সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান শাহাদাত এ আদেশ দেন।
আদালতের আদেশ ও শুনানির তথ্য
প্রসিকিউশন বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিমান্ড শেষে আনিস আলমগীরকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর কাজী শাহনেওয়াজ। আসামিপক্ষের আইনজীবী নাজনীন নাহারসহ কয়েকজন আইনজীবী তার জন্য কারাগারে ডিভিশন চেয়ে আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত কারাবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
গ্রেপ্তার ও রিমান্ডের পটভূমি
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর রাতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। পরে মধ্যরাতে ‘জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য আরিয়ান আহমেদ তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের ষড়যন্ত্র এবং নিষিদ্ধ সংগঠনকে উসকে দেওয়ার সঙ্গে আনিস আলমগীরসহ চারজন জড়িত। এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন, ফ্যাশন মডেল মারিয়া কিসপট্টা এবং উপস্থাপক ইমতু রাতিশ ইমতিয়াজ। পরদিন আদালত আনিস আলমগীরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের অগ্রগতি
তদন্ত কর্মকর্তার রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় আনিস আলমগীরের কাছ থেকে মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। যাচাই শেষে প্রয়োজনে তাকে আবারও রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হতে পারে। এ অবস্থায় তদন্তের স্বার্থে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানানো হয়।
মামলার অভিযোগ ও বিবরণ
উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করার পর তার অনুসারীরা দেশে গোপনে অবস্থান নিয়ে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। অভিযোগে দাবি করা হয়, আসামিরা আগে থেকেই আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় ছিলেন এবং গত বছরের ৫ আগস্টের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন টকশোর মাধ্যমে নিষিদ্ধ সংগঠন পুনরুজ্জীবনের প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।
মামলার বিবরণে আরও বলা হয়, ১৪ ডিসেম্বর রাতে আরিয়ান আহমেদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকটি পোস্ট দেখে অভিযোগ করেন, এসব পোস্টের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এর ফলে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা উৎসাহিত হয়ে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















