১১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
সাইকেল যোজনার দুই দশক: নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বিপ্লব বেতনা নদী: সাতক্ষীরার প্রাণ ও সংকটের প্রতিচ্ছবি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ঢাকা (পর্ব-৫৪) মোদি দিল্লির বিধ্বংসী বিস্ফোরণকে ‘চক্রান্ত’ বলে উল্লেখ করলেন সাংবিধানিক সংশোধনী বিল নিয়ে পাকিস্তান সংসদে ভোট, বিরোধীদের ওয়াকআউট ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু, এক দিনে হাসপাতালে ভর্তি ১,১৩৯ জন এলএনজি আমদানিতে ঝুঁকির সতর্কতা: বাংলাদেশের অর্থনীতি দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ আমদানি সুবিধা: রমজানের ১০ পণ্য সহজে আমদানির নির্দেশনা নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়: ব্রিটিশ এমপি বব ব্ল্যাকম্যান মিরপুরে শতাব্দী পরিবহনের বাসে আগুন

জীবন আমার বোন (পর্ব-৮৪)

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
  • 80

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

‘তাই বুঝি, এর জন্যে এতো ঝড়-বৃষ্টি? আগে তো এ রকম ছিলি না? তুই দেখছি পাগল না ক’রে ছাড়বি নাং ‘কেন তুলবি তুই ওসব বাজে কথা?’

‘ভুল হয়েছে বাবা, মাফ ক’রে দে–‘

‘কি অন্যায় করেছি আমি, যে তুই ওসব অলক্ষুণে কথা তুলবি!” ‘আরে বাবা বললেই তো আর কেউ মরে না, মরা কি অতো সহজ!’

‘কি জানিস তুই, কখন কোন কথা লেগে যায়, কখন কোন্ কথা

সত্যি হ’য়ে যায়!’

‘ঠিক আছে, আর কখনো বলবো না, কথা দিচ্ছি!’

ভেজা চোখে ওরু মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো রঞ্জু। বললে, ‘সব

জিনিশ নিয়ে ঠাট্টা-ইয়ার্কি করবি না কিন্তু–‘

‘আবার? মাথা খারাপ তোর!’

‘বুক আলগা কর-‘

খোকার পরনে ছিলো পাঞ্জাবি। দুটো বোতাম খুলে ফেললো সে। রজু থুথুথু ক’রে তিনবার তার বুকে থুতু দিলো।

‘যাক্ বাবা, এ যাত্রা কোনোমতে টিকে গেলাম!’

রজুকে মতিঝিল কলোনীতে পৌঁছে দিয়ে ঘরে ফিরে এলো থোকা; দুপুরের পর তাকে আবার যেতে হবে আনতে।

গেটের মুখেই দেখা লুলু চৌধুরীর সঙ্গে; ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলো না খোকা নিজের চোখকে। তাকে না পেয়ে বিমর্ষ মুখে ফিরে যাচ্ছিলো লুলু চৌধুরী।

‘খুব আশ্চর্য হ’য়ে গিয়েছেন না?’

‘কিছুটা–‘ ড্রইংরুমে বসালো খোকা লুলু চৌধুরীকে।

ময়ূরনীল জর্জেট শাড়ি লুলু চৌধুরীর পরনে। বসার সময় কোলের ওপর আঁচল ঝ’রে পড়ে। ত্রস্ত হাতে কাঁধে আঁচল তুলে লুলু চৌধুরী বললে, ‘কোনো অসুবিধে করলাম না তো?’

নিরুৎসাহিত খোকা বললে, ‘ঠিক তা নয়, তবে আপনাকে যার আপ্যায়ন করার কথা, আপাতত সে ঘরের বাইরে, আমার বোন রঞ্জুর কথা বলছি–*

‘আপনি তো আছেন!’

কিছু একটা বলতে হয় তাই বলা, এমন ভঙ্গিতে গা ছেড়ে খোকা জিগ্যেশ করলে, ‘মুরাদ ঘরে, না বেরিয়েছে?’

‘এতোক্ষণ বোধহয় বেরিয়ে পড়েছে। চিন্তা করলেন কিছু?’

‘বুঝতে পারছি না!’

