নীরব ছবির যুগ পেরিয়ে একশ বছরের বেশি সময় কেটে গেছে। তবু অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে যখন পর্দায় ছায়া নড়ে, আর পাশে বসা অর্গান থেকে উঠে আসে গির্জার মতো গম্ভীর সুর, তখন আধুনিক দর্শকের মনেও কাঁপন ধরে। পুরোনো ভৌতিক ছবি নসফেরাতু আজও সেই অভিজ্ঞতার কেন্দ্রে। শতাব্দী পেরিয়েও এই ছবি যেন দর্শকের অবচেতনে ভয় আর সৌন্দর্যের একসঙ্গে বাসা বেঁধে রেখেছে
নীরব ছবির সঙ্গীতে অর্গানের অবধারিত উপস্থিতি
নসফেরাতুর শিরোনামেই সিম্ফনির ইঙ্গিত ছিল। শব্দহীন ছবিকে সুরে রূপ দেওয়ার সেই ভাবনাই আজ নতুন করে ফিরছে। মূল সুর হারিয়ে যাওয়ার পর নানা ঘরানার সঙ্গীত এই ছবির সঙ্গে জুড়েছে। কিন্তু অভিজ্ঞ দর্শকদের কাছে অর্গানই সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য। গির্জার মতো ধ্বনি, ভারী বায়ু আর কাঁপুনি দেওয়া নোট ভৌতিক দৃশ্যকে আরও গভীর করে তোলে।
অর্গানবাদকের তাৎক্ষণিক সৃজনশীলতা
আধুনিক অর্গানবাদকেরা কোনো লিখিত সুর ছাড়াই পর্দার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গীত তৈরি করেন। কোথাও প্রেমের দৃশ্যে কোমল ধ্বনি, আবার কোথাও ভয় দেখাতে তীব্র ও বেসুরো আঘাত। এই তাৎক্ষণিক সৃজনশীলতাই নীরব ছবিকে নতুন প্রাণ দেয়। দর্শক বুঝতে পারেন, প্রতিটি প্রদর্শনী আলাদা, প্রতিটি সুর একবারের জন্য।

থিয়েটার অর্গানের নতুন পুনর্জাগরণ
একসময় হাজার হাজার সিনেমা হলে অর্গান ছিল নিয়মিত। আজ সংখ্যায় কম হলেও আবার আগ্রহ বাড়ছে। পুরোনো হলগুলো সংস্কার করে অর্গানসহ নীরব ছবি দেখানো হচ্ছে। কোথাও শতবর্ষী পাইপ টিউন করা হয় যত্ন করে, কোথাও যান্ত্রিক শব্দ প্রভাবও সচল রাখা হয়। স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগে এই ঐতিহ্য টিকে আছে।
জীবন্ত সুরে মানবিক হয়ে ওঠে প্রযুক্তি
লাইভ অর্গান সঙ্গীতে দর্শক আর কেবল দর্শক থাকেন না। সুরের ওঠানামায় তারা সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। প্রযুক্তিনির্ভর চলচ্চিত্র অভিজ্ঞতা তখন মানবিক হয়ে ওঠে। নীরব ছবির নির্মাতারা কেন এই মাধ্যমকে পরিপূর্ণ ভাবতেন, তার উত্তর মেলে এই প্রেক্ষাগৃহেই।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















