০১:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
দীর্ঘায়ুর হিসেবে অবসর পরিকল্পনা নতুন বাস্তবতা বিপ্লব থেকে নির্বাসন: জাক লুই দাভিদের জীবন, রাজনীতি ও ফরাসি শিল্পের অমর উত্তরাধিকার ভারতের প্রতিনিধিত্বে ঢাকায় এসেছেন জয়শঙ্কর, খালেদা জিয়ার শেষ শ্রদ্ধা জানাতে রহস্যময় রুজভেল্ট: শক্তি, বৈপরীত্য আর ইতিহাসের মঞ্চে এক অনন্য মার্কিন নেতা খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিতে যোগ দিতে ঢাকায় নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুদ্রা ধসে ক্ষোভের বিস্ফোরণ, তেহরানে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে চাপে ইরানের শাসনব্যবস্থা লাহোর সফরে অপমান ও আতঙ্কের অভিযোগ, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী কে চিঠিতে কেপি মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র প্রতিবাদ প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ, রাষ্ট্রপতির অনুমোদন ১৯৭ মব সন্ত্রাসে মৃত্যু, ১০২ রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণহানি, ৩৮ বিচারবহির্ভূত হত্যা ও ১০৭ কারা হেফাজতে মৃত্যু: ২০২৫ সালে মানবাধিকারের ভয়াবহ চিত্র চিজি টিক্কা ওয়ান্টনের মচমচে স্বাদে উৎসবের আমেজ

আবেগের বিস্ফোরণ, গল্পের তাল কেটে গেল: স্ট্রেঞ্জার থিংস এর নতুন পর্বে উত্তেজনা আর বিশৃঙ্খলার সহাবস্থান

স্ট্রেঞ্জার থিংসের সর্বশেষ পর্বগুলো শুরুতেই দর্শককে টেনে নেয় বড় বাজি আর আরও বড় আবেগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কিন্তু পর্ব যত এগোয়, ততই স্পষ্ট হয়—আবেগ আছে, তীব্রতা আছে, অথচ গল্পের প্রবাহ বারবার হোঁচট খাচ্ছে। কোথাও স্মৃতিমেদুর মুহূর্তে সিরিজের পুরোনো হৃদস্পন্দন ফিরে আসে, আবার কোথাও অতিরিক্ত নাটকীয়তা আর অসম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত সেই ছন্দ ভেঙে দেয়।

স্টিভ আর ডাস্টিনের মুখোমুখি আবেগ
নতুন পর্বগুলোর সবচেয়ে সাহসী মুহূর্ত আসে স্টিভ আর ডাস্টিনের কথোপকথনে। ক্লান্ত স্টিভ যখন ডাস্টিনকে আর নায়ক সাজার চেষ্টা না করতে বলে, তখনই উঠে আসে এডি নামের সেই প্রিয় চরিত্রের ক্ষত। তার আত্মত্যাগ ছিল দৃশ্যত জাঁকজমকপূর্ণ, সংগীত আর আবহে স্মরণীয়, কিন্তু গল্পের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এই প্রশ্ন তোলাটাই যেন নির্মাতাদের আত্মসমালোচনার ইঙ্গিত। ডাস্টিনের স্বীকারোক্তি, এক ভাই হারানোর যন্ত্রণা আর আরেকজনকে হারানোর ভয়—এই দৃশ্যগুলো নীরব সংযমে অভিনীত, যা সিরিজের পুরোনো শক্তিকে মনে করিয়ে দেয়।

