ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পোশাক শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় র্যাব জানিয়েছে, কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ তাকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করার পর উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে দেন। শনিবার এ ঘটনায় গ্রেপ্তারদের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য দেন র্যাব-১৪-এর পরিচালক নাইমুল হাসান।
ঘটনার পটভূমি
র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিকেলে কারখানার ভেতরে দিপু চন্দ্র দাসকে প্রথমে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়। এরপর কারখানা কর্তৃপক্ষ তার নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে তাকে উত্তেজিত জনতার সামনে হস্তান্তর করে। সেখানেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
নৃশংস হত্যাকাণ্ড
বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকায় পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কারখানার শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে মারধর করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তার মরদেহ গাছের ডালের সঙ্গে বেঁধে আগুন দেওয়া হয়। ঘটনাটি স্থানীয় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
গ্রেপ্তার ও তদন্তের অগ্রগতি
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে র্যাব-১৪ সাতজনকে এবং পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। কারখানার ফ্লোর ম্যানেজার আলমগীর হোসেন এবং কোয়ালিটি ইনচার্জ মিরাজ হোসেন আকনকেও আটক করা হয়েছে। নিহত দিপুর ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
র্যাবের বক্তব্য
র্যাব-১৪-এর পরিচালক নাইমুল হাসান বলেন, একজন মানুষকে এভাবে হত্যা করে মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়া কোনোভাবেই আইনের আওতায় পড়ে না এবং রাষ্ট্র কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এটি মেনে নিতে পারে না। তিনি জানান, কে বা কারা কীভাবে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তোলে, সে বিষয়ে এখনো স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এর পেছনে পূর্ব শত্রুতা বা অন্য কোনো কারণ ছিল কি না।
আইনি প্রক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
মামলাটি যেহেতু থানায় দায়ের হয়েছে, তাই মূল তদন্ত করবে পুলিশ। পাশাপাশি র্যাব নিজস্বভাবে ছায়া তদন্ত চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে। র্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তারদের কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন এবং বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 



