জনপ্রিয় সংবাদ

সাইকেল যোজনার দুই দশক: নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বিপ্লব

জীবন আমার বোন (পর্ব-৮৪)

১২:০০:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

মাহমুদুল হককে বাদ দিয়ে বাংলা উপন্যাসকে ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশে কেন মাহমুদুল হক বহু পঠিত নয় বা তাঁকে নিয়ে কম আলোচনা হয় এ সত্যিই এক প্রশ্ন। 

মাহমুদুল হকের সাহিত্য নিসন্দেহে স্থান নিয়েছে চিরায়ত সাহিত্যের সারিতে। 

তার উপন্যাস জীবন আমার বোন শুধু সময়ের চিত্র নয়, ইতিহাসকে গল্পের মধ্যে দিয়ে আনা নয় সেখানে রয়ে গেছে আরো অনেক কিছু। 

তরুণ প্রজম্মের পাঠকের কাজে তাই তুলে দেয়া হলো মাহমুদুল হকের এই অনবদ্য উপন্যাস জীবন আমার বোন। আর আগের প্রজম্ম নিশ্চয়ই নতুন করে আরেকবার গ্রহন করুক এক অমৃত সাহিত্য। – সম্পাদক

মাহমুদুল হক

‘তাই বুঝি, এর জন্যে এতো ঝড়-বৃষ্টি? আগে তো এ রকম ছিলি না? তুই দেখছি পাগল না ক’রে ছাড়বি নাং ‘কেন তুলবি তুই ওসব বাজে কথা?’

‘ভুল হয়েছে বাবা, মাফ ক’রে দে–‘

‘কি অন্যায় করেছি আমি, যে তুই ওসব অলক্ষুণে কথা তুলবি!” ‘আরে বাবা বললেই তো আর কেউ মরে না, মরা কি অতো সহজ!’

‘কি জানিস তুই, কখন কোন কথা লেগে যায়, কখন কোন্ কথা

সত্যি হ’য়ে যায়!’

‘ঠিক আছে, আর কখনো বলবো না, কথা দিচ্ছি!’

ভেজা চোখে ওরু মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো রঞ্জু। বললে, ‘সব

জিনিশ নিয়ে ঠাট্টা-ইয়ার্কি করবি না কিন্তু–‘

‘আবার? মাথা খারাপ তোর!’

‘বুক আলগা কর-‘

খোকার পরনে ছিলো পাঞ্জাবি। দুটো বোতাম খুলে ফেললো সে। রজু থুথুথু ক’রে তিনবার তার বুকে থুতু দিলো।

‘যাক্ বাবা, এ যাত্রা কোনোমতে টিকে গেলাম!’

রজুকে মতিঝিল কলোনীতে পৌঁছে দিয়ে ঘরে ফিরে এলো থোকা; দুপুরের পর তাকে আবার যেতে হবে আনতে।

গেটের মুখেই দেখা লুলু চৌধুরীর সঙ্গে; ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলো না খোকা নিজের চোখকে। তাকে না পেয়ে বিমর্ষ মুখে ফিরে যাচ্ছিলো লুলু চৌধুরী।

‘খুব আশ্চর্য হ’য়ে গিয়েছেন না?’

‘কিছুটা–‘ ড্রইংরুমে বসালো খোকা লুলু চৌধুরীকে।

ময়ূরনীল জর্জেট শাড়ি লুলু চৌধুরীর পরনে। বসার সময় কোলের ওপর আঁচল ঝ’রে পড়ে। ত্রস্ত হাতে কাঁধে আঁচল তুলে লুলু চৌধুরী বললে, ‘কোনো অসুবিধে করলাম না তো?’

নিরুৎসাহিত খোকা বললে, ‘ঠিক তা নয়, তবে আপনাকে যার আপ্যায়ন করার কথা, আপাতত সে ঘরের বাইরে, আমার বোন রঞ্জুর কথা বলছি–*

‘আপনি তো আছেন!’

কিছু একটা বলতে হয় তাই বলা, এমন ভঙ্গিতে গা ছেড়ে খোকা জিগ্যেশ করলে, ‘মুরাদ ঘরে, না বেরিয়েছে?’

‘এতোক্ষণ বোধহয় বেরিয়ে পড়েছে। চিন্তা করলেন কিছু?’

‘বুঝতে পারছি না!’