০৪:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
রেমিট্যান্স না সোনা, কোন পথে বেশি সঞ্চয়? প্রবাসীদের নতুন হিসাব মালয়েশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা, ছয় রাজ্যে ঘরছাড়া হাজারো মানুষ হরমোনজনিত সমস্যার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি: সিঙ্গাপুরের বহু নারীর প্রজনন ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে ঝিলমিল পুঁতির জাদুতে বিক্রি শেষ মিনিটেই, ঘরে বসে গড়ে ওঠা এক শিল্পীর সাফল্যের গল্প এমন ভয়ংকর পরিবেশ দেখার জন্য এই সরকারকে আনা হয়নি: অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ক্রিসমাস উপহারে সৌন্দর্যের ঝলক, সব বাজেটেই প্রস্তুত বিশ্ববিখ্যাত সেট অবতার ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ আগুন ধরাল পর্দায়, জেমস ক্যামেরনের আরেক বিস্ময় অস্থিতিশীল আবহাওয়ায় সতর্ক আমিরাতবাসী, ঘরে বসে কাজ ও যাতায়াতে পরিবর্তন সাহায্য চেয়েও না পাওয়ার অভিযোগ প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের,আবারও আশ্বাস সরকারের গাজায় ত্রাণ কার্যক্রম ভেঙে পড়ার শঙ্কা, ইসরায়েলের বাধায় উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ

মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক এ কে খন্দকারের জীবনাবসান

মহান মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক, কিলো ফ্লাইটের কমান্ডার এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল অবসরপ্রাপ্ত এ কে খন্দকার বীর উত্তম আর নেই। বার্ধক্যজনিত কারণে শনিবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৯৬ বছর। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা ও কিলো ফ্লাইট
এ কে খন্দকার ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় দূরদর্শী সামরিক নেতৃত্বের এক উজ্জ্বল প্রতীক। ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনী ত্যাগ করে ভারতে যান এবং মুজিবনগর সরকারের অধীনে মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ ও সামরিক অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তার নেতৃত্বেই নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে গড়ে ওঠে বাংলাদেশের প্রথম বিমান ইউনিট কিলো ফ্লাইট। সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও এই ইউনিট শত্রুর বিরুদ্ধে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অভিযান পরিচালনা করে ইতিহাসে স্থান করে নেয়।

স্বাধীনতার পর বিমান বাহিনী গঠন
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পুনর্গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এ কে খন্দকার। তিনি বিমান বাহিনীর প্রথম প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং একটি সুসংগঠিত ও প্রাতিষ্ঠানিক বাহিনী গড়ে তুলতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন। পরে ২০১১ সালে তাকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়। তার সম্মানে ঢাকার কুর্মিটোলা বিমান ঘাঁটির নামকরণ করা হয়েছে।

রাজনৈতিক জীবন
সামরিক জীবনের পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনেও সক্রিয় ছিলেন এ কে খন্দকার। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পাবনা-২ আসন থেকে  আওয়ামী লীগ থেকে  সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং জাতীয় রাজনীতিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন।

পারিবারিক জীবন ও শোক
এ কে খন্দকার দুই ছেলে, এক কন্যা এবং তিন নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। এর আগে চলতি বছরের ৮ জুন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার সহধর্মিণী ফরিদা খন্দকার ইন্তেকাল করেন।

একজন বীরের বিদায়
এ কে খন্দকারের মৃত্যুতে দেশ হারাল একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, দক্ষ সামরিক নেতা এবং প্রাজ্ঞ রাষ্ট্রনায়ককে। তার অবদান ও নেতৃত্ব বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

রেমিট্যান্স না সোনা, কোন পথে বেশি সঞ্চয়? প্রবাসীদের নতুন হিসাব

মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক এ কে খন্দকারের জীবনাবসান

০২:৫৫:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫

মহান মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক, কিলো ফ্লাইটের কমান্ডার এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল অবসরপ্রাপ্ত এ কে খন্দকার বীর উত্তম আর নেই। বার্ধক্যজনিত কারণে শনিবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল প্রায় ৯৬ বছর। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা ও কিলো ফ্লাইট
এ কে খন্দকার ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় দূরদর্শী সামরিক নেতৃত্বের এক উজ্জ্বল প্রতীক। ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনী ত্যাগ করে ভারতে যান এবং মুজিবনগর সরকারের অধীনে মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ ও সামরিক অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তার নেতৃত্বেই নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে গড়ে ওঠে বাংলাদেশের প্রথম বিমান ইউনিট কিলো ফ্লাইট। সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও এই ইউনিট শত্রুর বিরুদ্ধে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অভিযান পরিচালনা করে ইতিহাসে স্থান করে নেয়।

স্বাধীনতার পর বিমান বাহিনী গঠন
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পুনর্গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এ কে খন্দকার। তিনি বিমান বাহিনীর প্রথম প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং একটি সুসংগঠিত ও প্রাতিষ্ঠানিক বাহিনী গড়ে তুলতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন। পরে ২০১১ সালে তাকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়। তার সম্মানে ঢাকার কুর্মিটোলা বিমান ঘাঁটির নামকরণ করা হয়েছে।

রাজনৈতিক জীবন
সামরিক জীবনের পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনেও সক্রিয় ছিলেন এ কে খন্দকার। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পাবনা-২ আসন থেকে  আওয়ামী লীগ থেকে  সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং জাতীয় রাজনীতিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন।

পারিবারিক জীবন ও শোক
এ কে খন্দকার দুই ছেলে, এক কন্যা এবং তিন নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। এর আগে চলতি বছরের ৮ জুন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার সহধর্মিণী ফরিদা খন্দকার ইন্তেকাল করেন।

একজন বীরের বিদায়
এ কে খন্দকারের মৃত্যুতে দেশ হারাল একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, দক্ষ সামরিক নেতা এবং প্রাজ্ঞ রাষ্ট্রনায়ককে। তার অবদান ও নেতৃত্ব বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।