যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে আজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত বৈঠক। আলোচনার কেন্দ্রে থাকছে গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ, পাশাপাশি ইরান ও লেবানন পরিস্থিতি। দীর্ঘদিন ধরে স্থবির হয়ে থাকা গাজা শান্তি প্রক্রিয়ায় নতুন গতি আনতেই এই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গাজা নিয়ে পরবর্তী ধাপের আলোচনা
নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ট্রাম্পের আমন্ত্রণে তিনি এই বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন এবং সেখানে গাজার যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে বিশদ আলোচনা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় অক্টোবর মাসে যে যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় সব পক্ষ সম্মত হয়েছিল, তার মূল লক্ষ্য ছিল গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, হামাসের অস্ত্র সমর্পণ এবং গাজায় তাদের শাসন ভূমিকার অবসান। তবে বাস্তবতায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বড় বাধার মুখে পড়েছে।
ওয়াশিংটনের প্রস্তাব অনুযায়ী, গাজায় একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের কথা রয়েছে, যেখানে ফিলিস্তিনি প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে শান্তি বোর্ড কাজ করবে। এর পর আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনাও রয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল ও হামাস একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে, ফলে পরবর্তী ধাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও বেড়েছে।

যুদ্ধবিরতির মাঝেও সহিংসতা
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজায় সহিংসতা পুরোপুরি থামেনি। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হামলায় তিনজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। হামাস এখনো অস্ত্র সমর্পণে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে এবং ইসরায়েল সতর্ক করে বলেছে, শান্তিপূর্ণভাবে নিরস্ত্রীকরণ না হলে আবার সামরিক অভিযান শুরু হতে পারে।
লেবানন ও ইরান প্রসঙ্গ
বৈঠকে লেবানন সীমান্ত পরিস্থিতিও আলোচনায় আসবে। সেখানে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে গত বছর যুদ্ধবিরতি হলেও অস্ত্র সমর্পণ প্রশ্নে অগ্রগতি সীমিত। ইসরায়েলের অভিযোগ, হিজবুল্লাহ আবার শক্তি সঞ্চয় করছে, তাই তারা নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে। অন্যদিকে ইরান সম্প্রতি ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া চালিয়েছে, যা তেল আবিবের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ইরানের এই তৎপরতা নিয়েও কথা বলবেন।
রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক গুরুত্ব
এই বৈঠক এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমলেও স্থায়ী শান্তির পথ এখনো স্পষ্ট নয়। গাজা, লেবানন ও ইরান—তিনটি ইস্যুই পরস্পর সম্পর্কিত এবং যেকোনো সিদ্ধান্ত পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই ট্রাম্প–নেতানিয়াহু আলোচনার দিকে আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন গভীরভাবে নিবদ্ধ।
সারাক্ষণ রিপোর্ট 


















