প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার বলেছেন, শহীদ শরিফ ওসমান হাদি কখনোই বিস্মৃত হবেন না। তিনি যে শিক্ষা জাতির জন্য রেখে গেছেন, সেই শিক্ষার মধ্য দিয়েই তিনি চিরকাল জীবিত থাকবেন।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদির জানাজা নামাজের আগে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, প্রিয় হাদি, তুমি নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশের মধ্য দিয়েই তুমি আমাদের দেখিয়ে দিয়েছ, নির্বাচন কীভাবে হওয়া উচিত। সেই প্রক্রিয়াকে আমাদের সবাইকে গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, হাদি দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে একটি নির্বাচনী প্রচারণা পরিচালনা করতে হয় এবং কীভাবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত হতে হয়।
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, তুমি যে শিক্ষা আমাদের দিয়ে গেছ, তা হৃদয়ে ধারণ করলেই তুমি আমাদের স্মৃতিতে জীবিত থাকবে। হাদি, তুমি কখনো হারিয়ে যাবে না। কেউই তোমাকে ভুলতে পারবে না। তুমি আমাদের সঙ্গে আগামী বহু দশক জুড়ে থেকে যাবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হাদিকে স্মরণ করেই তারা জাতীয় অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলবেন।
জাতীয় সংসদ ভবনের পাশের মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে হাদির জানাজায় সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার হাজারো মানুষ অংশ নেন। অনেকেই মিছিল নিয়ে আসেন এবং হাদির হত্যার বিচার দাবি করে স্লোগান দেন। তারা অঙ্গীকার করেন, তার মৃত্যু কখনোই বৃথা যাবে না।
সম্প্রতি এক টেলিভিশন ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হাদি ছিলেন পরাজিত শক্তি ও ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসীদের শত্রু। তিনি বলেন, বিপ্লবীদের ভয় দেখাতে তার কণ্ঠ রুদ্ধ করার যে অপচেষ্টা করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হবে। ভয়, সন্ত্রাস কিংবা রক্তপাত দিয়ে এই দেশের গণতন্ত্রের যাত্রা থামানো যাবে না। শহীদ হাদি ছিলেন এই প্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ। আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়া এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার পরবর্তী ধাপে সক্রিয় ভূমিকা রাখা ছিল তার একমাত্র আকাঙ্ক্ষা।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, সরকার হাদির স্ত্রী ও তার একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব নেবে। হাদির মৃত্যুর পর শনিবার দেশজুড়ে এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে।
এই উপলক্ষে দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
এ ছাড়া শহীদ হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনায় শুক্রবার জুমার নামাজের পর সারা দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিপুল জনসমাগমের মধ্য দিয়ে হাদির জানাজা সম্পন্ন হয়।
হাদির অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অঙ্গনের জন্য এই ক্ষতি অপূরণীয়।
তিনি বলেন, আমি তার আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি এবং তার শোকসন্তপ্ত স্ত্রী, পরিবারের সদস্য, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
ইউএনবি 



