গল্পের বিশৃঙ্খলা আর থমকে যাওয়া গতি
উইল এক ঝটকায় তিনটি ডেমোগর্গনকে পরাস্ত করার পরও ভয় থামে না। ভেকনা রয়ে যায় অদৃশ্য নিয়ন্ত্রকের মতো, অপহৃত শিশুদের অজানা পরিণতির দিকে টেনে নিয়ে যায়। অন্যদিকে আপসাইড ডাউনে আটকে পড়া ডাস্টিন, স্টিভ, ন্যান্সি আর জোনাথনের অংশে অবশেষে সেই জগতের ব্যাখ্যা কিছুটা পরিষ্কার হয়। কিন্তু এই টানটান পরিস্থিতির মাঝেই ন্যান্সি আর জোনাথনের সম্পর্কের অমীমাংসিত টানাপোড়েন গল্পের গতি নষ্ট করে দেয়। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে সম্পর্ক নিয়ে এমন দ্বিধা দর্শকের ধৈর্য পরীক্ষা নেয়।

Stranger Things Season 5 Volume 2 review: Duffer Brothers elevate emotion  over spectacle in fabulous setup for finale | Web Series

এলেভেনের ম্লান উপস্থিতি
সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয়, এলেভেনের উপস্থিতি। একসময় যার গল্প ছিল সবচেয়ে হৃদয়বিদারক, এবার সে যেন প্রান্তিক। পুরোনো সংলাপের পুনরাবৃত্তি আর শক্তিহীন কথোপকথনে তার আগের রহস্যময় আকর্ষণ হারিয়ে যায়। বন্ধুদের প্রথম দিনের স্মৃতি টেনে আনা একটি সংলাপ সামান্য উষ্ণতা ফেরালেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

ম্যাক্সের দৃশ্যেই প্রাণ ফিরে আসে
এই ক্লান্তির মাঝেও ম্যাক্সই সিরিজের প্রাণ। হলির সঙ্গে তার সম্পর্ক আর লুকাসের সঙ্গে পুনর্মিলন মধুর বেদনায় ভরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এই মুহূর্তগুলো স্বাভাবিক, আন্তরিক। অন্ধকার থেকে বাঁচিয়ে রাখা সেই গান নিয়ে হালকা হাসি দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়। এখানেই সিরিজ আবার মনে করিয়ে দেয়, কেন একসময় এই গল্প এত প্রিয় ছিল।

শেষ কথা
স্ট্রেঞ্জার থিংসের এই পর্বগুলোতে আবেগ ঠিকই আঘাত হানে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে গল্প যেন ভারী আর টানটান হয়ে উঠেছে। বন্ধুত্ব, শোক আর ক্ষতির ভাষা সিরিজ এখনও বোঝে, তবে কতবার আর কতভাবে তা প্রমাণ করতে চায়—সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি এখনও ঝুলে আছে, আর দর্শক অপেক্ষায় থাকে, এই যাত্রার শেষ সুর ঠিক কবে বাজবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

দীর্ঘায়ুর হিসেবে অবসর পরিকল্পনা নতুন বাস্তবতা

আবেগের বিস্ফোরণ, গল্পের তাল কেটে গেল: স্ট্রেঞ্জার থিংস এর নতুন পর্বে উত্তেজনা আর বিশৃঙ্খলার সহাবস্থান

১১:৪৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫

স্ট্রেঞ্জার থিংসের সর্বশেষ পর্বগুলো শুরুতেই দর্শককে টেনে নেয় বড় বাজি আর আরও বড় আবেগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কিন্তু পর্ব যত এগোয়, ততই স্পষ্ট হয়—আবেগ আছে, তীব্রতা আছে, অথচ গল্পের প্রবাহ বারবার হোঁচট খাচ্ছে। কোথাও স্মৃতিমেদুর মুহূর্তে সিরিজের পুরোনো হৃদস্পন্দন ফিরে আসে, আবার কোথাও অতিরিক্ত নাটকীয়তা আর অসম্পূর্ণ সিদ্ধান্ত সেই ছন্দ ভেঙে দেয়।

