কতা
সিরিয়ার নতুন প্রশাসন রাজনৈতিকভাবে আইএসবিরোধী জোটে যুক্ত হলেও এখনো সামরিক ও অভ্যন্তরীণ সংস্কার জরুরি। বিশেষ করে বিদেশি জঙ্গি কমান্ডারদের প্রভাবমুক্ত না করতে পারলে ঝুঁকি থেকেই যাবে। সিরিয়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া—যেখানেই ক্ষমতার শূন্যতা তৈরি হবে, সেখানেই আইএস মাথা তুলতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জনপ্রিয় সংবাদ

অনুমতি ছাড়া বৈঠক করায় সৌদি আরবে আটক বাংলাদেশিরা, সতর্ক দূতাবাস

আইএস আবার সক্রিয়, সিরিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া ছড়াচ্ছে রক্তাক্ত ছায়া

০৬:২৮:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

সিরিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া—দুটি ভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া নৃশংস হামলা আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছে, তথাকথিত ইসলামিক স্টেট এখনও পুরোপুরি নিস্তেজ হয়নি। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো স্পষ্ট করে দিচ্ছে, ভূখণ্ড হারালেও এই জঙ্গি সংগঠনের সহিংসতা ও প্রভাব রয়ে গেছে বিশ্বজুড়ে।

সিরিয়ায় মার্কিন নাগরিক হত্যা
সপ্তাহান্তে সিরিয়ায় তিনজন মার্কিন নাগরিক হত্যার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে আইএসের সম্পৃক্ততার আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, এই ধরনের হামলা দেখাচ্ছে যে সংগঠনটি সুযোগ পেলেই আন্তর্জাতিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে প্রস্তুত।

অস্ট্রেলিয়ায় ভয়াবহ হামলার ইঙ্গিত
একই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার একটি ধর্মীয় সমাবেশে চালানো হামলাও তদন্তকারীদের দৃষ্টি কেড়েছে। হামলাকারীদের গাড়ি থেকে আইএসের পতাকা ও বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, বাবা ও ছেলে—এই দুই হামলাকারী দীর্ঘদিন ধরে চরমপন্থার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি অঞ্চলে সামরিক ধাঁচের প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বাস্তব জঙ্গিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ অনেক সময় সহিংসতায় ঝাঁপিয়ে পড়ার শেষ ধাক্কা দেয়।

সাহসিক প্রতিরোধেও থামেনি ট্র্যাজেডি
এই হামলায় অস্ট্রেলিয়ায় কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে। তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত, যদি না কয়েকজন সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে প্রতিরোধে নামতেন। একজন পথচারী হামলাকারীর অস্ত্র কিছু সময়ের জন্য কেড়ে নিতে সক্ষম হন। পরে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, এক প্রবীণ ব্যক্তি হামলাকারীর হাত থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ও তাঁর স্ত্রী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন, একে অপরের হাত ধরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

আইএসের কৌশল ও বৈশ্বিক উদ্বেগ
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন করে তথাকথিত খেলাফত গড়ার ক্ষমতা না থাকলেও আইএস এখন বিচ্ছিন্ন হামলার মাধ্যমে আমেরিকান, ইহুদি ও খ্রিস্টান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এই বাস্তবতা থেকেই সিরিয়ায় সীমিত মার্কিন সেনা উপস্থিতি বজায় রাখার কৌশল নেওয়া হয়েছে, যাতে সেখানেই জঙ্গিদের দমন করা যায়, অন্য শহরে নয়।

সিরিয়ায় সীমিত সেনা উপস্থিতির তাৎপর্য
বর্তমানে সিরিয়ায় এক হাজারের কম মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। তারা মূলত উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থান করছে। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে সহায়তা করা এবং আটক আইএস সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, এই সীমিত উপস্থিতি স্থানীয় অংশীদারদের শক্তিশালী করে এবং বড় আকারের যুদ্ধ এড়াতে সহায়তা করে।

ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ ও সতর্কতা
সিরিয়ার নতুন প্রশাসন রাজনৈতিকভাবে আইএসবিরোধী জোটে যুক্ত হলেও এখনো সামরিক ও অভ্যন্তরীণ সংস্কার জরুরি। বিশেষ করে বিদেশি জঙ্গি কমান্ডারদের প্রভাবমুক্ত না করতে পারলে ঝুঁকি থেকেই যাবে। সিরিয়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া—যেখানেই ক্ষমতার শূন্যতা তৈরি হবে, সেখানেই আইএস মাথা তুলতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।