সারাক্ষণ প্রতিবেদক
ষাটের দশকের বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দুই দেশের জনপ্রিয় নায়িকা শবনম। তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছে “রুপনগরের রাজকন্যা রুপের জাদু” এনে দেয় আবার কখনো ফিসফিসিয়ে কথা বলা রাজ্জাকের “আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন” শোনে তখন লজ্জায় লাল হয়। আবার কখনো প্রিয় “আম্মাজান” হয়েও মান্নার সাথে কথা বলেন না দীর্ঘদিন। তিনি উপমহাদেশের একটা রত্ন “শবনম”।
বাংলাদেশি চলচ্চিত্র দিয়ে অভিষেক ঘটলেও স্বাধীনতা-উত্তর সময়টাতে উর্দু চলচ্চিত্রে পাকিস্তানের হয়ে তিনি অর্জন করেছিলেন আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের সিনেমায় সম্ভাব্য সব পুরস্কার ও স্বীকৃতিও তিনি অর্জন করেছেন।
হারানো দিন, নাচের পুতুল, কখনো আসেনি, সন্ধি, এ দেশ তোমার আমার এর মতো বাংলা সিনেমায় যেমন কাজ করেছেন তেমনি চান্দা, দিল নাশি, দিল্লাগি, আখেরি স্টেশন, জাঞ্জির সহ অসংখ্য পাকিস্তানি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়েছেন সমানভাবে।
শবনম চলচ্চিত্রে যুক্ত হয়েছিলেন ১৯৫৮ সালে। ১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’ সিনেমার মাধ্যমে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন শবনম। কথিত আছে উপমহাদেশে ১৯৬০-এর দশক থেকে ১৯৮০-এর দশক পর্যন্ত রোমান্টিক চরিত্রে তিনিই সবচাইতে বেশী জনপ্রিয় এবং আবেদনময়ী নায়িকা ছিলেন। যাকে বলিউডের নায়িকাগণ ও ঈর্ষা করতো। এখনও পাকিস্তানের মিডিয়া ও সাধারণ দর্শক মনে রেখেছেন তাকে।
১৯৮৮ সালে শবনম তার চরিত্র পরিবর্তন করেন এবং পুনরায় ঢাকা ও লাহোরের চলচ্চিত্রাঙ্গনে অভিনয় করতে থাকেন। বাংলাদেশে করা আম্মাজান সিনেমার অনেকাংশেই তার জীবনের সাথে মিলে যায়। শবনমের জীবনের শেষ অভিনয় টাই ছিলো “আম্মাজান” সিনেমায়। ওই সময় শবনম বলেছিলেন, এখনো দর্শকরা আমাকে ‘আম্মাজান’ বলে ডাকেন। এটাই বড় প্রাপ্তি।
তারপর অনেক সিনেমার অফার পেয়েছি। ‘আম্মাজান’ করার পর উপযুক্ত চরিত্রের অভাবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো হয়নি। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও একই সঙ্গে মনের মতো চিত্রনাট্য ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে আর কাজ করা হয়নি। ২০২২ সালের ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে চলচ্চিত্র থেকে গুটিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন।
২০১৯ সালের লাক্স স্টাইল অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তাকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে আতিফ আসলাম দারুণ এক পারফরম্যান্স এর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে মনে করিয়ে দেন গ্ল্যামারগার্ল শবনমের ফ্যান তিনি নিজেও।
Leave a Reply