স্টিভ আর ডাস্টিনের মুখোমুখি আবেগ
নতুন পর্বগুলোর সবচেয়ে সাহসী মুহূর্ত আসে স্টিভ আর ডাস্টিনের কথোপকথনে। ক্লান্ত স্টিভ যখন ডাস্টিনকে আর নায়ক সাজার চেষ্টা না করতে বলে, তখনই উঠে আসে এডি নামের সেই প্রিয় চরিত্রের ক্ষত। তার আত্মত্যাগ ছিল দৃশ্যত জাঁকজমকপূর্ণ, সংগীত আর আবহে স্মরণীয়, কিন্তু গল্পের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এই প্রশ্ন তোলাটাই যেন নির্মাতাদের আত্মসমালোচনার ইঙ্গিত। ডাস্টিনের স্বীকারোক্তি, এক ভাই হারানোর যন্ত্রণা আর আরেকজনকে হারানোর ভয়—এই দৃশ্যগুলো নীরব সংযমে অভিনীত, যা সিরিজের পুরোনো শক্তিকে মনে করিয়ে দেয়।

গল্পের বিশৃঙ্খলা আর থমকে যাওয়া গতি
উইল এক ঝটকায় তিনটি ডেমোগর্গনকে পরাস্ত করার পরও ভয় থামে না। ভেকনা রয়ে যায় অদৃশ্য নিয়ন্ত্রকের মতো, অপহৃত শিশুদের অজানা পরিণতির দিকে টেনে নিয়ে যায়। অন্যদিকে আপসাইড ডাউনে আটকে পড়া ডাস্টিন, স্টিভ, ন্যান্সি আর জোনাথনের অংশে অবশেষে সেই জগতের ব্যাখ্যা কিছুটা পরিষ্কার হয়। কিন্তু এই টানটান পরিস্থিতির মাঝেই ন্যান্সি আর জোনাথনের সম্পর্কের অমীমাংসিত টানাপোড়েন গল্পের গতি নষ্ট করে দেয়। মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে সম্পর্ক নিয়ে এমন দ্বিধা দর্শকের ধৈর্য পরীক্ষা নেয়।

Stranger Things Season 5 Volume 2 review: Duffer Brothers elevate emotion  over spectacle in fabulous setup for finale | Web Series

এলেভেনের ম্লান উপস্থিতি
সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয়, এলেভেনের উপস্থিতি। একসময় যার গল্প ছিল সবচেয়ে হৃদয়বিদারক, এবার সে যেন প্রান্তিক। পুরোনো সংলাপের পুনরাবৃত্তি আর শক্তিহীন কথোপকথনে তার আগের রহস্যময় আকর্ষণ হারিয়ে যায়। বন্ধুদের প্রথম দিনের স্মৃতি টেনে আনা একটি সংলাপ সামান্য উষ্ণতা ফেরালেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

ম্যাক্সের দৃশ্যেই প্রাণ ফিরে আসে
এই ক্লান্তির মাঝেও ম্যাক্সই সিরিজের প্রাণ। হলির সঙ্গে তার সম্পর্ক আর লুকাসের সঙ্গে পুনর্মিলন মধুর বেদনায় ভরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এই মুহূর্তগুলো স্বাভাবিক, আন্তরিক। অন্ধকার থেকে বাঁচিয়ে রাখা সেই গান নিয়ে হালকা হাসি দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়। এখানেই সিরিজ আবার মনে করিয়ে দেয়, কেন একসময় এই গল্প এত প্রিয় ছিল।

শেষ কথা
স্ট্রেঞ্জার থিংসের এই পর্বগুলোতে আবেগ ঠিকই আঘাত হানে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে গল্প যেন ভারী আর টানটান হয়ে উঠেছে। বন্ধুত্ব, শোক আর ক্ষতির ভাষা সিরিজ এখনও বোঝে, তবে কতবার আর কতভাবে তা প্রমাণ করতে চায়—সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি এখনও ঝুলে আছে, আর দর্শক অপেক্ষায় থাকে, এই যাত্রার শেষ সুর ঠিক কবে বাজবে।