দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার এক বছর পূর্তিতে রাষ্ট্রপতি লি জে মিয়ং নিহতদের পরিবারের কাছে গভীরভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি জেজু এয়ার দুর্ঘটনার পেছনের পূর্ণ সত্য প্রকাশের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সোমবার প্রকাশিত এক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, নাগরিকদের জীবন ও নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে এই মর্মান্তিক ক্ষতির জন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
দুর্ঘটনার স্মৃতি ও তদন্তে বিলম্ব
গত বছরের এই দিনে জেজু এয়ার–এর একটি উড়োজাহাজ রানওয়ে ছাড়িয়ে গিয়ে কংক্রিটের বাঁধে আছড়ে পড়ে আগুনে ভস্মীভূত হয়। উড়োজাহাজে থাকা একশ একাশি জনের মধ্যে একশ ঊনআশি জনই প্রাণ হারান। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রকাশ বিলম্বিত হওয়ায় নিহতদের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ ও অনিশ্চয়তা বাড়ে। প্রাথমিক প্রতিবেদনে উভয় ইঞ্জিনে পাখির আঘাতের কথা বলা হলেও, নিরাপত্তা ত্রুটি, রানওয়ের নকশা এবং শেষ মুহূর্তে পাইলটদের সিদ্ধান্ত নিয়ে বহু প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত।
রাষ্ট্রপতির বক্তব্য ও সংস্কারের বার্তা
রাষ্ট্রপতি বলেন, এই বিপর্যয় আমাদের সমাজের কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ও ব্যবস্থাগত সমস্যাগুলো স্পষ্ট করে দিয়েছে। এখন প্রয়োজন আনুষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তব পরিবর্তন ও কার্যকর পদক্ষেপ। তার ভাষায়, সত্য উন্মোচন ও দায় নির্ধারণই হবে ন্যায়বিচারের প্রথম শর্ত।

তদন্ত ব্যবস্থায় পরিবর্তনের উদ্যোগ
দুর্ঘটনা তদন্তে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়াতে জাতীয় সংসদ বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত বোর্ডের কাঠামোগত সংস্কার পরিকল্পনা পর্যালোচনা করছে। এতে স্বাধীনতা বৃদ্ধি এবং বিশেষজ্ঞ সক্ষমতা জোরদারের প্রস্তাব রয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন তদন্তে বিলম্ব বা সন্দেহের অবকাশ না থাকে।
স্মরণসভা ও প্রতিশ্রুতি
বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মুআন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর–এ নিহতদের স্মরণে আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সরকার বলছে, এই দিনটি কেবল শোকের নয়, নিরাপত্তা সংস্কারের পথে দৃঢ় অগ্রযাত্রার প্রতিশ্রুতিও।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















